Ajker Patrika

মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবা ও অন্তঃসত্ত্বা মাকে হাতুড়িপেটা

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১৭: ৪১
মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবা ও অন্তঃসত্ত্বা মাকে হাতুড়িপেটা

অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া স্কুলছাত্রী মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় মা-বাবাকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে বখাটে জাহিদ মোল্লা ও তাঁর স্বজনরা লোহার হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহত স্কুলছাত্রীর বাবা-মা ও চাচাতো ভাই রিমনকে স্বজনরা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। ঘটনা ঘটেছে বুধবার রাতে আমতলী উপজেলার চলাভাঙ্গা গ্রামে। এ ঘটনায় মেয়ের মা আজ বৃহস্পতিবার আমতলী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। 

জানা গেছে, উপজেলার চলাভাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে গত এক বছর ধরে বখাটে জাহিদ মোল্লা উত্ত্যক্ত করে আসছে। গত তিন মাস আগে ওই স্কুলছাত্রীকে বখাটে জাহিদ মোল্লা বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। স্থানীয় ইউপি সদস্য জালাল খাঁনের সহযোগিতায় ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে তার বাবার হাতে তুলে দেন। গত বুধবার সকাল ৯টার দিকে স্কুলে যাওয়ার পথে ওই ছাত্রীকে বখাটে জাহিদ মোল্লা পুনরায় উত্ত্যক্ত করে বলে জানান স্কুলছাত্রী। খবর পেয়ে ছাত্রীর বাবা এ ঘটনার প্রতিবাদ ও জাহিদকে মারধর করে বলে দাবি করেন ছেলের খালু স্বজল আকন। 

এ ঘটনার জের ধরে ওই দিন রাতে মেয়ের বাবা ও অন্তঃসত্ত্বা মাকে সালিস বৈঠকের কথা বলে বখাটে জাহিদ মোল্লার খালু স্বজল আকন ডেকে নেয়। পরে স্বজল আকন, ছালাম আকন, সাইফুল মোল্লা ও বখাটে জাহিদ মোল্লা তাদের লোহার হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। একপর্যায়ে মেয়ের বাবা বিবস্ত্র হয়ে গেলেও তারা মারধরে নিবৃত্ত হয়নি। এ সময় তাদের রক্ষায় মেয়ের চাচাতো ভাই রিমন এগিয়ে আসলে তাকেও পিটিয়ে জখম করে। এতে তাদের মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম হয়। খবর পেয়ে স্বজনরা তাদের উদ্ধার করে ওই দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। এ ঘটনায় ছাত্রীর মা বৃহস্পতিবার আমতলী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ ঘটনার পরপর বখাটে জাহিদ মোল্লা পলাতক রয়েছে। 

স্কুলছাত্রীর বাবার বাড়ি ঢাকার সাভার থানার বাজারশোন এলাকায়। তিনি গত দুই বছর আগে তিনি আমতলী উপজেলার চলাভাঙ্গা গ্রামে জমি কিনে বাড়িঘর নির্মাণ করে বসবাস করছেন। 

স্কুলছাত্রীর আহত বাবা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার মেয়েকে বখাটে জাহিদ মোল্লা স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে উত্ত্যক্ত করে আসছে। আমি এর প্রতিবাদ করায় আমাকে, আমার দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে ডেকে নিয়ে লোহার হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে। তিনি আরও বলেন, স্বজল আকন ও ছেলের বাবা সাইফুল মোল্লা আমাকে পিটিয়ে বিবস্ত্র করে। আমি তাদের হাতে পায়ে ধরেও রক্ষা পাইনি। আমার বাড়ি এ এলাকায় না হওয়ায় তারা আমাকে বেশ নির্যাতন করছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।’ 

বখাটে জাহিদ মোল্লার খালু স্বজল আকন স্কুলছাত্রীকে নিজের ভায়রার ছেলের উত্ত্যক্তের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘আমার ভায়রার ছেলেকে মেয়ের বাবা মারধর করেছে। তাই আমি সালিস বৈঠকে বসার কথা বলে তাদের ডেকে এনেছি। কিন্তু তিনি আমার ওপরে হামলা করেছে।’ 

বখাটের জাহিদ মোল্লার বাবা সাইফুল মোল্লার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়েই কল কেটে দেন। 

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুল মুনয়েম সাদ বলেন, আহত স্কুলছাত্রীর বাবার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখমের চিহ্ন রয়েছে। তাঁকে ও তাঁর ভাইকে যথাযথ চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত