Ajker Patrika

হত্যা মামলার আসামিদের হুমকিতে কাউখালীর সেই ইউপি সদস্যের পরিবার আতঙ্কে

পিরোজপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০২২, ১০: ১৯
হত্যা মামলার আসামিদের হুমকিতে কাউখালীর সেই ইউপি সদস্যের পরিবার আতঙ্কে

পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার ইউপি সদস্য মামুন হাওলাদার হত্যার ঘটনায় আসামিদের হুমকিতে আতঙ্কে রয়েছে তাঁর পরিবার। মামলার প্রধান আসামি সিদ্দিকুর রহমানসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও অন্য আসামি ও তাঁদের স্বজনেরা প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছে নিহতের পরিবার।

পরিবারের অভিযোগ, এলাকায় মামলার প্রধান আসামি সিদ্দিকুর রহমান ও তাঁর ভাই কামালের বিভিন্ন সমাজবিরোধী কাজে বাধা দেওয়ার কারণে মামুন হাওলাদারকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন আসামিরা। আসামিদের নামে একাধিক মামলা রয়েছে। এখনো মামুনের পরিবার ও তাঁর ভাইদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে আসামিরা। মামলা থেকে আসামিদের বাদ দিতে কৌশলে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ মামুনের পরিবারের লোকজনের।

নিহত মামুন হাওলাদারের স্ত্রী নিলুফা বেগম জানান, আসামিদের দেওয়া হুমকিতে প্রতিনিয়তই আতঙ্কে আর ভয়ের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা। মামলার প্রধান আসামিসহ তিনজন গ্রেপ্তার হলেও এখনো অনেকেই ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। আসামি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা প্রতিনিয়তই হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। নিলুফার ছেলেরা দিনে ও রাতে আসামিদের ভয়ে বাড়ি থেকে বের হতে পারেন না। কেন তাদের নামে মামলা করা হলো! কেন তাদের আসামি করা হলো—এ নিয়ে তাঁরা প্রতিনিয়ত হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। 

মামুন হাওলাদারের বড় ছেলে রাজিব বলেন, ‘খুব নৃশংসভাবে আমার বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে তারা। বাবার মুখটা চেনা যাচ্ছিল না। আমার ১০ বছর বয়সী ছোট ভাইটা বাবার শোকে পাগল হয়ে গেছে। কবর দেওয়ার আগে বাবাকে চেনা যাচ্ছিল না এমনভাবে কুপিয়েছে তারা। এখন আবার বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে আমাদের ছাড়বে না। পরিবারের ছোট ছোট ভাই-বোন নিয়ে আমরা অসহায় দিন যাপন করতেছি।’ 

ইউপি সদস্যের বড় ভাই নান্না হাওলাদার বলেন, ‘আমরা কেউই রাতে বের হতি পারি না, দিনেও অনেক ভয়ে বের হতে হয়। কারণ তারা আমাদের অনেক হুমকি দিচ্ছে। কয়েকজন আসামি ধরা হলেও বাকিরা পলাতক রয়েছে। আমরা অনেক আতঙ্কে আছি, কখন তারা কী করে! আমার ভাই অনেক জনপ্রিয় ছিল। টানা দুবার ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়েছিল বিপুল ভোটের ব্যবধানে। আমাদের অবস্থা আমার ভাইয়ের মতো করবে বলে হুমকি দেয় তারা। অসহায় ও মানবেতর জীবন যাপন করছি আমরা।’ 

মামুনের ছোট ভাই মাসুম হাওলাদার বলেন, ‘আমাদের বাড়ি কাউখালীর মধ্যে হলেও চলাচল করতে হয় ভান্ডারিয়ার মধ্য দিয়ে। তাই পথ অনেক দুর্গম হওয়ায় আতঙ্ক অনেক বেশি। তারা (আসামিরা) প্রতিনিয়ত হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচ্ছে। আমাদের বাড়িতে একবারও পুলিশ আসেনি, কোনো খোঁজ-খবরও নেয়নি। দুর্গম এলাকা বলে হয়তো পুলিশ আসে না। কিন্তু আমরা অনেক আতঙ্কে আছি।’ 

এ বিষয়ে ভিটাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সিদ্দিকুল ইসলাম ইব্রাহিম বলেন, ‘প্রকাশ্য দিবালোকে সকালবেলা এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। শিয়ালকাঠি ও ভিটাবাড়িয়া এলাকার মানুষ অনেক আতঙ্কে রয়েছে। আমরা তীব্র নিন্দা জানাই এবং অবিলম্বে সব আসামিকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হোক।’

ভাণ্ডারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশিকুর রহমান জানান, ঘটনার পরপরই দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে প্রধান আসামিসহ ঢাকা থেকে একজন এবং পিরোজপুর থেকে আরেকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ প্রতিনিয়তই এলাকায় খোঁজ-খবর নিচ্ছে এবং বিষয়টি নজরে রাখছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

উল্লেখ্য, গত ৩১ অক্টোবর (সোমবার) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভাণ্ডারিয়ার উপজেলার উত্তর ভিটাবাড়িয়া গ্রামের স্থানীয় একটি মাদ্রাসার পাশের সড়কের কালভার্টের কাছে কুপিয়ে হত্যা করা হয় ইউপি সদস্য মামুন হাওলাদারকে (৪৫)। তিনি পার্শ্ববর্তী কাউখালী উপজেলার শিয়ালকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য। নির্বাচনী জেরে তাঁকে হত্যা করা হয় বলে জানা যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বনশ্রীতে স্বর্ণ ডাকাতির মামলায় গ্রেপ্তার আমিনুল ছাত্রলীগের, সুমন শ্রমিক দলের নেতা

সামরিক বাহিনীর ৮ সংস্থা ও স্থাপনার নাম পরিবর্তন

থানায় থানায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাদের তালিকা হচ্ছে

ককটেল ফুটতেই সেলুনে লুকায় পুলিশ, রণক্ষেত্র হয় এলাকা

মসজিদে লুকিয়েও রক্ষা পেলেন না স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও তাঁর ভাই, ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিল প্রতিপক্ষ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত