Ajker Patrika

পাউবোর অবহেলায় মাতামুহুরির সেচ সংকট, বিপাকে কৃষকেরা

  • জনবল-সংকট থাকায় টেন্ডারে দেরি হয়েছে বলে জানিয়েছে পাউবো।
  • ড্যামের ওপর নির্ভরশীল কৃষকেরা চাষাবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
  • চাষে বিলম্ব হলে এসব উপজেলায় খাদ্যঘাটতি দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বাপ্পী শাহরিয়ার, চকরিয়া (কক্সবাজার) 
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

রবি মৌসুম শুরু হলেও কক্সবাজারের চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলায় মাতামুহুরী নদীর সেচ প্রকল্পের দুটি রাবার ড্যাম ফোলানো হয়নি। ফলে শীতকালীন শাকসবজিখেতে সেচ দিতে পারছেন না কৃষকেরা। এদিকে ড্যাম ফোলাতে দেরি হওয়ায় উপজেলা দুটির বিভিন্ন এলাকায় চাষাবাদ বিলম্বিত হবে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। এ অবস্থায় এসব ড্যামের ওপর নির্ভরশীল দুই উপজেলার কৃষকেরা চাষাবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। এ দিকে জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে, জনবল সংকট থাকায় টেন্ডারে দেরি হয়েছে। তাই ড্যাম ফোলাতেও বিলম্ব।

কৃষি বিভাগ ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিবছর নভেম্বরের মাঝামাঝি রবি মৌসুমে বোরো ও শীতকালীন শাকসবজি চাষ শুরু হয়। এ চাষের জন্য চকরিয়া উপজেলার মাতামুহুরী নদীর ওপর মাতামুহুরী সেচ প্রকল্পের পালাকাটা ও বাঘগুজারা রাবার ড্যাম দুটি ফোলানো হয়। কিন্তু এ বছর মৌসুম শুরু হলেও রাবার ড্যাম ফোলানোর কাজ শুরু করেনি পাউবো। এতে বোরো ও শীতকালীন শাকসবজি চাষে মিঠাপানির সংকট দেখা দেওয়ার কথা বলছেন কৃষকেরা। চাষে বিলম্ব হলে এসব উপজেলায় খাদ্যঘাটতি দেখা দিতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

দুই উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি রবি মৌসুমে চকরিয়ায় ২১ হাজার ২০ হেক্টর ও পেকুয়ায় ৮ হাজার ৪৬০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ ও শীতকালীন শাকসবজি আবাদ করার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

কক্সবাজার পাউবো জানায়, ২০১২ সালে মাতামুহুরী নদীতে চকরিয়া-পেকুয়ার মোহনায় বাঘগুজারায় ও চকরিয়ার চিরিংগা ইউনিয়নের সওদাগরঘোনায় পালাকাটায় দুটি রাবার ড্যাম নির্মাণ করা হয়। এর আগে ২০০৩ সালে পেকুয়ার ভোলা খালে একটি রাবার ড্যাম নির্মাণ করা হয়। এই তিনটি রাবার ড্যাম নির্মাণের পর প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুমে দুই উপজেলায় চাষাবাদ হয়ে আসছে। প্রতিবছরের ইরি-বোরো মৌসুম শেষে মে মাসের শুরুর দিকে রাবার ড্যামগুলোর রাবার ব্যাগ নামিয়ে দিয়ে মাতামুহুরী নদীর পানি চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।

কৈয়ারবিল বানিয়ারকুমের কৃষক আহম্মেদ নবী বলেন, ‘নদীতে পানি কমে যাওয়ায় ঠিকমতো সেচ দিতে পারছি না। যথাসময়ে ড্যাম ফোলানো হলে পানির সংকটে পড়তে হতো না।’

কোনাখালীর বাংলাবাজার এলাকার জামালউদ্দিন বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ড্যাম ফোলানো না হলে নদীর মিঠাপানি আটকানো যাবে না। এমনকি জোয়ারের সময় লবণাক্ত পানি স্লুইসগেট দিয়ে ছড়া ও খালে চলে আসবে।

পেকুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাসেল বলেন, বাঘগুজারা ড্যামের ওপর তিনটি ইউনিয়নের কৃষকেরা নির্ভরশীল। এটি এখনো ফোলানো হয়নি।

ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

চকরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এস এম নাসিম হোসেন বলেন, রবি মৌসুম শুরু হয়েছে। পালাকাটা ও বাঘগুজারা রাবার ড্যাম ফোলানোর বিষয়ে প্রতিদিন শত শত কৃষক কৃষি অফিসে এসে ভিড় জমাচ্ছেন। দ্রুত সময় ড্যাম ফোলানো না হলে কৃষকেরা ক্ষতির মুখে পড়বেন।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, ‘মাতামুহুরী সেচ প্রকল্পের দুটি রাবার ড্যাম কৃষি, বিএডিসি ও পাউবোর কর্মকর্তাদের নিয়ে পরিদর্শন করেছি। ড্যাম দ্রুত সময়ে ফোলানোর জন্য পাউবোর সঙ্গে কথা বলব।’

কক্সবাজার পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমদ বলেন, রাবার ড্যাম দুটি ফোলানোর জন্য ৫ ডিসেম্বর টেন্ডার হয়েছে। টেন্ডারপ্রক্রিয়া শেষে যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ পাবে, তারা কাজ শুরু করবে। তিনি বলেন, ‘মূলত আমাদের জনবলের সংকট থাকার কারণে টেন্ডার হতে দেরি হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সিরিয়ায় রাশিয়ার ঘাঁটি রাখতে যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলের তদবির

চকরিয়া থানার ওসিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

‘আমাদের অনুমতি ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করলে থানা ঘেরাও করব’, সরকারি কর্মকর্তার বক্তব্য ভাইরাল

এনসিপির কর্মীদের ঢাকায় আনতে সরকারের বাস রিকুইজিশন, সমালোচনার ঝড়

নয়াদিল্লিতে নতুন হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহ, ৩ মাস সময় নিল ভারত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত