ড্রাগন ফল চাষে সফল প্রবাসফেরত জলিল 

তিতাস (কুমিল্লা) প্রতিনিধি 
প্রকাশ : ০৮ জুন ২০২২, ১৩: ৪৭
আপডেট : ০৮ জুন ২০২২, ১৩: ৫৫

কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় বড় ভাইয়ের উৎসাহে ড্রাগন ফলের চাষ করেন প্রবাসফেরত মো. আব্দুল জলিল (৩৭)। গত বছর তিনি ৩০ শতক জমিতে ৬০০ চারা রোপণ করে ড্রাগন চাষ শুরু করেন। ওই বছরই ফল ধরতে শুরু করে। কিন্তু ফলন হয় পরিমাণে কম। এ বছর প্রতিটি গাছে ফল ধরেছে ৩ থেকে ৪টি, যা ওজনে এক কেজি হয়।

সরেজমিন উপজেলার ভিটিকান্দি গ্রামে অবস্থিত ড্রাগন ফলের বাগানের গিয়ে দেখা যায়, আব্দুল জলিল পাইকারি ব্যবসায়ীকে নিয়ে বাগানে প্রবেশ করছেন। এ সময় সাংবাদিক দেখে তিনি তড়িঘড়ি করে গাছ থেকে ড্রাগন পেরে খেতে দেওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

আলাপকালে আব্দুল জলিল বলেন, ‘আমার বড় ভাই দেলোয়ার হোসেন পলাশ ঢাকায় ব্যবসা করেন। তিনি আমাকে ড্রাগন ফল চাষে উৎসাহিত করেন। তাঁর পরামর্শে আমি ময়মনসিংহ কৃষি ইনস্টিটিউট থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে গত বছর ৩০ শতক জমিতে ৬০০ চারা রোপণ করি। গত বছরই ফল ধরতে শুরু করে। তবে পরিমাণে কম ফলন হয়। এ বছর প্রতিটি গাছে ফল ধরেছে ৩ থেকে ৪টি, যা ওজনে এক কেজি হয়। এখন পর্যন্ত কোনো ফল বিক্রি করিনি। আত্মীয়স্বজন ও মেহমানদের দিয়েছি। আজ পাইকারি ব্যবসায়ী এসেছেন, ৩০০ টাকা কেজি দাম বলছেন।

ড্রাগন চাষের জন্য জমিতে কী কী সার ব্যবহার করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, চারা রোপণ করার সময় শুধু জৈব সার দিয়েছি। আর কোনো সার ব্যবহার করিনি। তবু ফলন ভালো হয়েছে। আগামীতে আরও দুই কানি (৬০ শতক) জমিতে ড্রাগন চাষ করব।

ভিটিকান্দি গ্রামের বাসিন্দা আবদুল্লাহ মেম্বার বলেন, জলিল তাঁর ভাইয়ের পরামর্শে ড্রাগন চাষ শুরু করেন। এখন তিনি একজন সফল চাষি। বাগানে প্রচুর ফল ধরেছে, ফলটি খুব সুস্বাদু। পলাশ ভাইয়ের নির্দেশ রয়েছে, বাগানে যে আসবে তাকেই যেন ফল দেওয়া হয়। বড় ভাইয়ের কথামতো তাই করছেন জলিল।

এ বিষয়ে দেলোয়ার হোসেন পলাশ বলেন, ‘ঢাকায় বসবাসকারী এক প্রতিবেশী আমার শাশুড়িকে ড্রাগন ফলের গাছ দেন। আমার শাশুড়ি ছাদের একটি টবে তা রোপণ করেন এবং তাতে ফলও আসে। এ দেখে আমার ড্রাগন চাষে আগ্রহ হয়। তাই প্রবাসফেরত ছোট ভাইকে ৩০ শতক জমির ওপর ড্রাগন চাষ করতে সব ব্যবস্থা করে দেই। এ বছর প্রতিটি গাছে ফল ধরেছে, দেখে ভালোই লাগছে। আশা করছি ধানের আবাদ থেকে অনেক লাভজনক হবে। আগামীতে আরও দুই কানি (৬০ শতক) জমিতে ড্রাগন চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

তিতাস উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘অন্য ফসলের তুলনায় ড্রাগন চাষ লাভজনক। চারা লাগানোর এক বছরের মধ্যে ফল আসতে শুরু করে। দেলোয়ার হোসেন পলাশ গত বছর এই ড্রাগন চাষ শুরু করেন। বাগানটি তাঁর ছোট ভাই দেখাশোনা করেন।

ফলটির পুষ্টিগুণ, আকার-আকৃতি ও দামের কারণে বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ক্যাকটাস-জাতীয় গাছ হওয়ায় রোগবালাইও কম হয়। তাই কৃষি বিভাগের সহায়তা নিয়ে যে কেউ বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন চাষ শুরু করতে পারেন। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত