পুলিশকে মারধরের মামলার আসামি পঙ্গু ছাত্রদল নেতা

জমির উদ্দিন, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ১৭ জানুয়ারি ২০২৩, ২২: ৪০

ছাত্রদল নেতা বার্মা সাইফুল। পুলিশের গুলিতে বাম পা পঙ্গু হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর। সেই পায়ের হাঁটু পর্যন্ত কৃত্রিম পা লাগানো। গত ৫ মাস বাসায় বন্দী তিনি। কোর্টে মামলার হাজিরা দিতে যান আরেকজনের কাঁধে হাত রেখে। গতকাল সোমবার পুলিশের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণ মামলার তিনি হয়েছেন ৩৫ নম্বর আসামি।

শুধু বার্মা সাইফুল নয়, তাঁর আরেক ভাই মো. সবুজও হয়েছেন আসামি। তিনি জানান, ঘটনার দিন সকাল ৯টায় সৌদিয়া বাসে করে মিরসরাই যান তিনি। ওই দিন তিনি ইট-বালি সরবরাহ কাজে সন্ধ্যা পর্যন্ত ছিলেন। সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে মিরসরাই থেকে সৌদিয়া বাসে করে চট্টগ্রাম শহরের বাসায় ফেরেন। তাঁর দাবি, ঘটনার দিন না থেকেও তিনি পুলিশের করা মামলার আসামি হয়েছেন। ওই দিনের মিরসরাই যাওয়া আসার টিকিটও আছে বলে দাবি তাঁর।

বার্মা সাইফুল ও সবুজ প্রশাসনকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে জানান, তাঁরা ঘটনাস্থলে ছিলেন না। মামলার আসামি করায় তাঁরা আদালতে দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন। বার্মা সাইফুল ও সবুজের বাড়ি বায়েজিদ থানার আমিন জুট মিলের পাশে। তাঁদের বাবার নাম নুরুল আমিন কসাই।

এ নিয়ে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের দাবি করে বলেন, ‘২০২১ সালের ১৬ জুন সাইফুলকে বার্মা কলোনির বাসা থেকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ পায়ে গুলি করে পঙ্গু করে দেয়। এরপর থেকে হাঁটতেও পারে না সে। মিছিলে যাওয়ার তো প্রশ্নই আসে না। তার ভাই সবুজ, এমনকি দক্ষিণ জেলার বিএনপির সিনিয়র সদস্য জামাল হোসেনকেও ঘটনাস্থলে না থেকেও আসামি করা হয়েছে। জামাল ওই দিন সাতকানিয়া ছিলেন। শান্তিপূর্ণ সমাবেশের পুলিশের অতর্কিত হামলার পর মামলার ধরন দেখেই বোঝা যায়, পরিকল্পিতভাবে বিএনপিকে ফাঁসানো হয়েছে।’

বার্মা সাইফুল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পঙ্গু হওয়ার পর থেকে গত ৫ মাস থেকে বাসায় বন্দী আমি। বাম পায়ে কৃত্রিম পা লাগানো মানুষটি কীভাবে পুলিশের ওপর হামলা করবে?’

সাইফুলের ভাই সবুজ বলেন, ‘ঘটনার দিন মিরসরাইয়ে যে ছিলাম, তার সব প্রমাণ আদালতে হাজির করব।’

এই বিষয়ে জানতে চাইলে কোতোয়ালি জোনের অতিরিক্ত কমিশনার নোবেল চাকমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহেদুল কবিরের সঙ্গে কথা বলতে বলেন।

পঙ্গু ব্যক্তি কীভাবে পুলিশের ওপর হামলার মামলার আসামি হন—এমন প্রশ্নে উত্তেজিত হয়ে যান কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহেদুল কবির। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওদেরকে বলেন উকিল নিয়োগ করে আদালতে যেতে।’

উল্লেখ্য, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে গতকাল সোমবার নগরের কাজির দেউড়িতে বিএনপির বিক্ষোভের সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এই ঘটনায় চারটি মামলা করা হয়। আসামি করা হয় অন্তত চার শতাধিক নেতা-কর্মীকে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত