চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে স্থানীয় এমপির কাছে নালিশের জেরে সংঘর্ষে সাবেক ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার মায়ানী ইউনিয়নের ঘড়ি মার্কেট এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। 

জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুরে স্থানীয় এমপি ও সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন মায়ানী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম মেম্বারের কবর জিয়ারত করতে ওই এলাকায় যান। ফেরার পথে এমপির কাছে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কবির নিজামীর বিরুদ্ধে সাবেক মেম্বার বদিউর রহমান অভিযোগ করেন। অভিযোগের বিষয়টি পরে খতিয়ে দেখবেন বলে এমপি চলে যান। এমপি চলে যাওয়ার পরই হামলার ঘটনা ঘটে। 

হামলায় আহতরা হলেন মায়ানী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন, শামসুদ্দোহা মেম্বার, আজমল খান সুলন, শাখাওয়াত হোসেন সাকা, ফজলুল করিম, মো. আজাদ, শেখ ফরিদ, মায়ানী ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ফারুক, বদিউর রহমান, যুবলীগ নেতা রিপন। 

আহতদের মধ্যে মোজাম্মেল হোসেন ও বদিউর রহমানকে (৬০) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। অন্যরা আবুতোরাব বাজারে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। 

সংঘর্ষের সময় আজমল খান সুলন নামে এক যুবলীগ কর্মীর মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। এ সময় বাজারের ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। ঘটনাস্থলে মিরসরাই থানার পুলিশ পৌঁছালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। 

বাজারের প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কাঠের লাঠি, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলায় জড়িয়ে পড়ে দুই গ্রুপ। এ সময় বাজারের ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দোকানে আশ্রয় নিলে সন্ত্রাসীরা সেখানেও হামলা চালায়। 

মায়ানী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নোমান বলেন, `এমপি চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মোজাম্মেল, অহিদের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর হামলা করে। এ সময় পাঁচজন আহত হন। পরে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ফারুককে একটি দোকানঘরে অবরুদ্ধ করে রাখে। পুলিশকে খবর দিলে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। হামলার ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছি। 

মায়ানী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন বলেন, `এমপি আসা উপলক্ষে এলাকায় অবস্থান করা দলীয় নেতা-কর্মীদের ওপর কোনো কারণ ছাড়াই সন্ত্রাসী ফারুক ও নোমানের নেতৃত্বে তারা হামলা করে। হামলায় আমিসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন। হামলার বিষয়ে থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছি।' 

এই বিষয়ে মায়ানী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কবির আহম্মদ নিজামী বলেন, এমপির সঙ্গে জিয়ারতের সময় উপস্থিত ছিলাম। এরপর আমিও ঢাকায় চলে এসেছি। তবে জেনেছি বদিউর রহমান একজন জালিয়াত ভূমিদস্যু, তাঁর অত্যাচারে মানুষ অতিষ্ঠ। তিনি এমপির কাছে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়ায় এলাকার মানুষ ক্ষিপ্ত হয়েছে। এলাকার শান্ত পরিবেশকে বহিরাগত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের এনে অস্থিতিশীল করাই তাঁদের উদ্দেশ্য।' 

মিরসরাই থানার ওসি মুজিবুর রহমান বলেন, `ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত। বড় ধরনের ঘটনা হওয়ার আগেই আবুতোরাব ও মায়ানী এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছি। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ পেয়েছি। এমপির নির্দেশে সমাধানের জন্য উভয় পক্ষকে নিয়ে থানায় বৈঠক করলে রাতেই উভয় পক্ষ অভিযোগ তুলে নিয়েছে।'