Ajker Patrika

এডিস মশা মারবে কে

ফায়সাল করিম, চট্টগ্রাম
আপডেট : ২৬ জুলাই ২০২১, ১০: ৪১
এডিস মশা মারবে কে

নগরের বাকলিয়ার ফুলতলা খালপাড়ের একটি আবাসিক ভবনে থাকেন আসমত আলী। বর্ষায় জলাবদ্ধতার দুর্ভোগের সঙ্গে এখানকার আরেক সাক্ষাৎ আতঙ্কের নাম এডিস মশা।

গত শনিবার আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা হতেই সে ভীতির কথা তুলে ধরলেন বেসরকারি এই চাকরিজীবী। তিনি বললেন, ‘নগরীতে যেভাবে ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে, প্রতিদিনই আতঙ্কে থাকি কখন আক্রান্ত হই। এসব ওষুধ যে কাজের নয়, সেটি তো মেয়র নিজেই স্বীকার করেছেন। তাহলে এখন এডিস মশা মরবে কী দিয়ে!’

আসমত আলীর এমন প্রশ্ন আর আতঙ্কের কথা শোনা গেল শুলকবহরের কামাল উদ্দিন, বহদ্দারহাটের কাশেম শাহ, খাতুনগঞ্জের মো. সেকান্দর আলী, বিশ্ব কলোনির মো. কামাল ও ২ নম্বর গেটের মনসুর চৌধুরীর কণ্ঠেও।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) যে মশার ওষুধ ছিটায়, সেগুলোর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে কয়েক বছর আগেই। দায়িত্ব নেওয়ার পর ক্রাশ প্রোগ্রামে মশা মারায় সফলতা পাননি বর্তমান মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরীও। তাই ওষুধের কার্যকারিতার প্রশ্ন তুলে ব্যর্থতা স্বীকার করেছিলেন।

গত ১৪ মার্চ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) একদল শিক্ষকের সঙ্গে বৈঠকে বসে কার্যকারিতা যাচাইয়ের দায়িত্ব দেন মেয়র। তবে আজকের পত্রিকার অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সেই বৈঠকের পর কার্যকারিতা যাচাইয়ের কাজ সেভাবে এগোয়নি।

চবি দলের আহ্বায়ক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি ও মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. রবিউল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘গত ১৩ এপ্রিল আমরা চসিককে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকার বাজেট দিই। এটি নিয়ে কোনো জবাব না পাওয়ায় আবার যোগাযোগ করি। পরে চসিক আবার বাজেটের কপি চায়। ২২ জুন আমাদের বাজেটের অর্থ পাই।’

বাজেট পেতে বিলম্ব আর লকডাউনের ফাঁদে পড়ে অবশেষে এ মাসের ৫ তারিখ থেকে কাজ শুরু করেছে চবির গবেষক দল।

কার্যকারিতা যাচাই দলের সদস্যসচিব চবির উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ ওমর ফারুক রাসেল বলেন, ‘আমরা নগরীর বিভিন্ন স্পট থেকে মশার লার্ভা সংগ্রহ করেছি। চসিক থেকে সংগ্রহ করা দুই ধরনের ওষুধের প্রাথমিক ট্রায়ালও শেষ হয়েছে। নমুনা ঢাকায় বিসিএসআরে পাঠিয়েও যাচাই করা হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আগামী মাসের ৫ তারিখের মধ্যে এগুলোর কার্যকারিতা নিয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দিতে পারব বলে আশা করছি।’

জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এডিস মশা বংশ বিস্তার করে। তাই মৌসুম শুরু হওয়ার পরও ওষুধের বিষয়টি সুরাহা করতে না পারায় ডেঙ্গুর ঝুঁকি বাড়তে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আখতার কবির চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘চসিকের মশার ওষুধ কেনার পুরো প্রক্রিয়াটাই অস্বচ্ছ ও অনিয়মে ভরা। এখন চবি শিক্ষকদের দিয়ে যে কমিটি করা হয়েছে, সেটিও একটি লোকদেখানো। মশা মারতে এত টাকার বাজেট থাকার পরও কীভাবে তাদের বাজেট দিতে এত দেরি হয়।’

অভিযোগের জবাবে মেয়র রেজাউল করিম পাল্টা বলেন, ‘আসলে আমরা সময়মতো শিক্ষকদের কাছ থেকে বাজেট প্রস্তাবনা পাইনি। তাঁরাই দিতে দেরি করেছেন।’ পুরোনো ওষুধ দিয়ে এই ডেঙ্গু মৌসুমে কীভাবে মশা মরবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন তো কিছু করার নেই। তাই আগেরটা দিয়ে কাজ চালাতে হবে। চবি টিম প্রতিবেদন দেওয়ার পর দ্রুত বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ব্রিটিশ নাগরিকত্ব ফিরে পেলেন সেই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শামীমা বেগম

হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ খুনের পেছনে ধর্ষণচেষ্টা: পুলিশ

যাত্রার ৪৫ দিন আগে ভিসার আবেদন করতে বলল থাই দূতাবাস

মেয়ে ধর্ষণের শিকার, মামলার ১০ দিনের মাথায় বাবাকে হত্যা

নারায়ণগঞ্জে যুবককে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত