Ajker Patrika

‘দল পাল্টায়, বাঁশের সাঁকো আর সেতু হয় না’

মুজাহিদুল ইসলাম, সুবর্ণচর (নোয়াখালী)
আপডেট : ২২ মে ২০২৩, ১৩: ০১
‘দল পাল্টায়, বাঁশের সাঁকো আর সেতু হয় না’

খুঁটির ওপর দাঁড়িয়ে ছিল প্রায় ২০০ ফুট লম্বা কাঠ ও পাটাতনের সেতু। ২০০১ সালে চর উন্নয়ন ও বসতি স্থাপন প্রকল্পের অধীনে ৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছিল সেতুটি। মোটরসাইকেল কিংবা সিএনজি অটোরিকশা নিয়মিত চলাচল করত সেতুটির ওপর দিয়ে। সেতুটি ৮ বছর ধরে ভেঙে পড়ে আছে। বর্ষাকালে চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হলেও সময় ও জীবন-জীবিকার তাগিদে শুষ্ক মৌসুমে বাঁশ ও কাঠ বেঁধে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেন সাধারণ মানুষ। 

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরজুবিলী ইউনিয়নের পাংকার বাজার জালাল সারেং মসজিদ সমাজ এলাকায় ভুলুয়া নদীর শাখা খালের ওপর এই কাঠের সেতু দিয়ে কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করেন। চরজব্বার ইউনিয়নের পশ্চিম চরজব্বার, উত্তর ব্যাগ্যা, সমিতির বাজার, চরজুবিলীর মধ্য ব্যাগ্যা, একরাম নগরসহ পাঁচটি গ্রাম এই সেতুটির কারণে বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। কাঠের সেতুর স্থানে পাকা সেতু তৈরি হলে একরামনগর-পাংকার বাজার সড়কের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত হতো এলাকাগুলো।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, উপজেলার চরজব্বার-চরজুবিলী ইউনিয়নের পাঁচ গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পাংকার বাজার হয়ে একরামনগর-আটকপালিয়া সড়ক দিয়ে জেলা সদর ও ঢাকা-চট্টগ্রামে যাতায়াত করেন। কাঠের সেতুর কারণে ওই সড়ক থেকে ভারী যানবাহন নিয়ে ওই এলাকাগুলোতে যাওয়া যায় না। এ ছাড়া বর্ষাকালে সেতুটি পানির তোড়ে ভেঙে যায়। আবার কখনো ডুবেও যায়। তখন শিক্ষার্থীদের স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় যাওয়াত সম্ভব হয় না।

উত্তর ব্যাগ্যার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ফরহাদ উদ্দিন জানান, দুই দশক আগে লোকজনের চাঁদা, মুষ্টিচাল ও ধান সংগ্রহ করে প্রায় লাখ টাকা ব্যয়ে কাঠের এই সেতু সংস্কার করা হয়। পরবর্তী সময়ে এটি রক্ষণাবেক্ষণে স্থানীয়ভাবে দেখাশোনা করলেও জনপ্রতিনিধির সঙ্গে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মনোমালিন্যের কারণে এখন কেউই তদারকি করেন না।

পাংকার বাজারের ব্যবসায়ী রুবেল দেবনাথ বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে আমরা সেতুর জন্য দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু এখনো তা হয়নি। ভবিষ্যতে হবে বলে মনে করি না।’

মধ্য ব্যাগ্যার কৃষক আবুল কাশেম বলেন, ভোট এলে সব দলের নেতাই প্রতিশ্রুতি দেন, বাঁশের সাঁকো আর থাকবে না। কষ্ট করতে হবে না। খালের ওপর কালভার্ট হবে। কিন্তু দল পাল্টায়, বাঁশের সাঁকো আর সেতু হয় না। ৫০ হাজার মানুষের কষ্ট-দুঃখও ঘোচে না।

৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. মঞ্জুর আলম বলেন, একে একে সব দপ্তরে ধরনা দিয়েও সেতুটি হলো না। সেতু আর প্রশস্ত সড়ক না থাকায় গ্রামটিতে কোনো রিকশা বা রিকশা-ভ্যান চলাচল করতে পারে না। এ কারণে উৎপাদিত পণ্যের পরিবহন আর রোগী নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার সময় চরম ভোগান্তির শিকার হয়ে থাকেন এখানকার বাসিন্দারা।

চরজুবিলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল্ল্যাহ খসরু বলেন, সেতু না থাকায় ওই সড়কের সঙ্গে মানুষের সরাসরি কোনো যোগাযোগ নেই। এ বিষয়টি স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান ও প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সুবর্ণচর উপজেলা প্রকৌশলী মো.শাহজালাল বলেন, উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রাম সড়কে অনূর্ধ্ব ১০০ মিটার সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় সেতুটি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে এটির সম্ভাব্যতা যাচাই করে প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রতিবেদন ও কাগজপত্র প্রেরণ করা হয়েছে। অনুমোদন হয়ে গেলে সেতুটি নির্মাণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মাসুদ আহমেদের সব পদ স্থগিত

টিআইএন নেওয়ার পরে কিন্তু ঘুমাইতে পারবেন না: এনবিআর চেয়ারম্যান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত