স্ট্রোকে মৃত্যু নয়, স্কুলশিক্ষিকা এশা ত্রিপুরাকে খুন করা হয়েছে—দাবি পুলিশের

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২৩, ১৫: ৩৪
আপডেট : ২৫ জুলাই ২০২৩, ১৫: ৪৭

খাগড়াছড়িতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা এশা ত্রিপুরা নবিনাকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, ‘নবীনার শরীরে একাধিক জখমের চিহ্ন রয়েছে। এটা দেখে আমাদের মনে হয়েছে, এটি স্ট্রোক হতে পারে না। তাঁকে খুন করা হয়েছে।’

গত শুক্রবার ভোররাতে স্কুলশিক্ষিকা এশা ত্রিপুরাকে নিয়ে তাঁর স্বামী উদ্দীপন ত্রিপুরা ও প্রতিবেশীরা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে হাসপাতালের চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের স্বামী দাবি করেন, তাঁর স্ত্রী স্ট্রোকে মারা গেছেন। কিন্তু হাসপাতালের চিকিৎসক স্ট্রোকজনিত কারণে মৃত্যু হয়নি বলে পুলিশকে জানিয়েছে।

ঘটনার পরদিন শনিবার খাগড়াছড়ি সদর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত এশা ত্রিপুরার ভাই খোকারঞ্জন ত্রিপুরা। এর পরই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে এশার স্বামী উদ্দীপন ত্রিপুরাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ‘আমার বোনের মাথায় আঘাতের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। কে বা কারা পরিকল্পিতভাবে আমার বোনকে হত্যা করেছে।’

এদিকে নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, এশার স্বামী উদ্দীপন ত্রিপুরা শুরুতেই এটিকে স্ট্রোকের মৃত্যু বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। লাশ হাসপাতালে না নিয়ে তাঁর বাড়ি পানছড়ির কুড়াদিয়া ছড়ায় নিয়ে যেতে চান। পরে প্রতিবেশীদের চাপে হাসপাতালে নিতে বাধ্য হন।

তাঁরা আরও জানান, হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা এটিকে স্ট্রোকে মৃত্যু নয় বলে জানান। এ সময় উদ্দীপন লাশের ময়নাতদন্ত না করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন বলেও জানান স্বজনেরা। পরে পুলিশ লাশের ময়নাতদন্ত করতে বাধ্য করে।

স্বজনদের পক্ষ থেকে আরও অভিযোগে বলা হয়, এশার স্বামী উদ্দীপন জানান, ভোর ৪টার দিকে এশা বাথরুমে স্ট্রোক করে পড়ে যান। অথচ খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সুবল জ্যোতি চাকমা তাঁর ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানান, তিনি রাত ১টা ৩২ মিনিটে একটি চিৎকার শুনতে পান।

তিনি ফেসবুকে লেখেন, ‘চেম্বার শেষ করে গত রাত (শুক্রবার) ১টা ৩২ মিনিটে বাসায় কল করে গেট খুলে দেওয়ার অপেক্ষায় ছিলাম। এ সময় বিকট এক মেয়েলি চিৎকার। সঙ্গে সঙ্গে কারেন্ট চলে যায়। আমি মোবাইল ফোনের টর্চ জালিয়ে কিছু দূর এগিয়ে গিয়ে শব্দের উৎস খোঁজার চেষ্টা করি। আর দ্বিতীয়বার শুনিনি। সকালে শুনলাম বাথরুমে পরে গিয়ে মাথায় রক্তক্ষরণ হয়ে এক নারী প্রাইমারি শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। যেই দিক থেকে শব্দ এসেছে, সেই দিকে। শুনলাম বাড়ির লোক তাঁকে মৃত অবস্থায় বাথরুমে আবিষ্কার করেছে রাত ৪টার দিকে। আমার মনে হচ্ছে, যে চিৎকার আমি শুনেছি, সেটা তাঁর আঘাত পাওয়ার পরপরই।’

এ বিষয়ে খাগড়াছড়ি সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) উৎপল বিশ্বাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হাসপাতালের চিকিৎসকেরা পুলিশকে লিখিতভাবে এশা ত্রিপুরার লাশের বিষয়ে অবগত করেছেন। এটি স্ট্রোকজনিত মৃত্যু নয় বলে জানিয়েছেন তাঁরা। লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। তবে এখনো ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া যায়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের রাতে এশা ত্রিপুরা স্বামী ও শিশুসন্তানেরা ছাড়া ওই বাসায় আর কেউ ছিল না। সোর্সের দেওয়া তথ্য এবং পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে এশা ত্রিপুরার স্বামী উদ্দীপন ত্রিপুরা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে সন্দেহ রয়েছে। আমরা তাঁকে গ্রেপ্তার করেছি। পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছি।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত