কক্সবাজারের পেকুয়ায় উপকূলীয় বন বিভাগের মগনামা বনবিট কার্যালয়ে ঢুকে চার বনরক্ষীদের মারধর করে জব্দ করা গাছভর্তি একটি গাড়ি লুট করে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল মঙ্গলবার রাতে উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের লঞ্চঘাটের উত্তর পাশে উপকূলীয় বনবিট কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। 

এ ঘটনায় আহতরা হলেন উপকূলীয় বন বিভাগের ছনুয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা ছাইদুর রহমান আকন্দ, মগনামা বনবিট কর্মকর্তা হোসনি মোবারক, বনরক্ষী আফছার উদ্দিন ও মগনামা বনবিটের নৌকা চালক আনোয়ার হোসেন। আহতদের চিকিৎসার জন্য পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে। 

এ বিষয়ে মগনামা বনবিট কর্মকর্তা হোসনি মোবারক জানান, ‘গতকাল মঙ্গলবার রাতে পেকুয়া-মগনামা সড়কের চৌমুহনী স্টেশন থেকে রেঞ্জ কর্মকর্তা ছাইদুর রহমান আকন্দের নেতৃত্বে বনরক্ষীরা চোরাই গাছভর্তি একটি ছোট ট্রাক জব্দ করেন। গাড়িটি মগনামা বনবিট কার্যালয়ে এনে রাখা হয়। কিছুক্ষণ পরে জব্দ করা গাছ গাড়ি থেকে নামিয়ে পরিমাপ করতে গেলে আগে থেকে ওত পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা বনরক্ষীদের ওপর হামলা চালায়। দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ও লাঠির আঘাতে বনরক্ষীদের গুরুতর আঘাত করে গাছভর্তি গাড়িটি বিট কার্যালয় থেকে বেপরোয়া গতিতে চালিয়ে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।’ 

উপকূলীয় বন বিভাগের ছনুয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা ছাইদুর রহমান আকন্দ বলেন, ‘গাছ চোর চক্রের সদস্য আজিজের মালিকানাধীন একটি গাড়ি চোরাই গাছ নিয়ে পেকুয়ার দিকে আসছে খবর পেয়ে আমরা অভিযান চালাই। গাছভর্তি গাড়িটি জব্দ করে মগনামা বনবিট কার্যালয়ে আনা হলে পেকুয়ার গাছ চোর চক্রের অন্যতম সদস্য আবু ছালেক, ফোরকান ও গাড়ি চালক সাদ্দামের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন দুর্বৃত্ত পরিকল্পিতভাবে বনরক্ষীদের ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা বিট কার্যালয়ের সীমানাপ্রাচীর ভেঙে গাড়িটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়।’ 

এ বিষয়ে উপকূলীয় বন বিভাগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. আবদুর রহমান বলেন, ‘দুর্বৃত্তরা বন বিভাগের কার্যালয়ে ঢুকে বনরক্ষীদের মারধর করে জব্দ করা গাছভর্তি গাড়ি ছিনিয়ে নিয়ে দুঃসাহসের পরিচয় দিয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বনরক্ষীদের ওপর এমন হামলা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। তাই গাছ চোর চক্রের চিহ্নিত সদস্যদের কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। এ ব্যাপারে আমরা স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি। নয়তো বনরক্ষীদের স্বাভাবিক কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হবে।’ 

পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী জানান, ‘হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। বন বিভাগের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগতভাবে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।