শাহরিয়ার হাসান, টেকনাফ (কক্সবাজার) থেকে
দূর থেকে দেখলে মনে হয় পাহাড়টা আকাশ ছুঁয়েছে। পাহাড়ের চূড়ায় ভেসে বেড়াচ্ছে সাদা-কালো মেঘ। লোকালয়ের ভেতর দিয়ে পাহাড় বেয়ে নেমে এসেছে সরু রাস্তা। কক্সবাজারের টেকনাফ শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরের দৃষ্টিনন্দন এই পাহাড়ের নাম শালবাগান। মানুষ চেনে শালবন নামে। এই পাহাড়ের চারপাশ ঘিরে নয়াপাড়া ২৬-২৭ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প। অপরাধীদের দৌরাত্ম্যে প্রতিনিয়ত আতঙ্কে থাকতে হয় ক্যাম্পের বাসিন্দাদের।
পুলিশ বলছে, ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পাহাড়টির একেক অংশের একেক নাম। শালবন অংশটুকুই রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে। অন্তত ১০টি রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপ এখানে সক্রিয়। খুন, অপহরণ, ধর্ষণ, মাদক ও মানব পাচার—সব অপকর্মই হয়। অপরাধীরা নিচে নেমে কাজ সেরে আবার পাহাড়ে চলে যায়। রোহিঙ্গাদের ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়ন্ত্রণ থাকলেও গহিন এই পাহাড়ের পুরোটাই তাদের অজানা।
সাধারণ রোহিঙ্গারা বলছেন, সন্ত্রাসীরা জনবল ও অস্ত্রশস্ত্রে অনেক শক্তিশালী। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একাধিকবার অভিযানে গিয়েও সন্ত্রাসীদের দমনে ব্যর্থ হয়েছে।
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, শালবনে অন্তত ১০টি রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপ সক্রিয়। প্রতিটি গ্রুপের ৮০-৯০ জন সদস্য। তাদের আছে দেশি-বিদেশি অস্ত্র। ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা ১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক তারিকুল ইসলামও বিষয়টি অস্বীকার করেননি।
গোয়েন্দা তথ্য বলছে, পাহাড়ে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী আদ্দু বাহিনী, গিয়াস বাহিনী ও সালমান শাহ বাহিনী। এ ছাড়া আছে জাকির বাহিনী, পুতিয়া বাহিনী, খালেক বাহিনী, জাকারিয়া গ্রুপ ও মুন্না গ্রুপ। জাকির বাহিনীর জাকির ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হলে এই বাহিনীর হাল ধরে তাঁর বড় ভাই দিল মোহাম্মাদ আর জামিল।
র্যাবের কর্মকর্তা উইং কমান্ডার আজিম আহমেদ বলেন, কক্সবাজারে সব মিলিয়ে ৩৪টি রোহিঙ্গা শিবিরে প্রায় ১১ লাখ মানুষের বাস। শালবন পাহাড়কেন্দ্রিক নয়াপাড়া ক্যাম্পে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলে সবচেয়ে বেশি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ৩০ জুন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী হাসিমউল্লাহ ও আজিম উল্লাহ গ্রুপ চাঁদার দাবিতে বাংলাদেশি হাবিব উল্লাহর পরিবারে হামলা চালায়। তাদের এলোপাতাড়ি গুলিতে হাবিবের তিন সন্তান আহত হয়। গত শুক্রবার র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ হাসিমউল্লাহ নিহত হন।
মুক্তিপণ না পেলে খুন
২৬ নম্বর শালবাগান ক্যাম্পের আই-৯-এর বাসিন্দা সত্তর ছুঁইছুঁই রোহিঙ্গা সৈয়দ আলম। ৭ জুলাই রাত ১০টার দিকে হঠাৎ তাঁর ঘরের দরজার কড়া নাড়ার আওয়াজ। খুলতেই জাকারিয়া বাহিনীর কয়েকজন সন্ত্রাসী পিস্তলের বাঁট দিয়ে মাথায় আঘাত করে তাঁকে রক্তাক্ত করে। তাঁকে তুলে নিয়ে যায় তারা। পরিবারকে বলে যায়, তাঁকে ফেরত পেতে হলে ৩ লাখ টাকা দিতে হবে।
গত শুক্রবার ক্যাম্পের মসজিদের সামনে আলমের ছেলে আজিজুল অভিযোগ করেন, এপিবিএনের কাছে সহায়তা চাইতে গেলে তারা মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়িয়ে আনার পরামর্শ দেয়। পরে ৫০ হাজার টাকায় বাবাকে ছাড়িয়ে আনেন তিনি।
নয়াপাড়া ক্যাম্পের ব্লক–আইয়ের ২৪,২৫, ২৬,২৭–এর সমন্বয়ক মো. জাফরও অভিযোগ করেন, ক্যাম্পে প্রতিদিন এমন চার–পাঁচটি ঘটনা ঘটে। পুলিশের সাহায্য পাওয়া যায় না। তিনি নিজেও অপহরণের শিকার হয়েছিলেন। তিনি এখনো সে ভয় কাটিয়ে উঠতে পারেননি।
টেকনাফ থানার ওসি হাফিজুর বলেন, ‘ক্যাম্পে অপহরণ, ধর্ষণ, মারামারি, ছিনতাই লেগেই আছে। অনেক সময় আমরা খোঁজ পাই। কিন্তু ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে না। তাই অনেক ঘটনা অজানা থেকে যায়।’
কোনো কৌশল কাজে আসছে না
শালবন পাহাড়ে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর সাত-আট শ সদস্য আছে। পাহাড়ে আস্তানা গেড়ে বসেছে তারা। ঘন জঙ্গলে সেটি বোঝার উপায় নেই। খাবারের জন্য তারা মাঝেমধ্যে সমতলে নামে। কাকে অপহরণ করা হবে, ক্যাম্পে থাকা অন্য সদস্যরা সেটি ঠিক করে। ২৬ নম্বর এই ক্যাম্পের ৫ ব্লকে ৪১ হাজার ৭৭২ রোহিঙ্গার বসবাস।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, গত দুই বছরে ক্যাম্পে অন্তত ৭০টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এই দুই বছরে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে করা ৪৯৩টি মামলা হয়েছে, যাতে ১ হাজার ৪৫৮ জন আসামি। সবচেয়ে বেশি, প্রায় দুই শ হলো মাদক মামলা। রয়েছে মানব পাচার, অস্ত্র, ধর্ষণ, ধর্ষণচেষ্টা, নারী নির্যাতন, অপহরণ ও পুলিশের ওপর হামলার মামলা।
র্যাবের উইং কমান্ডার আজিম আহমেদ বলছেন, ‘হেলিকপ্টার আর ড্রোন উড়িয়ে আমরা সন্ত্রাসীদের আস্তানা খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছি। ডিসেম্বর থেকে এ পর্যন্ত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ১২ জন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।’
মানব পাচার, মাদক, স্বর্ণ চোরাচালান থেকে আসে অর্থ। র্যাব-পুলিশের তথ্য বলছে, এসব বাহিনীর অর্থের বড় একটি উৎস ইয়াবা, মানব পাচার ও স্বর্ণ চোরাচালান। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের যেসব সিন্ডিকেট ইয়াবা, মানব পাচার ও স্বর্ণ চোরাচালান করছে, তাদের কাছ থেকে নিয়মিত মাসোহারা নেয় তারা। এমনকি সাগরপথে পাচারের শিকার ব্যক্তিদের শুরুতে এই পাহাড়ে রাখা হয়।
বিজিবি, র্যাব ও পুলিশ বলছে, গত ১০ মাসে এসব এলাকায় অনন্ত ১০৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, রোহিঙ্গাদের পাহাড়ি ক্যাম্পে এত অস্ত্র-গোলাবারুদের উৎস কী?
আর্মড পুলিশের পদস্থ এক কর্মকর্তা বলেন, রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের মূল উৎস মিয়ানমার। সে দেশ থেকে মাদকের সঙ্গে আসছে অস্ত্র। বান্দরবানের চাকঢালা, আশারতলী, তুমব্রু, ঘুমধুম সীমান্ত দিয়ে আসছে এসব অস্ত্র। পাহাড়ে সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের গুদামও রয়েছে।
র্যাব ও বিজিবির তথ্যমতে, রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় গত ছয় মাসে অভিযান চালিয়ে ১৫১টি গোলাবারুদ, ৩৩টি দেশীয় বন্দুক, দুটি নাইন এমএম পিস্তল, তিনটি রিভলবার, দুটি থ্রি কোয়ার্টার গান, তিনটি এলজি, পাঁচটি এসবিবিএল, একটি রাইফেল উদ্ধার করা হয়।
ক্যাম্পে কাজ করা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেফ দ্য চিলড্রেনের এক নারী কর্মী বলেন, ‘নয়াপাড়া ক্যাম্পের পেছনের পাহাড়ে রোহিঙ্গা ডাকাতদের আস্তানা। দিনে পাহাড় আর রাতে ক্যাম্প চষে বেড়ায় তারা। আমরা নিজেরাও অনিরাপদ বোধ করছি।’
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘জেলা পুলিশ ক্যাম্পের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে এপিবিএনের সঙ্গে কাজ করছে। আমরা একাধিক অভিযান চালিয়েছি। সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
দূর থেকে দেখলে মনে হয় পাহাড়টা আকাশ ছুঁয়েছে। পাহাড়ের চূড়ায় ভেসে বেড়াচ্ছে সাদা-কালো মেঘ। লোকালয়ের ভেতর দিয়ে পাহাড় বেয়ে নেমে এসেছে সরু রাস্তা। কক্সবাজারের টেকনাফ শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরের দৃষ্টিনন্দন এই পাহাড়ের নাম শালবাগান। মানুষ চেনে শালবন নামে। এই পাহাড়ের চারপাশ ঘিরে নয়াপাড়া ২৬-২৭ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প। অপরাধীদের দৌরাত্ম্যে প্রতিনিয়ত আতঙ্কে থাকতে হয় ক্যাম্পের বাসিন্দাদের।
পুলিশ বলছে, ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পাহাড়টির একেক অংশের একেক নাম। শালবন অংশটুকুই রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে। অন্তত ১০টি রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপ এখানে সক্রিয়। খুন, অপহরণ, ধর্ষণ, মাদক ও মানব পাচার—সব অপকর্মই হয়। অপরাধীরা নিচে নেমে কাজ সেরে আবার পাহাড়ে চলে যায়। রোহিঙ্গাদের ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়ন্ত্রণ থাকলেও গহিন এই পাহাড়ের পুরোটাই তাদের অজানা।
সাধারণ রোহিঙ্গারা বলছেন, সন্ত্রাসীরা জনবল ও অস্ত্রশস্ত্রে অনেক শক্তিশালী। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একাধিকবার অভিযানে গিয়েও সন্ত্রাসীদের দমনে ব্যর্থ হয়েছে।
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, শালবনে অন্তত ১০টি রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপ সক্রিয়। প্রতিটি গ্রুপের ৮০-৯০ জন সদস্য। তাদের আছে দেশি-বিদেশি অস্ত্র। ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা ১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক তারিকুল ইসলামও বিষয়টি অস্বীকার করেননি।
গোয়েন্দা তথ্য বলছে, পাহাড়ে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী আদ্দু বাহিনী, গিয়াস বাহিনী ও সালমান শাহ বাহিনী। এ ছাড়া আছে জাকির বাহিনী, পুতিয়া বাহিনী, খালেক বাহিনী, জাকারিয়া গ্রুপ ও মুন্না গ্রুপ। জাকির বাহিনীর জাকির ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হলে এই বাহিনীর হাল ধরে তাঁর বড় ভাই দিল মোহাম্মাদ আর জামিল।
র্যাবের কর্মকর্তা উইং কমান্ডার আজিম আহমেদ বলেন, কক্সবাজারে সব মিলিয়ে ৩৪টি রোহিঙ্গা শিবিরে প্রায় ১১ লাখ মানুষের বাস। শালবন পাহাড়কেন্দ্রিক নয়াপাড়া ক্যাম্পে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলে সবচেয়ে বেশি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ৩০ জুন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী হাসিমউল্লাহ ও আজিম উল্লাহ গ্রুপ চাঁদার দাবিতে বাংলাদেশি হাবিব উল্লাহর পরিবারে হামলা চালায়। তাদের এলোপাতাড়ি গুলিতে হাবিবের তিন সন্তান আহত হয়। গত শুক্রবার র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ হাসিমউল্লাহ নিহত হন।
মুক্তিপণ না পেলে খুন
২৬ নম্বর শালবাগান ক্যাম্পের আই-৯-এর বাসিন্দা সত্তর ছুঁইছুঁই রোহিঙ্গা সৈয়দ আলম। ৭ জুলাই রাত ১০টার দিকে হঠাৎ তাঁর ঘরের দরজার কড়া নাড়ার আওয়াজ। খুলতেই জাকারিয়া বাহিনীর কয়েকজন সন্ত্রাসী পিস্তলের বাঁট দিয়ে মাথায় আঘাত করে তাঁকে রক্তাক্ত করে। তাঁকে তুলে নিয়ে যায় তারা। পরিবারকে বলে যায়, তাঁকে ফেরত পেতে হলে ৩ লাখ টাকা দিতে হবে।
গত শুক্রবার ক্যাম্পের মসজিদের সামনে আলমের ছেলে আজিজুল অভিযোগ করেন, এপিবিএনের কাছে সহায়তা চাইতে গেলে তারা মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়িয়ে আনার পরামর্শ দেয়। পরে ৫০ হাজার টাকায় বাবাকে ছাড়িয়ে আনেন তিনি।
নয়াপাড়া ক্যাম্পের ব্লক–আইয়ের ২৪,২৫, ২৬,২৭–এর সমন্বয়ক মো. জাফরও অভিযোগ করেন, ক্যাম্পে প্রতিদিন এমন চার–পাঁচটি ঘটনা ঘটে। পুলিশের সাহায্য পাওয়া যায় না। তিনি নিজেও অপহরণের শিকার হয়েছিলেন। তিনি এখনো সে ভয় কাটিয়ে উঠতে পারেননি।
টেকনাফ থানার ওসি হাফিজুর বলেন, ‘ক্যাম্পে অপহরণ, ধর্ষণ, মারামারি, ছিনতাই লেগেই আছে। অনেক সময় আমরা খোঁজ পাই। কিন্তু ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে না। তাই অনেক ঘটনা অজানা থেকে যায়।’
কোনো কৌশল কাজে আসছে না
শালবন পাহাড়ে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর সাত-আট শ সদস্য আছে। পাহাড়ে আস্তানা গেড়ে বসেছে তারা। ঘন জঙ্গলে সেটি বোঝার উপায় নেই। খাবারের জন্য তারা মাঝেমধ্যে সমতলে নামে। কাকে অপহরণ করা হবে, ক্যাম্পে থাকা অন্য সদস্যরা সেটি ঠিক করে। ২৬ নম্বর এই ক্যাম্পের ৫ ব্লকে ৪১ হাজার ৭৭২ রোহিঙ্গার বসবাস।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, গত দুই বছরে ক্যাম্পে অন্তত ৭০টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এই দুই বছরে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে করা ৪৯৩টি মামলা হয়েছে, যাতে ১ হাজার ৪৫৮ জন আসামি। সবচেয়ে বেশি, প্রায় দুই শ হলো মাদক মামলা। রয়েছে মানব পাচার, অস্ত্র, ধর্ষণ, ধর্ষণচেষ্টা, নারী নির্যাতন, অপহরণ ও পুলিশের ওপর হামলার মামলা।
র্যাবের উইং কমান্ডার আজিম আহমেদ বলছেন, ‘হেলিকপ্টার আর ড্রোন উড়িয়ে আমরা সন্ত্রাসীদের আস্তানা খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছি। ডিসেম্বর থেকে এ পর্যন্ত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ১২ জন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।’
মানব পাচার, মাদক, স্বর্ণ চোরাচালান থেকে আসে অর্থ। র্যাব-পুলিশের তথ্য বলছে, এসব বাহিনীর অর্থের বড় একটি উৎস ইয়াবা, মানব পাচার ও স্বর্ণ চোরাচালান। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের যেসব সিন্ডিকেট ইয়াবা, মানব পাচার ও স্বর্ণ চোরাচালান করছে, তাদের কাছ থেকে নিয়মিত মাসোহারা নেয় তারা। এমনকি সাগরপথে পাচারের শিকার ব্যক্তিদের শুরুতে এই পাহাড়ে রাখা হয়।
বিজিবি, র্যাব ও পুলিশ বলছে, গত ১০ মাসে এসব এলাকায় অনন্ত ১০৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, রোহিঙ্গাদের পাহাড়ি ক্যাম্পে এত অস্ত্র-গোলাবারুদের উৎস কী?
আর্মড পুলিশের পদস্থ এক কর্মকর্তা বলেন, রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের মূল উৎস মিয়ানমার। সে দেশ থেকে মাদকের সঙ্গে আসছে অস্ত্র। বান্দরবানের চাকঢালা, আশারতলী, তুমব্রু, ঘুমধুম সীমান্ত দিয়ে আসছে এসব অস্ত্র। পাহাড়ে সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের গুদামও রয়েছে।
র্যাব ও বিজিবির তথ্যমতে, রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় গত ছয় মাসে অভিযান চালিয়ে ১৫১টি গোলাবারুদ, ৩৩টি দেশীয় বন্দুক, দুটি নাইন এমএম পিস্তল, তিনটি রিভলবার, দুটি থ্রি কোয়ার্টার গান, তিনটি এলজি, পাঁচটি এসবিবিএল, একটি রাইফেল উদ্ধার করা হয়।
ক্যাম্পে কাজ করা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেফ দ্য চিলড্রেনের এক নারী কর্মী বলেন, ‘নয়াপাড়া ক্যাম্পের পেছনের পাহাড়ে রোহিঙ্গা ডাকাতদের আস্তানা। দিনে পাহাড় আর রাতে ক্যাম্প চষে বেড়ায় তারা। আমরা নিজেরাও অনিরাপদ বোধ করছি।’
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘জেলা পুলিশ ক্যাম্পের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে এপিবিএনের সঙ্গে কাজ করছে। আমরা একাধিক অভিযান চালিয়েছি। সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি পয়েন্টে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে এবং চোরাচালান বন্ধে বুলেটপ্রুফ গাড়ি নিয়ে টহল শুরু করেছে বিজিবি। আজ শুক্রবার দুপুর থেকে চোরাচালানের জোন বলে খ্যাত সীমান্ত সড়কের ৪২ নম্বর পিলার থেকে ৫৪ নম্বর পিলার পর্যন্ত আট কিলোমিটার এলাকায় টহল দিচ্ছেন বিজিবির
৩ মিনিট আগেবাগেরহাটের কচুয়ায় ‘চলো পাল্টাই’ সংগঠন ও শিক্ষার্থীরা বিনা লাভের বাজার চালু করেছে। খোলা বাজারের চেয়ে ১০-২০ টাকা কমে আলু, পেঁয়াজ, ডালসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রি হচ্ছে।
১৩ মিনিট আগেবৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্রদের তুলে নিয়ে মারধরের ঘটনায় করা মামলায় কুড়িগ্রামের উলিপুরে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের চার নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে।
৩২ মিনিট আগেপদ্মা সেতু নির্মাণে আওয়ামী লীগের কৃতিত্ব নেই উল্লেখ করে এই নেতা বলেন, ‘বলতে পারেন আওয়ামী লীগ পদ্মা সেতু করেছে। আমি যদি কষ্ট করে উপার্জন করে একটা তিনতলা বিল্ডিং করি, মানুষ আমাকে সাধুবাদ জানাবে, মোবারকবাদ জানাবে। আর যদি মানুষের থেকে লোন নিয়ে তিনতলা বিল্ডিং করি, মানুষ আমাকে বেহায়া বলবে। হাসিনা যখন ২০০৯
১ ঘণ্টা আগে