ফেনীতে ৪ আগস্ট হত্যাকাণ্ড: আ. লীগ নেতাদের আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যালিস্টিক পরীক্ষার নির্দেশ

ফেনী প্রতিনিধি
Thumbnail image

ফেনীর মহিপালে গত ৪ আগস্ট ছাত্র–জনতার আন্দোলনে হত্যা মামলার আসামি আওয়ামী লীগ নেতাদের লাইসেন্সকৃত জমা দেওয়া অস্ত্রের ব্যালিস্টিক পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। 

গতকাল রোববার দুপুরে মামলার বাদীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ফেনীর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম শামসাদ বেগম এ আদেশ দেন। 

উল্লেখ্য, ব্যালিস্টিক পরীক্ষা বলতে বোঝায় আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি করা হয়েছে কিনা তার প্রমাণ যাচাই করা। যখন একটি আগ্নেয়াস্ত্র থেকে বুলেট বেরিয়ে যায়, তখন বন্দুকে বুলেট এবং কার্টিজ কেসের আণুবীক্ষণিক চিহ্ন রয়ে যায়। এই চিহ্নগুলোকে ব্যালিস্টিক ফিঙ্গার প্রিন্ট। 

আদালত সূত্রে জানা যায়, মহিপালে ছাত্র–জনতা হত্যায় এখন পর্যন্ত ৮টি হত্যা মামলা হয়েছে। এর মধ্যে নিহত ছাইদুল ইসলামের বাবা রফিকুল ইসলাম, শিহাবের মা মাহফুজা আক্তার, শাকিবের মা কোহিনুর আক্তার এবং জাফর আহম্মদের স্ত্রী আছিয়া বেগম আদালতে আসামিদের অস্ত্রের ব্যালিস্টিক পরীক্ষা ও তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য আবেদন করেছেন। 

আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, হত্যা মামলা করার পর থেকে আসামিরা মামলা প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দিয়ে আসছেন। এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি জড়িতদের। এ অবস্থায় বাদীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাঁরা আরও উল্লেখ করেন, আসামিদের লাইসেন্সকৃত অস্ত্রগুলো ইতিমধ্যে জমা দেওয়া হয়েছে। এসব অস্ত্র ব্যবহার করেই মহিপালে ছাত্র–জনতার ওপর গণহত্যা চালানো হয়েছে। 

গত ৪ আগস্ট ফেনীতে ছাত্র–জনতা আন্দোলনে বেশ কয়েকজন অস্ত্রধারীকে গুলি করতে দেখা যায়। ছবি: সংগৃহীতএ ব্যাপারে বাদী পক্ষের আইনজীবী মেজবাহ উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, মামলা করার পর থেকে এজাহারভুক্ত আসামিসহ অজ্ঞাতনামা আসামিরা প্রতিনিয়ত মামলা প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দিচ্ছেন। তাই বাদীর নিরাপত্তা নিশ্চিত ও আসামিদের জমা দেওয়া অস্ত্রের ব্যালিস্টিক পরীক্ষার আবেদন করা হয়েছে। 

গত ৪ আগস্ট ফেনীতে ছাত্র–জনতা আন্দোলনে বেশ কয়েকজন অস্ত্রধারীকে গুলি করতে দেখা যায়। ছবি: সংগৃহীতআদালত অস্ত্রগুলোর ব্যালিস্টিক পরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে যথাযথ প্রক্রিয়ায় পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এটির মাধ্যমে প্রমাণ হবে কোন অস্ত্র থেকে কতটি গুলি ছোড়া হয়েছে এবং বৈধ অস্ত্র কীভাবে অবৈধভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। 

গত ৪ আগস্ট ফেনীতে ছাত্র–জনতা আন্দোলনে বেশ কয়েকজন অস্ত্রধারীকে গুলি করতে দেখা যায়। ছবি: সংগৃহীতপ্রসঙ্গত, গত ৪ আগস্ট ফেনীর মহিপালে ছাত্র–জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ নেতাদের গুলিতে ৯ জন নিহত হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়। এ ঘটনায় ফেনী মডেল থানায় করা পৃথক আটটি হত্যা মামলায় ২ হাজার ৯৪১ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের তালিকায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা, দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ফেনীর তিন সাবেক সংসদ সদস্য, জেলার আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীদের নাম রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত