Ajker Patrika

শাশুড়ির মৃত্যুর খবর শুনে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মা-ছেলের মৃত্যু

কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২০: ০০
মায়ের পর স্ত্রী ও শিশুসন্তানকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মোহাম্মদ নোমানুর রশিদ। ছবি: আজকের পত্রিকা
মায়ের পর স্ত্রী ও শিশুসন্তানকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মোহাম্মদ নোমানুর রশিদ। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর বড়উঠানে শাশুড়ির মৃত্যুর খবর শুনে একমাত্র ছেলেসন্তানকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন মা আইরিন নিগার (২৮)। গাড়িতে উঠে কিছুদূর যাওয়ার পরই বাস ও পাথরবোঝাই ডাম্প ট্রাকের সংঘর্ষে ৭ মাসের সন্তানসহ প্রাণ হারান তিনি।

গতকাল রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের উত্তর গয়ালমারা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন নিহতের আপন ছোট ভাই মোহাম্মদ আবির। নিহত আইরিন নিগার কর্ণফুলীর বড়উঠান ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদ নোমানুর রশিদের (৩৫) স্ত্রী।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৫ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার রামুতে আইরিনের বাবা মারা গেলে সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতে যান। এরপর থেকে সেখানেই ছিলেন। এদিকে গতকাল রোববার রাত ১২টার দিয়ে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর শাশুড়ি ফাতেমা বেগম (৭০) মারা যান। মৃত্যুর খবর শুনে ছোট ভাই ও সন্তানকে নিয়ে স্বামীর বাড়িতে আসছিলেন আইরিন।

পথে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের উত্তর গয়ালমারা এলাকায় বাস ও পাথরবোঝাই ডাম্প ট্রাকের সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই মারা যান আইরিন। এ সময় গুরুতর আহত হন শিশুসন্তান মোহাম্মদ আরহাম বিন নোমানসহ আরও সাতজন। আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সাত মাসের আরহাম। আহত বাকি ৬ জনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

মায়ের পর দুর্ঘটনায় স্ত্রী ও সন্তান নিহতের খবরে দিশেহারা হয়ে পড়েন স্বামী মোহাম্মদ নোমানুর রশিদ। সকালে স্ত্রী ও সন্তানের লাশ বাড়িতে এলে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। আহাজারি করতে করতে নোমানুর রশিদ বলছিলেন, ‘মা, স্ত্রী-সন্তান গেল, আমারে দেখার কেউ রইল না আর। মাকে দাফন করে ঘরে এসেই স্ত্রী-সন্তানকেও কবরে দিয়ে আসতে হলো।’

কাঁপা কণ্ঠে নোমানুর রশিদ আরও বলেন, ‘মায়ের মৃত্যুর খবরে দ্রুত আসতে বলেছিলাম। তারা ফিরেছে ঠিকই, তবে লাশ হয়ে। কিন্তু কেন? আমার সাজানো-গোছানো সংসারের এ পরিণতি কেন? আমার স্ত্রী-সন্তানদের এই পরিণতির জন্য দায়ী কে? আমি তাদের শাস্তি চাই। অন্য কিছু নয়।’

নিহতের ভাশুর আমিনুল রশিদ বলেন, সোমবার সকাল ১০টায় মায়ের জানাজা শেষে দাফন করা হয়। এরপর দুপুরে ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ও তাঁর সন্তানের দাফন সম্পন্ন হয়।

এ বিষয়ে রামু চিরিংগা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুল আমিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি দুটি জব্দ করা হয়েছে। আইনিপ্রক্রিয়া শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত