রামুতে ভোটের ফলাফলে নয়-ছয়, পুনর্নির্বাচনের সিদ্ধান্ত

রামু (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২০ নভেম্বর ২০২১, ২০: ১৯

কক্সবাজারের রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডে ভোটের ফলাফল নিয়ে কারচুপির অভিযোগ পাওয়া গেছে। দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে ওই ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য (মেম্বার) পদে ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। এর মধ্যে দুজন প্রার্থী সমান ভোট পাওয়ায় এক প্রজ্ঞাপনে আগামী ২৪শে নভেম্বর পুনর্নির্বাচন ঘোষণা করা হয়।

এদিকে গত ১১ নভেম্বর ভোটগ্রহণ শেষে প্রিসাইডিং অফিসারের স্বাক্ষরিত লিখিত ভোট গণনার বিবরণীতে মোট উপস্থিত ভোট দেখানো হয় ১ হাজার ৮৪৮টি। যেখানে ৪৭টি ভোট অবৈধ বা বাতিল বলেও উল্লেখ আছে। তাহলে ছয়জন সাধারণ সদস্য পদপ্রার্থীর মোট প্রাপ্ত বৈধ ভোটের সংখ্যা দাঁড়ায় ১ হাজার ৮০১টি। 

বিপত্তি বাঁধে এখানেই। একই ভোট গণনার লিখিত বিবরণীতে দেখানো হয়েছে মেম্বার প্রার্থী আজিজুল হক পেয়েছেন ৬১ ভোট, মফিজুর রহমান ৩৮০ ভোট, মো. আরমান ২৩৭ ভোট, মো. মিজানুর রহমান ৩৭৩ ভোট, রহমত উল্লাহ ৩২৭ ভোট, সুলতান আহমেদ ৩৮০ ভোট পেয়েছেন। ছয়জন প্রার্থীর মোট প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা দাঁড়ায় ১ হাজার ৭৫৮ ভোট। মাঝখানে ৪৩টি বৈধ ভোটের কোনো হদিস নেই। 

এদিকে প্রিসাইডিং অফিসারের দেওয়া ভোট গণনার ফলাফল রামু উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে সম্পূর্ণ বদলে যায়। প্রকাশিত ভোট গণনার একীভূত বিবরণীতে দেখা যায়, মোট বৈধ ভোটের বিবরণ ১ হাজার ৭৫৮টি। যার মধ্যে অবৈধ বা বাতিল ভোট দেখানো হয়েছে ৯০টি। যেখানে কেন্দ্রে থাকতে দেখানো হয়েছে ৪৭টি। 

ভোট গণনার ফলাফলের তারতম্য নিয়ে রামু উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহফুজুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে প্রিসাইডিং অফিসার যে ফলাফল দিয়েছে সেটি সঠিক মনে হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে দুজন প্রার্থী সমান ভোট পেয়েছে। তাহলে সে অনুযায়ী ২৪ নভেম্বর আবারও ভোট হবে। 

কেন্দ্র প্রকাশিত ফলাফল এবং রিটার্নিং অফিসারের কাছে দেওয়া ফলাফল খতিয়ে দেখেছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘খতিয়ে দেখার সুযোগ নাই। কোনো প্রার্থী যদি মনে করে আদালতে মামলা করতে পারে। আমাদের কিছু করার নাই।’ 

ভোট গণনা শেষে প্রিসাইডিং অফিসার আবদুল্লা মোহাম্মদ শহীদুল আলম স্বাক্ষরিত ভোট গণনার ফলাফল পশ্চিম জোয়ারিয়ানালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দেওয়ালে টাঙানো হয়েছিল। যা বর্তমানে একজন প্রার্থীর কাছে সংরক্ষিত আছে। 

সেদিন দায়িত্ব পালন করা প্রিসাইডিং অফিসার আবদুল্লা মোহাম্মদ শহীদুল আলমের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে ও খুদেবার্তা পাঠিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় বাসিন্দা বদরোদ্দোজা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কেন্দ্রে ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে একরকম আবার নির্বাচন অফিসে গিয়ে ফলাফল হয়ে গেছে আরেকরকম। মাঝখানে ৪৩টি ভোট গায়েব হয়ে গেছে। এটা নির্বাচনের নামে প্রহসন।’ 

সমান ভোট পাওয়া দুজন হলেন, সুলতান আহমেদ ও মফিজুর রহমান। তাঁরা দুজনই ৩৮০ করে পেয়েছেন। সুলতান আহমেদ বলেন, ‘কেন্দ্রে প্রকাশিত ফলাফল আর নির্বাচন অফিসে প্রকাশিত ফলাফলে তারতম্য আছে। ২৪ নভেম্বর পুনর্নির্বাচন ঘোষণা করা হয়েছে। আবারও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। 

এই সংবাদের তথ্য সংগ্রহের সময় এই প্রতিবেদকে জোয়ারিয়ানালার একাধিক ভোটার বলেন, আগে এই ফলাফলের নয়-ছয় নিয়ে পরিষ্কার করে জানানো হোক। প্রয়োজনে ভোট পুনঃগণনা করা হোক। এই ফলাফলের বিরুদ্ধে আপিলের কোনো সুযোগ না দিয়ে পুনর্নির্বাচন যেন গ্রহণ করা না হয়। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত