Ajker Patrika

কুমিল্লায় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের মিছিলে হামলায় ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা

কুমিল্লা প্রতিনিধি
আপডেট : ১৭ অক্টোবর ২০২৩, ০১: ৪৬
কুমিল্লায় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের মিছিলে হামলায় ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা

কুমিল্লায় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের মিছিলে হামলার ঘটনায় অজ্ঞাত ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ তাপস কুমার বকসী বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় এ মামলা করেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করে। 

তাঁরা হচ্ছেন নগরীর রাজগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা মহসিন আহমেদ শিপন (৩৫) ও মোগলটুলি এলাকার নূর মোহাম্মদ স্বপন (৪০)। তাঁরা স্থানীয় যুবলীগের কর্মী হিসেবে পরিচিত। 

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহাম্মদ সাঞ্জুর মোর্শেদ বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘অধ্যক্ষ তাপস কুমার বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। পরে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে রাতেই দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ফুটেজ দেখে বাকিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’ 

বাদী জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সম্পাদক অধ্যক্ষ তাপস কুমার বকসী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে আমাদের কেন্দ্রীয় নেতারা আইনগত ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করেছেন। তাঁদের সঙ্গে পরামর্শ করে রোববার রাতে আমরা কান্দিরপাড় ফাঁড়ির ইনচার্জের মাধ্যমে কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাত ৪০০-৫০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করি।’
 
এর আগে ৪ অক্টোবর কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে সংসদ সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের পূজা নিয়ে একটি বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। পরে সংগঠনের নেতারা সংসদ সদস্য বাহারের মন্তব্য, সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাসকে নিয়ে মুন্সিগঞ্জের মেয়রের ‘সাম্প্রদায়িক গালিগালাজ’, কুড়িগ্রামের চারণ কবি রাধাপদ রায়ের ওপর হামলা, বিভিন্ন স্থানে পূজার প্রাক্কালে মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে দেশব্যাপী কর্মসূচি দেন। 

এরই অংশ হিসেবে ১৩ অক্টোবর কুমিল্লার রানীর বাজারে যুব ও ছাত্র ঐক্য পরিষদের ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের আয়োজন করে। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর কান্দিরপাড়ের দিকে রওনা দেয়। মিছিলটি রানীর বাজার সড়কের কর ভবন এলাকায় এলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। তখন তারা সেখানেই বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। 

অন্যদিকে মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক আবদুল্লা আল মাহমুদ সহিদ ও যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিবুর আল আমিন সাদীর নেতৃত্বে একটি শান্তি মিছিল রানীর বাজার সড়কে এলে পুলিশ তাদের ফরিদা বিদ্যায়তন স্কুলের সামনে থামিয়ে দেয়। পরে যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে ঐক্য পরিষদের লোকদের ধাওয়া করেন। তাঁদের হামলায় মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় এবং ঐক্য পরিষদের পাঁচ-ছয়জন আহত হন। 

এ ঘটনায় গতকাল হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের একটি প্রতিনিধিদল জেলা পুলিশ সুপার আবদুল মান্নানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় তারা এ ঘটনার বিচার দাবি করে হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানায়। পরে সেখান থেকে কেন্দ্রীয় নেতারা নগরীর ঠাকুরপাড়া শশ্মান কালীবাড়ি মন্দিরে যান। সেখানে হামলায় আহতদের খোঁজখবর নেন এবং ঐক্য পরিষদের স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত