Ajker Patrika

হাত-পা বেঁধে ৩ সন্তানের মাকে নির্যাতন, থানায় অভিযোগ

সুবর্ণচর (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
হাত-পা বেঁধে ৩ সন্তানের মাকে নির্যাতন, থানায় অভিযোগ

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে হাত-পা বেঁধে তিন সন্তানের মা শারমিন আক্তারকে (৩০) নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। গত ১৩ সেপ্টেম্বর রাতে উপজেলার পূর্ব চরবটা ইউনিয়নের চরমজিদ গ্রামের আব্দুল হাদিগো বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। 

গৃহবধূ শারমিন আক্তারকে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। গতকাল বুধবার রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে চরজব্বর থানার পুলিশ। এই ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার থানায় বাদী হয়ে অভিযোগ দিয়েছেন শারমিন আক্তার। 

পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, ১২ বছর আগে পারিবারিক ভাবে চরমজিদ গ্রামের নুরনবীর সঙ্গে শারমিন আক্তারের বিয়ে হয়। স্বামী শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় তিনি ভিক্ষা করে সংসার চালান। তাঁদের তিন সন্তানের মধ্যে একজনের হার্টে সমস্যা রয়েছে। শিশুসন্তানের চিকিৎসায় ৫০ হাজার টাকা দরকার। শারমিন আক্তার স্থানীয় কয়েকটি বাজারে ভিক্ষা করে ১৫ হাজার টাকা জোগাড় করেন। 

শারমিন আক্তার বলেন, ভিক্ষা করে বাড়ি ফিরতে দেরি হলে পরপুরুষের সঙ্গে সম্পর্কের অভিযোগ তুলে প্রায় গালমন্দ করতেন স্বামী। এতে পারিবারিক কলহ দেখা দিলে কয়েক দিন আগে কাজের সন্ধানে আমি ঢাকায় চলে যাই। পরে স্বামীর পরিবারের লোকজনের কথায় ফিরে আসি। 

শারমিন আক্তার আরও বলেন, গত ১৩ সেপ্টেম্বর রাতে শ্বশুর বাড়ির একজন প্রতিবেশী আশ্বস্ত করে আমাকে এলাকায় নিয়ে যান। শ্বশুরবাড়িতে প্রথমে ওই প্রতিবেশী আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। ওই দিন রাত ১২টার দিকে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে শ্বশুর আব্দুল হাদি ও স্বামী নুরনবীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন হাত-পা বেঁধে আমাকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালায়।’ 

মা-বাবা বেঁচে নেই বলে জানান শারমিন আক্তার। তিনি বলেন, ‘আমার খালাতো ভাইয়েরা লালন পালন করে আমাকে বিয়ে দেয়। খবর পেয়ে আমাকে উদ্ধার করে তাঁদের বাড়িতে নিয়ে আসে।’ 
 
অভিযোগের বিষয়ে ভুক্তভোগীর স্বামী নুর নবী বলেন, ‘আমি শারীরিক প্রতিবন্ধী। শারমিন আক্তার আমার অবাধ্য। সে কয়েক দিন পরপর বাড়ি থেকে বের হয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। আবার ফিরে আসে। সামাজিকভাবে আমরা মুখ দেখাতে পারছি না। এ নিয়ে বকা দিলে সে আত্মহত্যা করতে যায়। নিরুপায় হয়ে বৃদ্ধ বাবার সাহায্যে তাঁকে বেঁধে রেখে শ্বশুরবাড়ির লোকদের খবর দিই। তাঁরা এসে ভিডিওটি করে এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়। ঘটনাটি আমরা পারিবারিক ও সামাজিকভাবে মীমাংসা করেছি।’ 

চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাওসার আলম ভূঁইয়া বলেন, ‘গৃহবধূর হাত-পা বাঁধা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখতে পাই। ভুক্তভোগীর পরিচয় নিশ্চিত হয়ে অভিযুক্তকে রাতে আটক করে থানায় নিয়ে আসি। ভুক্তভোগী বাদী হয়ে আজ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত