Ajker Patrika

স্ট্রোকের পর হাসপাতালে অন্তঃসত্ত্বা, সুস্থ নবজাতককে না দেখেই প্রাণ গেল তাঁর

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ০৭ জুন ২০২৪, ২১: ১৭
স্ট্রোকের পর হাসপাতালে অন্তঃসত্ত্বা, সুস্থ নবজাতককে না দেখেই প্রাণ গেল তাঁর

স্ট্রোকের পর সংজ্ঞাহীন ছিলেন। কিন্তু তারপরও দেহের ভেতর ছোট্ট প্রাণটা বেঁচে ছিল। সিজারিয়ান অপারেশনের পর ফুটফুটে কন্যাসন্তান জন্ম হয়। তবে আর জ্ঞান ফেরেনি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাওরীন মোস্তফার। চলে গেছেন পরপারে। 

অথচ নবাগত শিশুকে নিয়ে কত আশা স্বপ্ন ছিল তাঁর। অসুস্থ হওয়ার আগে শাওরীন মোস্তফা মাকে বলেছিলেন, ‘আমার যা-ই হোক, সন্তান যেন বাঁচে।’ ঠিক তাই হলো। সন্তানকে পৃথিবীর মুখ দেখিয়ে পরপারে চলে যান তিনি। 

গত বুধবার (৫ জুন) তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয় কক্সবাজারের চকরিয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকেরা জানান, অ্যাডভোকেট শাওরীন মোস্তফার স্ট্রোক হয়েছে। তাঁর উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। 

ওই দিনই তাঁকে আনা হয় চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের মা ও শিশু হাসপাতালে। চিকিৎসকের পরামর্শে সেখানে তাঁকে সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়। শাওরীনের ঘরে আসে ফুটফুটে কন্যাসন্তান। 

গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ জুন) শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে ও নবজাতককে আইসিইউতে ভর্তি করানো হয়। আজ শুক্রবার সকাল ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। মেয়ের মুখ দেখার আগেই স্বজনদের কাঁদিয়ে পরপারে পাড়ি জমালেন শাওরীন। তাঁর সন্তান এখন সুস্থ আছে। 

তাঁর মৃত্যুতে শোকের আবহ সৃষ্টি হয়েছে চট্টগ্রামের আদালত পাড়া থেকে চকরিয়া এলাকায়। দুই বছর আগে বিয়ের পিঁড়িতে বসা শাওরীনের গ্রামে চলছে মাতম। 

শাওরীন কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা মাইজ কাকারা এলাকার শিক্ষক বাদশা মিয়ার মেয়ে। তাঁর মা মোতাহেরা বেগমও স্থানীয় উত্তর কাকারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। চার ছেলেসহ শাওরীন ছিলেন বাবা-মায়ের একমাত্র মেয়ে। তিনি চট্টগ্রামের প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ১৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তিনি সুপ্রিম কোর্ট ও চট্টগ্রাম বারের আইনজীবী ছিলেন। 

শাওরীনের ভাই বাবলু হাসান বলেন, ‘আমার একমাত্র বোন আজ শুক্রবার সকাল ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। এশার নামাজের পর মাইজ কাকারা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। আমার বোনের জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ আমার বোনকে জান্নাতের মেহমান হিসেবে কবুল করুন। ।’ 

আইনজীবী জান্নাতুল ফেরদৌস মুক্তা বলেন, ‘শাওরীন মোস্তফা আমার অত্যন্ত কাছের ছোট বোন। তাঁর মৃত্যু মেনে নেওয়া বেশি কষ্টের। নিজের মেয়েকে একবারের জন্য দেখতে পারল না, এর চেয়ে হৃদয়বিদারক আর কিছু হতে পারে না।’ 

কক্সবাজার জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য আসমাউল হোসনা বলেন, ‘প্রিয় বান্ধবী আমাদের সবাইকে ছেড়ে চলে গেছে। এটা বলতে কষ্ট হচ্ছে, সে কথা কী করে বোঝাব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

৬ জ্যান্ত হাতি নিয়ে রাশিয়ায় মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান, উচ্ছ্বসিত পুতিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত