চাঁদপুরে ঘরে ঝুলছিল দুই শিশুকন্যাসহ গৃহবধূর লাশ

ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬: ৫৭
Thumbnail image

দুই শিশুকন্যাসহ মায়ের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরদুঃখিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের পুটিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গৃহবধূর নাম  ফাতেমা আক্তার সীমার (২৬), দুই শিশুকন্যা আরিফ (৪ বছর) ও আরিয়া (২ বছর)।

আত্মহত্যাকারী ফাতেমা আক্তার সীমা পুটিয়া গ্রামের সদ্য প্রবাস ফেরত আরিফ হোসেন রাঢ়ীর স্ত্রী। সংবাদ পেয়ে থানা-পুলিশ লাশ উদ্ধার করেছে। 

জানা গেছে, পার্শ্ববর্তী হাইমচর উপজেলার চরকৃষ্ণপুর গ্রামের মোস্তফা কোতোয়ালের চতুর্থ সন্তান ফাতেমা আক্তার সীমার সঙ্গে ৭ বছর আগে ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরদুঃখিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের পুটিয়া গ্রামের পুটিয়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম রাঢ়ীর ছেলে আরিফ হোসেন রাঢ়ীর বিয়ে হয়। তাঁদের ঘরে দুই সন্তান। দুবাইপ্রবাসী আরিফ হোসেন রাঢ়ী গত ফেব্রুয়ারি দেশে ফেরেন। পবিত্র ঈদুল ফিতরের দুই দিন পর প্রবাসে ফিরে যাওয়ার কথা। 

স্বামী আরিফ হোসেন রাঢ়ী জানায়, আজ সকালে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় দেখেছেন তাঁর স্ত্রী ফতেমা আক্তার সীমা দুই সন্তানকে খাওয়াচ্ছেন। প্রায় দুই ঘণ্টা পর চালের বস্তা নিয়ে বাড়ি ফিরে দেখেন ঘরের দরজা বন্ধ। ডাকাডাকি করে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে ঘরের পেছন দিকে গিয়ে জানালা গিয়ে দেখেন স্ত্রী ও দুই সন্তান সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে রয়েছে। চিৎকার দিলে তাঁর মাসহ আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে তিনজনের ঝুলন্ত লাশ নামিয়ে খাটে শুইয়ে রাখে। 

প্রতিবেশীদের ধারণা, মা ও দুই মেয়ের এই মৃত্যু রহস্যজনক। পরকীয়া সন্দেহে মা দুই মেয়ের মৃত্যু নিশ্চিতের পর নিজে আত্মহত্যা করেছে, নাকি স্বামী আরিফ হোসেন রাঢ়ী নিজেই এই ঘটনা ঘটিয়েছেন তা নিয়ে সন্দেহ করছেন প্রতিবেশীরা। 

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, চরদুঃখিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের পুটিয়া গ্রামের আরিফ হোসেন রাঢ়ীর ঘরে স্ত্রী ফাতেমা আক্তার সীমা (২৬), ৪ বছরের শিশু আরিফা, ২ বছরের শিশু আরিয়ার নিথর দেহ ঘরের খাটে পড়ে রয়েছে। বাইরে শত শত উৎসুক জনতা। উপস্থিত লোকজন এই মৃত্যু নিয়ে নানা মন্তব্য করছেন। 

লোকজন জানান, প্রবাসী আরিফ হোসেন রাঢ়ীর সঙ্গে স্ত্রী ফাতেমা আক্তার সীমার গতকাল সোমবার রাতে কথা-কাটাকাটি হয়। আর সকালে এই ঘটনা ঘটল। 

ফাতেমা আক্তারের মা শাহিনুর বেগম বলেন, ‘মেয়ে ও দুই নাতনির মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে ছুটে এসেছি। সোমবার রাতেও মেয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছি। তদন্তের মাধ্যমেই প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে বলে বিশ্বাস করি।’ 

এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান বলেন, ‘সকালে আরিফ রাঢ়ীর ঘরের বিছানায় মা ও দুই মেয়ের লাশ পড়ে থাকতে দেখেছি। এ ছাড়া ঘরের ফ্যানের সঙ্গে একাধিক দড়ি ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। ঘটনা কী এবং কেন ঘটেছে তা তদন্ত সাপেক্ষে বের হবে। ফাতেমা আক্তার সীমার বড় বোনও প্রবাসে এর আগে আত্মহত্যা করেছেন বলে শুনেছি। ওই পরিবারের এই ধরনের মানসিক সমস্যা রয়েছে কি না তা-ও তদন্ত করা প্রয়োজন।’ 

ফরিদগঞ্জ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইদুল ইসলাম জানান, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে পোস্ট মর্টেমের জন্য চাঁদপুর হাসপাতালে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত