চবিতে বঙ্গবন্ধু চেয়ারে গচ্চা ৬০ লাখ টাকা

চবি সংবাদদাতা 
Thumbnail image

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি সংরক্ষণ এবং তাঁর জীবন নিয়ে গবেষণার লক্ষ্যে ২০২০ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) প্রতিষ্ঠা করা হয় ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’। নিয়োগ দেওয়া হয় ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. মুনতাসীর উদ্দিন খান মামুনকে (মুনতাসীর মামুন)। নিয়োগের পর থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৪৩ মাসের বেতন-ভাতা বাবদ তিনি নিয়েছেন ৬০ লাখ টাকা। সে হিসাবে প্রতি মাসে ১ লাখ ৩৯ হাজার টাকা করে নিয়েছেন। তবে চলতি মাস থেকে তাঁর সেই বেতন-ভাতা স্থগিত করা হয়েছে।

এদিকে বঙ্গবন্ধু চেয়ারের নীতিমালায় স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে—নিয়োগপ্রাপ্ত অধ্যাপককে এক বছরের মধ্যে গবেষণা প্রকল্পের একটি প্রতিবেদন পেশ করতে হবে। কিন্তু অধ্যাপক মামুনের ক্ষেত্রে সেই নীতি উপেক্ষিত হয়েছে।

চবি থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০২১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি দুই বছরের জন্য অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনকে এই পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০২৩ সালে তাঁর মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়ানো হয়। সব মিলিয়ে বিগত প্রায় চার বছরে কার্যত কোনো গবেষণাকর্ম দৃশ্যমান হয়নি। গবেষণার নামে তিনি মাসে মাসে বেতন-ভাতা নিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ারের’ দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যাপক যিনি হবেন, তাঁকে প্রতি ছয় মাস পরপর গবেষণার অগ্রগতির প্রতিবেদন এবং মেয়াদ শেষে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। এ ছাড়া বছরে অন্তত দুটি প্রবন্ধ রচনা এবং অন্তত চারটি বক্তব্য উপস্থাপন করবেন। তবে ড. মুনতাসীর গত বছরের ৫ মার্চের পর থেকে কোনো গবেষণা প্রতিবেদন বা অগ্রগতির প্রতিবেদন বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা দেননি।

জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন আতিয়ার রহমান বলেন, ‘একজন শিক্ষক বা গবেষক যখন তাঁর গবেষণার জন্য ফান্ড নেবেন, তখন অবশ্যই গবেষণাটা ঠিকমতো করা উচিত। গবেষণা না করে এর জন্য টাকা নেওয়াটা অনৈতিক একটি কাজ।’

চবির রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছরের (২০২৩ সাল) ৫ মার্চের পর থেকে তিনি (মুনতাসীর) কোনো গবেষণা প্রতিবেদন জমা দেননি। প্রবন্ধ রচনা বা বক্তব্য প্রদানের কোনো প্রমাণ পাইনি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান হিসাব নিয়ামক মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, এ পদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে আবেদন করা হয়েছে। তবে পদটি এখনো অনুমোদিত হয়নি। অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শামীম উদ্দিন খান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ারের নীতিমালা অনুযায়ী তিনি কোনো কাজ করেছেন বলে গত এক বছর পর্যন্ত আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।’

ড. শামীম উদ্দিন আরও বলেন, ‘নীতিমালা অনুযায়ী বছরে অন্তত দুটি প্রবন্ধ, চারটি বক্তব্য দেওয়ার কথা। আমরা তাঁর (মুনতাসীর) এসব কাজের কোনো প্রমাণ পাচ্ছি না। অথচ তিনি বিগত চার বছরে ৬০ লাখ টাকার মতো বেতন-ভাতা নিয়েছেন। এসব বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাঁকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। জবাবের অপেক্ষায় আছি, পেলে নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে জানতে অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। তাঁর ই-মেইল ঠিকানায় তথ্য জানতে চেয়ে মেইল করা হলেও উত্তর দেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ট্রাম্পের শপথের আগেই বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে: সলিমুল্লাহ খান

সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে মনঃক্ষুণ্ন বিএনপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত