মার্কিন প্রতিনিধিদলকে রোহিঙ্গাদের চিঠি, প্রত্যাবাসনে ধৈর্য ধরার অনুরোধ

উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি  
আপডেট : ১২ জুলাই ২০২৩, ১৭: ৪৯
Thumbnail image

নিজেদের মধ্যে সংঘাত, বিভেদে না জড়িয়ে প্রত্যাবাসনের জন্য রোহিঙ্গাদের ধৈর্য ধরতে বলেছে বাংলাদেশে সফররত যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল। 

আজ বুধবার সকালে কক্সবাজারের উখিয়ার ৯ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছায় প্রতিনিধিদলটির গাড়িবহর। এতে নেতৃত্ব দেন যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার-বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া। 

এ সময় তাঁর সফরসঙ্গী হিসেবে ছিলেন দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া-বিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু ও যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএআইডি) এশিয়া দপ্তরের উপসহকারী প্রশাসক অঞ্জলি কৌর। 

সেখানে পৌঁছে প্রথমে তাঁরা জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা-বিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) রেজিস্ট্রেশন সেন্টারের কার্যক্রম ঘুরে দেখেন। পরে দলটি জাতিসংঘের শিশু সুরক্ষা তহবিল (ইউনিসেফ) ও বিশ্ব খাদ্য সংস্থার (ডব্লিউএফপি) চলমান প্রকল্প ও পরিদর্শন করে। 

পরিদর্শন শেষে ১১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এনজিও সংস্থা অ্যাকশন এআইডির একটি প্রকল্প কার্যালয়ে কমিউনিটি নেতা, ইমাম, যুবকসহ রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন উজরা জেয়াসহ প্রতিনিধিদলের অন্যরা। 

মতবিনিময়ে রোহিঙ্গারা প্রতিনিধিরা মিয়ানমারে তাঁদের ওপর চলা নির্যাতনের বর্ণনা তুলে ধরার পাশাপাশি প্রত্যাবাসনে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে একটি চিঠি প্রতিনিধিদলের কাছে হস্তান্তর করেন। 

প্রতিনিধিদলটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিভিন্ন সংস্থার কার্যক্রম পরিদর্শন করে। ছবি: আজকের পত্রিকাগণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে প্রতিনিধিদলের কেউ কথা না বললেও মতবিনিময়ে অংশ নেওয়া রোহিঙ্গারা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তাঁদের সংকট সমাধানে অতীতের মতো সব সময় পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে। 

প্রত্যাবাসন নিয়ে কাজ করতে গিয়ে নিহত রোহিঙ্গা নেতা মহিবুল্লাহর সংগঠন আরকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের (এআরএসপিএইচ) মুখপাত্র মাস্টার মোহাম্মদ জুবায়ের আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চিঠিতে আমরা বাংলাদেশের প্রতি শুকরিয়া জ্ঞাপন করে যুক্তরাষ্ট্রকেও তাদের অব্যাহত সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়েছি। আমরা যেন নিজ দেশে মর্যাদা নিয়ে একটি সুন্দর এবং টেকসই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ফিরতে পারি সে ক্ষেত্রে সহায়তার জন্য দেশটিকে অনুরোধ জানিয়েছি।’ 

রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতা (মাঝি) মোহাম্মদ কামাল বলেন, ‘তাঁরা আমাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন। সহায়তার আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, নিজেদের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি-বিভেদ না করে প্রত্যাবাসন সফল করার জন্য আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে।’ 

প্রতিনিধিদলের সদস্যরা মতবিনিময়ের পর ১৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) পরিচালিত রোহিঙ্গা কালচারাল সেন্টারে যান। 

বেলা ৩টার দিকে উখিয়া কলেজ লাগোয়া ইউএনএইচসিআর পরিচালিত স্পেশালাইজড হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে প্রতিনিধিদলটি কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা দেয়। 

কক্সবাজার শহরে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের বৈঠকে অংশ নেওয়ার পর বিমানযোগে সন্ধ্যায় তাঁদের ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে। 

 ৮ এপিবিএনের সহকারী পুলিশ সুপার (মিডিয়া) ফারুক আহমেদ আজকের পত্রিকাকে জানান, প্রতিনিধিদলের সফরকে ঘিরে ক্যাম্প এলাকাজুড়ে পুলিশের কড়া নিরাপত্তা ছিল। গোয়েন্দা নজরদারি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে ছিল। এ সময় কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার তথ্য পাওয়া যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত