Ajker Patrika

কাজ না করেই বিল তুলেছেন ঠিকাদার

  • অভিযোগ রহমানিয়া বাণিজ্য সংস্থার মালিক সফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে
  • আওয়ামী লীগের নেতার সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা রয়েছে বলে জানা গেছে
  • তাঁর বিরুদ্ধে নিম্নমানের কাজের অনেক অভিযোগ রয়েছে
নোয়াখালী প্রতিনিধি
কাজ না করেই বিল তুলেছেন ঠিকাদার

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে কাজ না করেই বিল তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সফিকুর রহমান নামের এক ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। তিনি রহমানিয়া বাণিজ্য সংস্থা নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক। তাঁর বিরুদ্ধে নিম্নমানের কাজের অনেক অভিযোগ রয়েছে বলেও জানিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সফিকুর রহমান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ভাই ও বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল কাদের মির্জার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি। সেই সুবাদে এলজিইডি, পিআইওসহ (প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস) পৌরসভার বড় কাজ বাগিয়ে নিতেন। নিম্নমানের কাজ করে বা কখনো কাজ না করেই রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বিল তুলে নিতেন তিনি। আর তাঁর এসব কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থা এলজিইডিসহ অন্যান্য সংস্থার কর্মকর্তাদের একাধিকবার হেনস্তাও করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, সফিকুর বর্তমানে নিজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও অন্য প্রতিষ্ঠানের হয়ে ৯টি বিদ্যালয়ের কাজ করছেন। সেগুলো নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১০ কোটি টাকা। কিন্তু এগুলোর নির্মাণকাজ শেষ না করেই প্রভাব খাটিয়ে গত ৫ আগস্টের আগে প্রায় সোয়া ৬ কোটি টাকা তুলে নিয়ে গেছেন। এরপরও সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও তিনি কাজ শেষ করছেন না। স্কুলগুলোর কাজ শেষ করে ৯ মাসের মধ্যে বুঝিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও প্রায় দেড় বছর পার হতে চলল। এখনো সেগুলোর কাজ শেষ হয়নি।

এ ছাড়া কোম্পানীগঞ্জের রামপুর ইউনিয়নের বাহার মাস্টার সড়কের ৮০০ মিটার নতুন সড়কের কাজে অনিয়ম পাওয়ায় ঠিকাদার সফিকুর রহমানকে গত ২৭ নভেম্বর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আজাহারুল ইসলাম কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেন। একই সঙ্গে পরবর্তী সাত কর্মদিবসের মধ্যে ওই সড়কের কাজ সংশোধন করে উপজেলা প্রকৌশলীর মাধ্যমে নির্বাহী প্রকৌশলীকে অবগত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

অভিযোগ রয়েছে, কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব না দিয়ে সফিকুর রহমান উপজেলা এলজিইডির ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উপজেলা প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে সংস্থার সুনাম ক্ষুণ্ন এবং হয়রানি করছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সফিকুর রহমান সব অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘আমি ছয়টি বিদ্যালয়ের কাজ করছি, সেগুলোর কাজ শেষ পর্যায়ে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সেগুলো সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে বুঝিয়ে দিতে পারব।’ তিনি শোকজের বিষয়টিও অস্বীকার করেন।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) কাজী কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বাহার মাস্টার সড়কটির কাজে ত্রুটি পাওয়ায় ২৭ নভেম্বর তাঁকে সংশোধন করার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অদ্যাবধি সফিকুর রহমান ওই চিঠি মোতাবেক কিছুই করেননি। উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন। এতে প্রতীয়মান হচ্ছে যে, সফিকুর রহমান আওয়ামী দুঃশাসনের আমলের মতোই কোনো নিয়ম না মেনেই তাঁর সকল কাজ এখনো চালিয়ে যাচ্ছেন।’

উপজেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘সফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে নিম্নমানের কাজের অনেক অভিযোগ রয়েছে। আমরা সরেজমিন কয়েকটি কাজ পরিদর্শন করেছি। অভিযোগের সত্যতাও মিলেছে এবং তাঁর কাছে নিম্নমানের কাজের সংশোধনপূর্বক জবাব চাওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘দ্রুত সময়ের মধ্যে ওই কাজগুলো আমরা আবার পরিদর্শন করব। যদি একই সমস্যা পাওয়া যায়, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাসা ভাড়ার টাকা নেই, অফিসের টয়লেটেই থাকছেন চীনা তরুণী

ঈদের মোনাজাতে খালেদা জিয়ার নাম না বলায় ইমামকে হেনস্তা, চাকরিচ্যুতির হুমকি

ঈদগাহে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান: আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ আহত ৫

কোম্পানি দেউলিয়া, দেড় কোটি মানুষের ডিএনএ ডেটার এখন কী হবে

ঈদের নামাজের মধ্যে ইমামকে হত্যাচেষ্টা, চাপাতিসহ যুবক আটক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত