Ajker Patrika

মিয়ানমারে সংঘাত: তুমব্রু সীমান্তে আতঙ্ক, গুলি এসে পড়ল অটোরিকশায়

নাইক্ষ্যংছড়ি (বান্দরবান) প্রতিনিধি  
মিয়ানমারে সংঘাত: তুমব্রু সীমান্তে আতঙ্ক, গুলি এসে পড়ল অটোরিকশায়

দুদিন বন্ধ থাকার পর ফের মিয়ানমারের জান্তাবাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র গোষ্ঠী গুলোর সংঘর্ষে কাঁপছে তুমব্রু সীমান্ত। আজ শনিবার থেমে থেমে এসেছে গুলির শব্দ। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে মানুষ। সীমান্ত ও তুমব্রু খালের দু’তীরের ঝোপ-জঙ্গলে এসে পড়ছে গুলির খোসা। বিকেলে গুলিতে তুমব্রু উত্তরপাড়ার স্টেশনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা। 

ক্ষতিগ্রস্ত সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক হলেন আনোয়ার হোসেনের ছেলে আবু তাহের (গুরা মিয়া)। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, এসএমজির গুলি তাঁর গাড়িতে এসে পড়ে। তাঁর গাড়ির সামনের গ্লাস ফেটে গেলেও তিনি অক্ষত আছেন। 

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ ইউপি সদস্য দিল মোহাম্মদ ভুট্টো বলেন, দুপুর দিকে মিয়ানমার সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। বিকেলে একজন সিএনজি অটোরিকশা চালক আবু তাহেরের গাড়িতে গুলি এসে পড়ে। সামনের গ্লাস ফেটে গেলেও, তাঁর কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। 

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, পূর্বদিক থেকে একটি গুলি, তাঁর দোকানের সামনে দাঁড়ানো একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশার গ্লাসে এসে পড়ে। ভয়ে তিনি দোকানের ভেতরে ছুটে যান। আশপাশের লোকজনও নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যায়। 

৩৩ নম্বর সীমান্ত পিলার এলাকায়ও একই সময়ে গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। সীমান্তের ওপারে তুমব্রু রাইট ক্যাম্পের অবস্থান। যেখানে জান্তা সরকারের ২ শতাধিক সীমান্তরক্ষী ও সেনা সদস্য রয়েছে। যাদের লক্ষ্য করে বিদ্রোহী আরএসওর সশস্ত্র যোদ্ধারা বৃষ্টির মতো গুলি চালায়। জবাবে মিয়ানমার সেনারাও পাল্টা গুলি ছুড়ছে। বেশ কিছু গুলির খোসা ওপর থেকে পড়তে দেখেছেন বলে জানান তুমব্রু পশ্চিমকুলের লোকজন। 

গুলিতে সিএনজি অটোরিকশার গ্লাস ফেটে যায়প্রত্যক্ষদর্শী আবু তাদের, ছিদ্দিক আহমদ ও মরিয়ম বেগম এ প্রতিবেদককে বলেন, তাঁদের গ্রামের মাস্টার হামিদুল হকের বাড়ির অদূরে তুমব্রু রাইট ক্যাম্প। গোলাগুলিতে এপারের তুমব্রু পশ্চিমকূল, তুমব্রুর পাহাড়পাড়া, ক্যাম্প পাড়া ও তুমব্রু বাজারে থাকা মানুষ এবং পাশের খেতখামারে কাজ করা কৃষকেরা ভয়ে বাড়ি-ঘরে নিরাপদ স্থানে চলে যান। বিশেষ করে ঘটনার পর তুমব্রু বাজারসহ রাস্তা-ঘাটে থাকা লোকজনকে দিগ্বিদিক ছুটতে দেখেন তাঁরা। 

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার বেলা ১২টা পর্যন্ত এ সীমান্তে গোলাগুলি বন্ধ ছিল। শনিবার সাড়ে ১২টা থেকে বিকেল ৪টা ১০ মিনিট পর্যন্ত গোলাগুলি চলে বৃষ্টির মতো। ৪টা থেকে সাড়ে ৭টা পর্যন্ত গোলাগুলি বন্ধ থাকার পর ৭টা ৪০ মিনিট থেকে পুনরায় গোলাগুলি শুরু হয়। দিনের পর রাতেও গোলাগুলিতে তুমব্রুসহ আশপাশের ১০ পাড়ার মানুষ ভয়ে আতঙ্কিত হলেও বিজিবি টহলে থাকায় লোকজন অন্য কোথাও যাচ্ছে না। যার যার বাড়ি ঘরে অবস্থান করছে। 

তিনি আরও বলেন, গোলাগুলিতে ছুটে আসা গোলার খোসা দেখে লোকজন ভয় পাচ্ছে, কখন আবার তাদের ওপর পড়ে। তবে সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলে দাবি করেন তিনি। 
 

ঘুমধুম পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক মাহাফুজ ইমতিয়াজ ভুঁইয়া বলেন, দুপুরে তুমব্রু এলাকায় গুলির আওয়াজ শোনা গেছে, তবে সিএনজি অটোরিকশা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিনা নিশ্চিত নয়। সীমান্ত এলাকায় বিজিবি টহল জোরদার করা হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা। 

বিষয়টি নিয়ে এ সীমান্তে দায়িত্বরত ৩৪ বিজিবি অধিনায়কের সঙ্গে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত