চবি ছাত্রীর মৃত্যু, চিকিৎসকের গাফিলতির অভিযোগ

চবি সংবাদদাতা 
প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ১৪: ৪৪
নাঈমা নির্মা। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পরিসংখ্যান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। তাঁর নাম নাঈমা নির্মা।

আজ শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নাঈমা নির্মার মৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল চিকিৎসককে দায়ী করেছেন সহপাঠীরা। সহপাঠীদের অভিযোগ—কর্তব্যরত চিকিৎসকের গাফিলতির কারণে নাঈমার মৃত্যু হয়েছে। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল চিকিৎসকের পদত্যাগ দাবি করেছেন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চিকিৎসক শান্তনু মহাজন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নম্বর গেট এলাকার একটি বাসার দুই তলায় থাকতেন নাঈমা নির্মা। দুপুরের দিকে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে বাসার অন্য দুজনের সহযোগিতায় তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে নেওয়া হয়।

পরে দুপুর ২টার দিকে অক্সিজেন দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে রেফার করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। তবে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে এক নম্বর গেট এলাকায় গেলে সিলিন্ডারের অক্সিজেন শেষ হয়ে যায়। পরে হাটহাজারী থেকে একটি সিলিন্ডার কিনে পুনরায় চমেক হাসপাতালের উদ্দেশ্য যান তাঁরা। সেখানে পৌঁছলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নাঈমাকে মৃত ঘোষণা করেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, নাঈমাকে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়নি। অক্সিজেনের অভাবে নাঈমার মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় তাঁরা কর্তব্যরত চিকিৎসক শান্তনু মহাজনকে দায়ী করছেন। নাঈমার মৃত্যুর ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা মেডিকেল ঘেরাও করেন। সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত তাঁরা সেখানে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় তাঁরা কর্তব্যরত চিকিৎসক শান্তনু মহাজনকে বরখাস্ত করে শাস্তির আওতায় আনা, চিকিৎসা কেন্দ্রের পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ ও চিকিৎসা উপকরণ নিশ্চিত করা, অ্যাম্বুলেন্স বৃদ্ধি, মানসিক চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়াসহ ১৪ দাবি জানান। এসব দাবিতে তাঁরা প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছেন।

নাঈমার সহপাঠী ইমরান বলেন, ‘নাঈমার অ্যাজমার সমস্যা ছিল। শুক্রবার এ সমস্যা গুরুতর হলে তাঁকে চবি মেডিকেলে নেওয়া হয়। তাঁর জরুরি অক্সিজেনের প্রয়োজন ছিল। তবে চবি মেডিকেলে গাফিলতি কারণে অক্সিজেন দিতে দেরি হয়। এমন একজন মুমূর্ষু রোগীকে ঠিকঠাক দেখেননি ওই চিকিৎসক। তাঁরা আমাদের মানুষই মনে করেন না।’

এ বিষয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক শান্তনু মজুমদার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘যে দুজন ওই ছাত্রীকে নিয়ে মেডিকেলে এসেছিল, তাঁরা বাসার মধ্যে অজ্ঞানই পেয়েছিলেন। সিঁড়ি দিয়ে নামার সময়ও কোনো রেসপন্স পাননি বলে জানিয়েছিল। এখানে আনার পর করিডর থেকে চেক করে ভেতরে নিয়ে প্রেশারসহ সবকিছু চেক করে কোনো রেসপন্স পাইনি। তবুও ফারদার ম্যানেজমেন্টের জন্যই মেডিকেলে চেকআপের জন্য পাঠানো হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘ওনার সঙ্গে যারা ছিলেন আমি ইনডাইরেক্টলি তাঁদের বলেছি, ওনার আব্বা-আম্মাকে খবর দিতে। কারণ ইসিজি বা নিশ্চিত না হয়ে সরাসরি কিছু বলা যায় না। আমরা তাঁকে ১০ লিটারের হাই ফ্লো সিলিন্ডারটাই দিয়েছিলাম। এটা ৪৫ থেকে ৫০ মিনিট চলার কথা।’

চবি মেডিকেলের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. আবু তৈয়ব বলেন, ‘প্রশাসন থেকে একটা তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। চিকিৎসকের যদি কোনো গাফিলতি থাকে, অবশ্যই যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, ‘ওই ছাত্রীর বাবা এসেছেন। মেয়েটির আগে থেকে শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা ছিল বলে তাঁর বাবা জানিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ইতিমধ্যে প্রধান চিকিৎসক কর্মকর্তা কথা বলেছেন। এ ঘটনায় চিকিৎসকের অবহেলা রয়েছে কি না তা প্রশাসন দেখবে। যদি সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন জাতিকে উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত