কক্সবাজারে বনের ভেতরে কারাগার নির্মাণ বন্ধে ৩ সচিবকে চিঠি

কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৭: ৩৫
আপডেট : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৭: ৫৫

কক্সবাজারে বনের ভেতর উন্মুক্ত কারাগার ও সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের কাজ বন্ধে তিন সচিবসহ ১৮ জন সরকারি কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়েছে কক্সবাজারের পরিবেশবিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘এনভায়রনমেন্ট পিপল’। সংগঠনটি বলছে, জেলার উখিয়া ও রামুতে পাহাড়-টিলা-ঝরনা-ছড়াসমৃদ্ধ রক্ষিত বনভূমিতে উন্মুক্ত কারাগার ও সড়ক নির্মাণ করা হলে পরিবেশ-প্রতিবেশ হুমকির মুখে পড়বে। 

আজ রোববার ডাকযোগে ভূমি, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিবসহ ১৮টি দপ্তরের কর্মকর্তাদের চিঠি দেওয়া হয়। চিঠিতে রক্ষিত ও সংরক্ষিত বনভূমিতে গৃহীত প্রকল্পের কার্যক্রম বন্ধ করে সব শ্রেণির বনভূমির বন্দোবস্ত বাতিলের দাবি জানানো হয়। 

তিন সচিব ছাড়াও কারা অধিদপ্তরের কারা মহাপরিদর্শক, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, বন সংরক্ষক চট্টগ্রাম, এলজিইডি কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উখিয়া ও রামু, সহকারী কমিশনার (ভূমি) উখিয়া ও রামু, পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের পরিচালক এবং কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তাকে এই চিঠি দেওয়া হয়। 

চিঠিতে বলা হয়, উখিয়া উপজেলার পাগলিরবিল মৌজার আরএস ৬০২ দাগসহ বিভিন্ন দাগের পাহাড়/টিলা শ্রেণির ভূমিকে গেজেট নোটিফিকেশন মূলে ১৯৩৫ সালে রক্ষিত বনভূমি হিসেবে ঘোষণা করে সরকার। এরপর থেকে বন বিভাগ গেজেটভুক্ত বনভূমিতে বনায়ন ও ব্যবস্থাপনা করে আসছে। কিন্তু ভূমি মন্ত্রণালয় ‘উন্মুক্ত কারাগার’ নির্মাণে ১৬০ একর পাহাড় শ্রেণির রক্ষিত বনভূমি কারা অধিদপ্তরের নামে বন্দোবস্ত দেয়। 

কারা কর্তৃপক্ষ সেখানে সীমানা নির্ধারণে কাজ করছে। অথচ এটি বৈলাম, গর্জন, জাম, তেলসুর, চাপালিশ, আকাশমণি, গামারি, আছারগোল, ডুমুর, মোস, কড়ই, বাটনা, ভাদি, বহেড়া, বটসহ বিভিন্ন প্রজাতির ছোট বড় লক্ষাধিক গাছসমৃদ্ধ এক বনাঞ্চল। এ ছাড়া এশিয়ান হাতি, অজগর, হরিণ, বানর, শিয়াল, সাপ, শজারু, শূকরসহ বিভিন্ন প্রজাতির বন্য প্রাণী ও পাখির আবাসস্থল। 

অপরদিকে রামুর সংরক্ষিত বনে শহীদ এটিএম জাফর আলম মাল্টিডিসিপ্লিন একাডেমি থেকে মেরিন ড্রাইভ পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। এটিও একটি সমৃদ্ধ বনাঞ্চল এবং সংরক্ষিত বনভূমি। 

পরিবেশবিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘এনভায়রনমেন্ট পিপল’-এর প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, পাহাড়-টিলা, ছড়া, বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্যে ভরপুর বনভূমিতে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এতে করে আশপাশের বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল ঝুঁকির মধ্যে পড়বে এবং প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্র বিপন্ন হবে। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত