Ajker Patrika

সমুদ্রে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা: প্রণোদনার সুবিধাবঞ্চিত গভীর সমুদ্রে যাওয়া জেলেরা

হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ জুন ২০২৩, ১৩: ৫৪
সমুদ্রে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা: প্রণোদনার সুবিধাবঞ্চিত গভীর সমুদ্রে যাওয়া জেলেরা

মৎস্য প্রজনন বৃদ্ধির লক্ষ্যে গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারের ওপর ৬৫ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা ২৩ জুলাই পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। এই সময়ে জেলেদের প্রণোদনা হিসেবে মৎস্য অধিদপ্তর থেকে প্রতিটি জেলে পরিবারকে ৮৬ কেজি করে চাল দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। সেই মোতাবেক প্রথম কিস্তির ৫৬ কেজি চাল বিতরণও করা হয়েছে। কিন্তু নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় গভীর সমুদ্রে যাওয়া অধিকাংশ জেলে এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, হাতিয়ায় নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ২০ হাজার ৮০০। এর মধ্যে কার্ডধারী জেলের সংখ্যা ১২ হাজার ৩৭০। এ বছর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞায় প্রথম কিস্তিতে এই উপজেলায় ২৭২ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। যা ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ৪ হাজার ৮৭৩ জেলে পরিবারের মাঝে ৫৬ কেজি করে বিতরণ করা হয়। দ্বিতীয় কিস্তিতে এসব জেলে আরও ৩০ কেজি করে চাল পাবেন। 

বুড়িরচর ইউনিয়ন জেলে সমবায় সমিতির সভাপতি জবিয়ল হকের দাবি, সরকারি হিসাবে হাতিয়ায় নিবন্ধিত জেলে ২০ হাজার ৮০০। এর মধ্যে সরকারি চাল পেয়েছেন ৪ হাজার ৮৭৩ জন। অন্য ১৬ হাজার জেলে কিছুই পাননি। তাঁদেরকে বেকার থেকে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন পার করতে হচ্ছে। 

জবিয়ল হক জানান, সরকারি হিসাবের বাইরে অনেক জেলে রয়েছেন যাঁদের নিবন্ধন হয়নি। নিবন্ধন না থাকায় তাঁরা সরকারি সকল সুযোগ-সুবিধা থেকে বরাবরই বঞ্চিত হচ্ছেন। 

আবুল বাসার বয়স (৫৫)। ৫ সন্তানের বাবা ওই ব্যক্তি পেশায় জেলে। গভীর সমুদ্রে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। দীর্ঘ ৩৫ বছর এই পেশায় থাকলেও জেলে হিসেবে তাঁর নাম নিবন্ধন হয়নি। নিবন্ধন না থাকায় সরকারি সকল সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত তিনি। ৬৫ দিন সমুদ্রে মাছ শিকার বন্ধ থাকায় অনেকটা অলস সময় পার করতে হচ্ছে তাঁকে। সংসার চলছে অর্ধাহারে, টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে। 

মাঝি আবুল বাসার আজকের পত্রিকাকে জানান, হাতিয়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে তাঁর বাড়ি। স্ত্রী, ৪ মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে তাঁর ৭ সদস্যের সংসার। দুই মেয়ে বিয়ে দিলেও ছোট দুজন পড়ালেখা করে স্থানীয় বঙ্গবন্ধু পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেণিতে। সমুদ্রে মাছ শিকার বন্ধ থাকায় অনেকটাই বেকার হয়ে পড়েছেন তিনি। আর এতে সংসার চালাতে অনেক কষ্ট হচ্ছে তাঁর। মাঝেমধ্যে ট্রলারের মালিক থেকে অগ্রিম কিছু টাকা নিয়ে সংসার চালাচ্ছেন। 

বাসার মাঝি হাতিয়ার কাজির বাজারের নুর ইসলাম মেম্বারের মালিকানা এমভি নুর ইসলাম-২ মাছধরা ট্রলারের মাঝি। তাঁর সঙ্গে একই ট্রলারে হাতিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলের আরও ১৮ জন মাঝিমাল্লা কাজ করেন। তাঁদের কেউ জেলে হিসেবে নিবন্ধিত নন। সবার অবস্থা অনেকটা একই। 

বাসার মাঝির মতো গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারে যাওয়া অনেক মাঝিমাল্লার অবস্থাই প্রায় এক। স্থানীয় সূর্যমুখী বাজারে একটি চায়ের দোকানে আজকের পত্রিকার এ প্রতিনিধির কথা হয় আলাউদ্দিন নামে আরেক মাঝির সঙ্গে। তিনিও একই মালিকের এমভি নুর ইসলাম-১ নামে একটি ট্রলারের মাঝি। আলাউদ্দিনের দাবি, তাঁর নামে নিবন্ধন আছে অথচ সরকারি কোনো সুবিধা তিনি পাননি। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারে যাওয়া অনেক মাঝিমাল্লা বলেন, ‘আমরা ১২ মাস সমুদ্রে থাকি। তীরে আমাদের বেশি দিন থাকা পড়ে না। তাতে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সাথে ভালো সম্পর্কও হয় না। এই সুযোগে তীরে থাকা জেলেরা সব সুযোগ-সুবিধা নিয়ে নেন। এ ছাড়া ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুধু গভীর সমুদ্রে যাওয়া জেলেদের জন্য। কিন্তু যাঁরা নদীতে মাছ শিকার করার সুযোগ পান, তাঁরা আবার ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার চালও পান।’ 

হাতিয়া উপজেলা ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নবির উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে জানান, তাঁদের সমিতির অধীনে হাতিয়ায় ২৫৭টি বড় মাছ ধরা ট্রলার রয়েছে। এই ট্রলারগুলো ১২ মাস গভীর সমুদ্রে গিয়ে মাছ শিকার করে। ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞায় সব ট্রলার তীরে অবস্থান করছে। প্রতিটি ট্রলারে কম-বেশি ২০ জন করে মাঝিমাল্লা রয়েছেন। এতে বেকার সময় পার করছেন এসব ট্রলারের প্রায় ৫ হাজার জেলে। 

নবির উদ্দিন অভিযোগ করে জানান, এখন ৬৫ দিনের জন্য সমুদ্রে মাছ ধরা বন্ধ রয়েছে। সরকারিভাবে দেওয়া সুবিধাগুলো গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা জেলেদের পাওয়ার কথা। কিন্তু খোঁজ নিয়ে দেখা যাবে, ২৫৭টি ট্রলারের মাঝিমাল্লাদের মধ্যে পাঁচজনও পাওয়া যাবে না, যাঁরা সরকারি সুবিধা পেয়েছেন। 

এ ব্যাপারে একাধিকবার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মৎস্য কর্মকর্তাকে সরাসরি বলেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি। 

এ বিষয়ে হাতিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত মানস মণ্ডলের সঙ্গে কথা হলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিবন্ধন নেই, জেলে কার্ড নেই, এমন লোকদের আমরা সরকারি কোনো সুবিধা দিতে পারি না।’ 

এক প্রশ্নের জবাবে মানস কুমার বলেন, ‘এখন যাঁরা সুবিধা পাচ্ছেন তাঁরাও জেলে। কে গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারে যায়, কে যায় না তা দেখার দায়িত্ব ইউনিয়ন পরিষদের। তবে হাতিয়ায় যে পরিমাণ জেলে রয়েছেন, তাতে সরকারিভাবে দেওয়া বরাদ্দ অনেকটা অপ্রতুল।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপির শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাকে মাথায় গুলি

বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা: লুটের টাকায় টিভি-ফ্রিজ কিনেছিলেন গ্রেপ্তার নাইম

তারা মধ্যযুগীয় কায়দায় পুড়িয়ে মারতে চেয়েছে: নূরুল কবীর

মনোনয়নপত্র কিনে ভুল করেছি, জমা দেব না: কুমিল্লার সাবেক মেয়র সাক্কু

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘ছাত্রদল আপনার মতো আম্মারকে ৩০ মিনিটে বের করে দিতে সক্ষম’, ভিডিও ভাইরাল

রাবি প্রতিনিধি 
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের স্বাগত মিছিল। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের স্বাগত মিছিল। ছবি: আজকের পত্রিকা

ছাত্রদল আপনার মতো ‘ফুটেজখোর’ সালাহউদ্দিন আম্মারকে মাত্র ৩০ মিনিটের ব্যবধানে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে দিতে সক্ষম বলে মন্তব্য করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি শাকিলুর রহমান সোহাগ।

শাকিলুর রহমান আরও বলেন, কয়েক দিন ধরে রাকসুর নামধারী কিছু নেতা বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছেন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল রোববার (২১ ডিসেম্বর) বিভিন্ন ডিনের কার্যালয়, এমনকি উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও প্রক্টরের দপ্তরে তালা ঝুলিয়ে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থির পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে স্বাগতমিছিল শেষে অনুষ্ঠিত সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।

এদিকে রাকসু জিএস সালাহউদ্দিন আম্মারের উদ্দেশে ছাত্রদল নেতার এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যা ৬টার দিকে এই বক্তব্যের প্রতিবাদে সালাহউদ্দিন আম্মার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট দেন।

সমাবেশে ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, ২৫ ডিসেম্বরের পর ক্যাম্পাসে কোনো শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে প্রবেশ করবেন না, সবার সমান নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। এরপর যারা মব সৃষ্টি করে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করবে, তাদের শক্ত হাতে প্রতিহত করা হবে।

সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, বাংলার বাতাসে যে ষড়যন্ত্রের গন্ধ ছিল, তা উপেক্ষা করে বাংলার গণমানুষের শক্তির ওপর ভর করে অনেক বছর পর তারেক রহমান দেশে ফিরছেন। দেশের মানুষের মঙ্গল, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার লক্ষ্যেই তাঁর এই প্রত্যাবর্তন।

সুলতান আহমেদ আরও বলেন, তারেক রহমানের দেশে ফেরা মানেই অপসংস্কৃতি ও মব কালচারের অবসান। এটি অগণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েমের স্বপ্নকারীদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের বিজয় এবং দেশে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সূচনা। এ ছাড়া ২৫ ডিসেম্বরের পর যারা মব সৃষ্টি করবে, তাদের ধরে হাত-পা বেঁধে প্রশাসনের কাছে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুল মিঠু বলেন, দেশনায়ক তারেক রহমান ষড়যন্ত্রের আঘাতে পঙ্গুত্ববরণ করে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যেতে বাধ্য হন। কিন্তু ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার পরিকল্পিতভাবে তাঁকে দেশে ফিরতে দেয়নি। চাইলে তিনি নীরবে প্রবাসে জীবন কাটাতে পারতেন, কিন্তু একটি ছোট কেবিনে বসে নিরলসভাবে তিনি সারা দেশে জাতীয়তাবাদী চেতনার জাগরণ ঘটিয়েছেন। এই ধারাবাহিক আন্দোলনের ফলেই ৫ আগস্টের বিপ্লব সম্ভব হয়েছে।

এর আগে মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ছাত্রদলের নিজস্ব স্ট্যান্ডে এসে মিলিত হয়। এ সময় অন্যদের মাঝে শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সরদার জহুরুলসহ বিভিন্ন পর্যায়ের শতাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপির শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাকে মাথায় গুলি

বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা: লুটের টাকায় টিভি-ফ্রিজ কিনেছিলেন গ্রেপ্তার নাইম

তারা মধ্যযুগীয় কায়দায় পুড়িয়ে মারতে চেয়েছে: নূরুল কবীর

মনোনয়নপত্র কিনে ভুল করেছি, জমা দেব না: কুমিল্লার সাবেক মেয়র সাক্কু

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নেত্রকোনায় অটোস্ট্যান্ডে যাত্রী ওঠানামা নিয়ে সংঘর্ষে যুবক নিহত

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
জিহাদুল ইসলাম । ছবি: আজকের পত্রিকা
জিহাদুল ইসলাম । ছবি: আজকের পত্রিকা

নেত্রকোনার পূর্বধলায় অটোস্ট্যান্ডে যাত্রী ওঠানামাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জিহাদুল ইসলাম (৩২) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন।

আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বেলা ৩টার দিকে পূর্বধলা উপজেলায় চৌরাস্তা মোড়ে ইলাসপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজল কুমার সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নিহত জিহাদুল ইসলাম পূর্বধলার সদর ইউনিয়নের ইলাসপুর গ্রামের আব্দুল হাইয়ের ছেলে। তিনি পেশায় ট্রাকচালক। তাঁর দুটি সন্তান রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার চৌরাস্তা অটোস্ট্যান্ডে যাত্রী ওঠানামা নিয়ে দুই অটোচালকের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। জিহাদুল বিষয়টি সমাধান করতে গেলে অটোচালক নিজাম উদ্দিনের সঙ্গে তাঁর ঝগড়া ও হাতাহাতি হয়। স্থানীয় লোকজন বিবাদ থামিয়ে উভয় পক্ষকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।

কিছুক্ষণ পর অটোচালক নিজাম উদ্দিন দেশীয় অস্ত্রসহ তাঁর লোকজন নিয়ে এসে জিহাদুলের ওপর হামলা করেন। এ সময় জিহাদুলের পক্ষের লোকজনও তাঁদের প্রতিহত করেন। সংঘর্ষের একপর্যায়ে নিজাম উদ্দিন শাবল দিয়ে জিহাদুলকে আঘাত করে গুরুতর জখম করেন।

গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা জিহাদুলকে উদ্ধার করে পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক সোহেল রানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জিহাদুলকে মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজল কুমার সরকার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। তিনি বলেন, অটোরিকশায় যাত্রী ওঠানামা ও ভাড়াকে কেন্দ্র করে অটোচালক নিজাম উদ্দিন ও জিহাদুলের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডার জেরে এ সংঘর্ষ হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে তাঁদের মধ্যে আগে থেকেই জমি-সংক্রান্ত ঝামেলা রয়েছে। জিহাদুলের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হচ্ছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দিদারুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পাশাপাশি সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। নিহত ব্যক্তির সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া চলমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপির শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাকে মাথায় গুলি

বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা: লুটের টাকায় টিভি-ফ্রিজ কিনেছিলেন গ্রেপ্তার নাইম

তারা মধ্যযুগীয় কায়দায় পুড়িয়ে মারতে চেয়েছে: নূরুল কবীর

মনোনয়নপত্র কিনে ভুল করেছি, জমা দেব না: কুমিল্লার সাবেক মেয়র সাক্কু

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্যারোলে মুক্তি পেয়ে বাবার শেষকৃত্যে অংশ নিলেন আওয়ামী লীগ নেতা প্রদ্যুৎ কুমার

দুর্গাপুর (রাজশাহী) প্রতিনিধি  
প্যারোলে মুক্তি পেয়ে বাবার শেষকৃত্যে অংশ নেন আওয়ামী লীগ নেতা প্রদ্যুৎ কুমার সরকার। ছবি: আজকের পত্রিকা
প্যারোলে মুক্তি পেয়ে বাবার শেষকৃত্যে অংশ নেন আওয়ামী লীগ নেতা প্রদ্যুৎ কুমার সরকার। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীর দুর্গাপুরে প্যারোলে মুক্তি পেয়ে বাবার শেষকৃত্যে অংশ নিয়েছেন প্রদ্যুৎ কুমার সরকার নামের কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের এক নেতা। আজ সোমবার দুপুরে কারাগার থেকে প্যারোলে মুক্তি পেয়ে তিনি উপজেলার বেলঘরিয়া গ্রামে বাবার শেষকৃত্যে অংশ নেন।

প্রদ্যুৎ কুমার সরকার রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক। তাঁর বাড়ি রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার বেলঘরিয়া গ্রামে।

গতকাল রোববার রাতে বার্ধক্যজনিত কারণে প্রদ্যুৎ কুমারের বাবা পল্লিচিকিৎসক গোপাল চন্দ্র সরকার মারা যান। বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আজ প্যারোলে মুক্তি পান প্রদ্যুৎ কুমার। বেলা প্রায় ২টা ৩০ মিনিটে কারাগার থেকে মুক্তি নিয়ে বেলা ৩টার দিকে তিনি নিজ গ্রামে আসেন। পরে পুলিশি প্রহরায় বাড়ির পাশে বাবার দাহকর্মে অংশ নেন তিনি।

প্রদ্যুৎ কুমারের ছোট ভাই সুকেশ কুমার জানান, বাবার মৃত্যুর পর প্যারোলে মুক্তির জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর লিখিত আবেদন করলে বেলা

১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা প্যারোলে মুক্তি পান তাঁর ভাই।

জানা গেছে, এ বছরের ২ সেপ্টেম্বর নগরীর ভাড়া বাসা থেকে প্রদ্যুৎ কুমারকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে রাজশাহী নগরীর শাহমখদুম থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করা হয়। বর্তমানে তিনি রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী রয়েছেন।

দুর্গাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা থানা থেকে অংশ নিয়েছিলাম। বিস্তারিত তথ্য জেলা পুলিশের হাতে ছিল। তারাই সব বলতে পারবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপির শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাকে মাথায় গুলি

বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা: লুটের টাকায় টিভি-ফ্রিজ কিনেছিলেন গ্রেপ্তার নাইম

তারা মধ্যযুগীয় কায়দায় পুড়িয়ে মারতে চেয়েছে: নূরুল কবীর

মনোনয়নপত্র কিনে ভুল করেছি, জমা দেব না: কুমিল্লার সাবেক মেয়র সাক্কু

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করায় স্ত্রীর কারাদণ্ড

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৪৩
মানিকগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। ছবি: সংগৃহীত
মানিকগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। ছবি: সংগৃহীত

স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার অভিযোগে বাদীকে এক দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন মানিকগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। গতকাল রোববার দুপুরে আদালতের বিচারক মামুন হাসান খান এই রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত নারী হলেন শারমিন আক্তার। বাবার বাড়ি সাটুরিয়া উপজেলার তেবাড়িয়া গ্রামে। পার্শ্ববর্তী জেলা টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার মানরা গ্রামের শহীদ হোসেনের সাবেক স্ত্রী।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ নভেম্বর শারমিন আক্তার ও শহীদ হোসেনের তালাক সম্পন্ন হয়। কাবিনের অর্থ ও এক সন্তানের ভরণপোষণ বাবদ শারমিনকে ১৪ লাখ টাকা দেন শহীদ হোসেন। এর দুই দিন পর (১৯ নভেম্বর) তালাকের বিষয়টি গোপন করে সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক দাবির অভিযোগে মামলা করেন শারমিন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত আসামি শহীদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন।

গতকাল রোববার দুপুরে আসামি শহীদ ও বাদী শারমিন আদালতে হাজির হন। এ সময় দুই পক্ষের আইনজীবীদের শুনানি শেষে মামলাটি মিথ্যা হিসেবে প্রমাণিত হয়। এরপর মামলা থেকে আসামিকে অব্যাহতি দেন। পাশাপাশি মিথ্যা মামলা করার দায়ে শারমিনকে এক দিনের কারাদণ্ড দেন বিচারক মামুন হাসান খান।

খালাসপ্রাপ্ত শহীদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, দাম্পত্যকলহের কারণে সংসার করা সম্ভব হয়নি। পরে স্ত্রীর সম্মতিতে তাঁদের মধ্যে তালাক হয়ে যায় এবং আর্থিক দেনা-পাওনা পরিশোধ করা হয়। এরপরও তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়।

আদালতে দেওয়া বক্তব্যে বাদী শারমিন আক্তার দাবি করেন, তিনি কাবিনের টাকা পেয়েছেন। তবে আগে চাকরি বাবদ শহীদ তাঁর কাছ থেকে ১২ লাখ টাকা নিয়েছিলেন। এ কারণে তিনি মামলা করেছেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আজিজুল হক সাংবাদিকদের বলেন, সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করায় আদালতের বিচারক ওই নারীকে এক দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন। আদালতের নির্দেশে আসামি শারমিনকে কারাগারে পাঠানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপির শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাকে মাথায় গুলি

বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা: লুটের টাকায় টিভি-ফ্রিজ কিনেছিলেন গ্রেপ্তার নাইম

তারা মধ্যযুগীয় কায়দায় পুড়িয়ে মারতে চেয়েছে: নূরুল কবীর

মনোনয়নপত্র কিনে ভুল করেছি, জমা দেব না: কুমিল্লার সাবেক মেয়র সাক্কু

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত