Ajker Patrika

লক্ষ্মীপুরে ইটভাটার মালিকের মারধরে শ্রমিকের মৃত্যুর অভিযোগ, আটক ২

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
লক্ষ্মীপুরে ইটভাটার মালিকের মারধরে শ্রমিকের মৃত্যুর অভিযোগ, আটক ২

লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলায় ইটভাটার মালিকের হামলায় আনোয়ার হোসেন (২২) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের স্বজনেরা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

এ ঘটনায় ওই ইটভাটার মালিক খলিল মাঝি ও তাঁর ভাই খবির মাঝিকে আটক করেছে পুলিশ। তাঁরা একই এলাকার মো. সাদেকের ছেলে। দুপুরে উপজেলার চরআলগীর চরহাসান থেকে তাঁদের দুজনকে আটক করা হয়। নিহত ইটভাটার শ্রমিক আনোয়ার হোসেন চরহাসান হোসাইন এলাকার আবদুস শহিদের ছেলে।পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, আনোয়ার হোসেন ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করতেন। খাগড়াছড়ির দীঘিনালার কে বি ব্রিকস ফিল্ডে খলিল মাঝির ভাই খবির মাঝির সঙ্গে চুক্তি ভিত্তিক কাজ করতেন আনোয়ার। চুক্তি অনুযায়ী ছয় মাস কাজ করার কথা থাকলেও আনোয়ার ৫ মাস কাজ করেন। এরপর তিনি বাড়িতে চলে আসেন। মাস খানিক আগে আবারো জোর করে আনোয়ারকে খাগড়াছড়ি দীঘিনালা কেবি ব্রিকস ফিল্ডে পাঠায়। গত ১ মে আনোয়ার হোসেন আবারো বাড়িতে আসেন। পরের দিন খবির মাঝির ভাই খলিল মাঝির চরআলগীর নিজস্ব মালিকানাধীন ইটভাটার অফিসে ডেকে নেন। পরে আঁটকে রেখে হাত-পা বেঁধে বেধড়ক মারধর করে রক্তাক্ত করেন।

এ ঘটনার খবর শুনে স্বজনেরা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে গেলে ইটভাটা মালিকের ভয়ে কোনো হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে পারেনি আনোয়ার হোসেন। একপর্যায়ে বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি। গত মঙ্গলবার রাতে তাঁর অবস্থার অবনতি হওয়ায় রামগতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়া কর্তব্যরত ডাক্তার তাঁকে ঢাকায় পাঠান।

কিন্তু পারিবারিক অর্থনৈতিক খারাপ থাকায় আনোয়ার হোসেনকে হাসপাতালে ভর্তি না করে বাড়িতে নিয়ে আসেন স্বজনেরা। এরপর গতকাল বুধবার রাতেই মারা যান তিনি। পরে গোপনে চরআলগী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুর নেতৃত্বে বিষয়টি ধামা-চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশ বিষয়টি জানার পর দুপুরে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

নিহতের বাবা আবদুস সহিদ জানান, ইটভাটায় কাজ না করায় তাঁর ছেলেকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার চান তিনি।

এদিকে চরআলগী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনু ধামা-চাপা দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আনোয়ার হোসেনকে খবির মাঝি যে ইটভাটায় কাজ করতেন। সেখানে চড়-থাপ্পড় মারতে পারেন। কিন্তু খলিল মাঝির ইটভাটায় আটকে মারা হয়নি। আনোয়ার দীর্ঘদিন ধরে জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন।

এ বিষয়ে রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন মৃত্যুর ঘটনা নিশ্চিত করে বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় ইটভাটার মালিক ও তাঁর ভাইকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত