সুবর্ণচরে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার, পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ স্বজনদের

নোয়াখালী (সুবর্ণচর) প্রতিনিধি 
Thumbnail image
প্রতীকী ছবি

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে আজমলা আক্তার (২৭) নামের এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে চর জব্বর থানা-পুলিশ। গতকাল রোববার রাতে উপজেলায় চর জুবিলী ইউনিয়নের উত্তর কচ্ছপিয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। আজমলা আক্তারকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ স্বজনদের।

চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন মিয়া লাশ উদ্ধারের বিষয় আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আজ সোমবার সকালে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর থেকে আজমলার ৬ বছরের ছেলে সৈকত ও ১০ বছরের মেয়ে সুবর্ণাকে নিয়ে স্বামী সাদ্দাম হোসেন ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছেন। তবে সন্ধ্যার দিকে পুলিশ তার দুই সন্তানকে উদ্ধার করেছে।

নিহত আজমলার ভাই সবুজের দাবি, পারিবারিক কলহের জেরে স্বামী সাদ্দাম আজমলাকে তাঁর দুই সন্তানের সামনে বেধড়ক মারধর করেন। এতে তাঁর মৃত্যু হয়। স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন ঘটনাটিকে ভিন্ন খাতে নিতে নিহত আজমলার লাশের পাশে ইঁদুর মারার ওষুধ রেখে আত্মহত্যা বলে অপপ্রচার করেন।

পুলিশ ও স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, ২০১৩ সালে সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে আজমলার বিয়ে হয়। আজমলার মা-বাবা মারা গেছেন। বিয়ের পর তাঁদের সংসারে দুটি সন্তানের জন্ম হয়। যাদের একজনের বয়স ১০ বছর। আর ছোটজনের বয়স ৬ বছর। গতকাল বিকেলে পারিবারিক কলহের জেরে আজমলাকে পেটান সাদ্দাম। একপর্যায়ে আজমলার অবস্থা খারাপ দেখে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে নেওয়ার পর জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক জানান হাসপাতালে নেওয়ার আগেই আজমলা মারা গেছেন। হাসপাতাল মৃত ঘোষণার পর আজমলাকে বাড়িতে নিয়ে যান সাদ্দাম হোসেন ও তাঁর লোকজন। পরে তিনি আজমলার এক আত্মীয়কে ফোন করে তাঁর অসুস্থতার কথা জানান।

আজমলার চাচা হেদায়েত উল্যাহ বলেন, আজমলাকে পিটিয়ে হত্যার পর স্বামী সাদ্দাম হোসেন আত্মহত্যা সাজানোর জন্য লাশের পাশে ইঁদুর মারা বিষের প্যাকেট রেখে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় আজমলার দুই সন্তানকেও নিয়ে যান।

এদিকে, সোমবার সন্ধ্যার দিকে আজমলার মেয়ে সুবর্ণা ও তার ভাই সৈকতকে উদ্ধার করার পর তারাই পুলিশের কাছে পুরো ঘটনা বর্ণনা করেছে। সুবর্ণা বলেছে, তার মাকে বাবা পিটিয়ে মেরেছেন।

ওসি শাহিন মিয়া বলেন, প্রাথমিক সুরতহাল তৈরির সময় লাশের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। একই সঙ্গে ইঁদুরের বিষও পেয়েছেন তাঁরা। এ ঘটনায় নিহত নারীর পরিবারের কাছ থেকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা নেওয়া হয়েছে। ঘটনার পর থেকে স্বামী পলাতক। আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত