Ajker Patrika

সিত্রাংয়ে লন্ডভন্ড কক্সবাজার সৈকত, দুই শতাধিক গ্রাম প্লাবিত 

কক্সবাজার প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২২, ১৫: ৩৪
সিত্রাংয়ে লন্ডভন্ড কক্সবাজার সৈকত, দুই শতাধিক গ্রাম প্লাবিত 

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকত লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। সৈকততীরের বিভিন্ন অংশে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। জোয়ারের সঙ্গে বর্জ্য এসে সৈকতের বালিয়াড়ি ভরে গেছে। এসব বর্জ্য অপসারণে আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে কাজ করছে জেলা প্রশাসন। 

ভাঙনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শহরের লাবণী, ডায়াবেটিক পয়েন্ট, কলাতলী ও সীগাল পয়েন্ট। এসব পয়েন্টে বালিয়াড়ি একেবারে বিলীন হয়ে সাগরে মিশে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সৈকতের বেশির ভাগ জায়গা। 

কক্সবাজার শহরের টেকপাড়ার বাসিন্দা মকবুল আহমদ বলেন, ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের পর এবারই সৈকত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যেভাবে সৈকতের বালিয়াড়ি বিলীন হয়েছে, এতে পর্যটক বেড়ানোর সুযোগও নেই। 

সৈকতপাড়ের ব্যবসায়ীরা বলেন, এমনিতেই এ বছর সৈকতের বালিয়াড়ি বিলীন হয়েছে। এবার সিত্রাং এসে আরও লন্ডভন্ড করে দিয়েছে। এতে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণ হারাবে বিশ্বের দীর্ঘতম এ সমুদ্রসৈকত। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, লাবণী পয়েন্টের জেলা প্রশাসনের উন্মুক্ত মঞ্চ ও ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যালয়ের সামনে ভাঙন ঠেকাতে বসানো জিও টিউব ব্যাগ ছিঁড়ে সাগরে মিশে গেছে। পাশের রেস্তোরাঁ ও রেস্টহাউসের সামনে বসলিয়াড়ি একেবারে বিলীন হয়ে গেছে। 

এ বিষয়ে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান বলেন, জলোচ্ছ্বাসে সৈকতের বিভিন্ন অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাগর উত্তাল থাকায় পর্যটকদের সৈকতে নামতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। 

দুই শতাধিক গ্রাম প্লাবিত

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকা পাঁচ থেকে সাত ফুট উচ্চতায় প্লাবিত হয়েছে। জেলার কুতুবদিয়া, মহেশখালীর ধলঘাটা, টেকনাফের সেন্টমার্টিন দ্বীপ, উখিয়া ও সদর উপজেলার কিছু অংশ এবং কক্সবাজার পৌরসভার কুতুবদিয়া পাড়ায় জোয়ারের পানি ঢুকেছে। 

জেলা প্রশাসনের প্রাথমিক তথ্যমতে, জেলার ৪৭টি ইউনিয়ন ও চাটি পৌরসভার দুই শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। দুর্গত এলাকার অনেকেই এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। 
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সাধারণ) মো. জাহিদ ইকবাল বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের ক্ষতি এখনো নিরূপণ করা হয়নি। প্রাথমিক হিসেবে জেলার ৪৭টি ইউনিয়ন ও চার পৌরসভায় ৫ হাজার ঘরবাড়ি আংশিক এবং ১৪০০ ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে জেলার ২ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুর্গত এলাকার মানুষের মধ্যে খাদ্য, পানীয় জল, ওষুধ ও অন্যান্য সেবা দেওয়া হচ্ছে। 

এদিকে পেকুয়া, মহেশখালী, কুতুবদিয়া ও টেকনাফসহ বিভিন্ন এলাকায় জোয়ারের তোড়ে সড়ক ও বেড়িবাঁধ ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। 

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী তানজিদ সাইফ আহমেদ বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। 

বাড়ি ফিরছে আশ্রিত মানুষ 

গতকাল সোমবার রাত ৮টা পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ মানুষ বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছিল। এসব মানুষের জন্য এর আগে জেলার ৫৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ৯ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়। আশ্রিত মানুষ গবাদিপশু ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে। তবে মহেশখালী, টেকনাফ ও কুতুবদিয়ার কিছু এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্র এখনো মানুষ আশ্রয়ে রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জাতীয় নির্বাচন: ভোট কমিটির নেতৃত্বে ডিসি–ইউএনওকে না রাখার চিন্তা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিলুপ্তের সিদ্ধান্ত হয়নি, নাহিদের মন্তব্যের জবাবে উমামা

আ.লীগ নেতার গ্রেপ্তার নিয়ে রাজশাহীতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ

মাগুরার শিশুটি এখনো অচেতন, চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান

ঈদে পুলিশের সহযোগী ফোর্স হবে বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মী, পাবে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত