ছেলের নির্যাতন সইতে না পেরে থানায় লিখিত অভিযোগ বৃদ্ধ বাবার

তিতাস (কুমিল্লা) প্রতিনিধি 
প্রকাশ : ২২ অক্টোবর ২০২২, ১৩: ৪৪
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২২, ১৫: ০৮

কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় ছেলের নির্যাতন সইতে না পেরে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন বৃদ্ধ বাবা শহিদউল্লা ক্বারী (৭৫)। আজ শনিবার সকালে উপজেলার ভিটিকান্দি ইউনিয়নের কদমতলী গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, শহিদউল্লা ক্বারির দুই ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে বড় ছেলে নেয়ামত উল্লাহকে (৪৫) ৮-১০ বছর আগে জমি বিক্রি করে প্রবাসে পাঠান তিনি। পরে নেয়ামত উল্লাহ স্ত্রী হ্যাপি আক্তারের (৩৮) পরামর্শে তাঁর ও স্ত্রী রোকেয়া বেগমের (৭০) ভরণ-পোষণ বন্ধ করে দেন এবং কুমিল্লা শহরে জায়গা কিনে বাড়ি করেন। অন্যদিকে, তাঁর তিন মেয়ের বিয়ে হয়ে যাওয়ায় তাঁরা সবাই শ্বশুরবাড়িতে থাকেন। অপর ছোট ছেলে রবিউল (৩৫) চাকরির সুবাদে অন্য জায়গায় থাকেন। তিনি বাবা-মায়ের ভরণ-পোষণের জন্য কিছু টাকা দেন, যা দিয়ে তাঁদের জীবনযাপন ঠিকভাবে চলছে না।

এ বিষয়ে বৃদ্ধ শহিদউল্লাহ বলেন, ‘আমার দুই ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে। আমার বড় ছেলে নেয়ামত উল্লাহ অনেক বছর ধরে আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে কোনো প্রকার ভরণ-পোষণ দেয় না। আমি বিষয়টি গ্রামের সাহেব-সর্দারদের জানালে তাঁরা বিচার-সালিস বসিয়ে রায় প্রদান করেন। রায় অনুযায়ী আমার ও আমার স্ত্রীর ভরণ-পোষণের জন্য প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা করে দেবে বলে জানানো হয়। কিন্তু এর পরও আমাদের টাকা দেয় না।’

শহিদউল্লাহ আরও বলেন, ‘আমি আমার বৃদ্ধ স্ত্রীকে নিয়ে বাঁচার জন্য এক মাস আগে ২৪ শতক জমি বিক্রি করেছি। এতে বড় ছেলে নেয়ামত উল্লাহ ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে ঘর থেকে বের করে দেন। আমি তাঁর ভয়ে বাড়িত যাইতে পারি না। তাই আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’

কদমতলী গ্রামের সর্দার পল্লি চিকিৎসক হ‌ুমায়ূন কবির বলেন, ‘আমরা গ্রামবাসী বসে আলোচনা করে প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা করে দেওয়ার জন্য বলে দিয়েছি। তার পরও নেয়ামত উল্লাহ কথা মানেন না। শুধু তাই নয়, শহিদউল্লাহ ক্বারি তাঁর বৃদ্ধ স্ত্রীকে নিয়ে বাঁচার জন্য ২৪ শতক জমি বিক্রি করছেন। এতে নেয়ামত উল্লাহ তাঁর বৃদ্ধ বাবা-মাকে লাঞ্ছিত করে ঘর থেকে বের করে দিয়েছেন।’

পল্লিচিকিৎসক আরও বলেন, বৃদ্ধর ছোট ছেলে বাবা-মায়ের জন্য পাঁচ হাজার টাকা করে দেন। কিন্তু তা দিয়ে হয় না বিধায় তাঁরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

এ বিষয়ে তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুধীন চন্দ্র দাস বলেন, ছেলের বিরুদ্ধে বাবার অভিযোগ পেয়েছি। উপসহকারী পরিদর্শক (এএসআই) জামানকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এই সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত