গাজীপুরে ৪ দিন পর উৎপাদনে ফিরেছে পোশাক কারখানা

গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৪ জুলাই ২০২৪, ১৭: ৫৩

চার দিন বন্ধ থাকার পর কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আজ বুধবার সকাল থেকে গাজীপুরের পোশাক কারখানাগুলোতে উৎপাদন শুরু হয়েছে। গত শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির পর শনিবার থেকে কারখানাগুলো বন্ধ ছিল। চার দিনের বন্ধে ক্ষতির মুখে পড়লেও উৎপাদন শুরু হওয়ায় মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

আজ সকাল থেকে গাজীপুর মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের যৌথভাবে টহল দিতে দেখা গেছে। দুপুর পর্যন্ত কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

কারখানা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চার দিন পর উৎপাদন শুরু হলেও ইন্টারনেট পুরোপুরি চালু না হওয়ায় সঠিক সময়ে শিপমেন্ট সম্পন্ন করা বা বায়াররা শিপমেন্ট বাতিল করবে কিনা এসব নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েছে পোশাক রপ্তানিকারকদের। এ কয় দিন বায়ারদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারার কারণে বেকায়দার পড়তে হচ্ছে তাঁদের। বায়ারদের পুরোনো অর্ডার অনুযায়ী পণ্য উৎপাদন করতেও বেগ পেতে হবে। তিন শিফটে কাজ শুরু হলেও সঠিক সময়ে পণ্য উৎপাদনের টার্গেট পূরণ করা সম্ভব হবে কিনা এ বিষয়ে নিশ্চিত নন কারখানা মালিকেরা।

গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী এলাকার তুসুকা গার্মেন্টস লিমিটেডের এজিএম মাসুম হোসাইন বলেন, ‘পাঁচ দিন বন্ধ থাকার পর আজ আমাদের কারখানা খুলেছে। সব ইউনিট চালু আছে। শ্রমিকেরা শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করছে। কারখানা বন্ধ থাকায় তাদের মধ্যে যে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা ছিল, তা এখন আর নেই।’

মাসুম হোসাইন আরও বলেন, ‘আমাদের কারখানায় দৈনিক ১ লাখ পিস প্যান্ট উৎপাদন হয়। এ পাঁচ দিনে সেই উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। এ ছাড়া সময়মতো আমরা শিপমেন্ট করতে পারিনি। ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় বায়ারদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না। অনেক সময় বায়াররা সময়মতো শিপমেন্ট না হলে পণ্য নিতে চায় না। আবার কখনো মূল্য কম দেয়। সময় বাঁচাতে বিমানে পাঠাতে হয়। এসব কারণে আমাদের ক্ষতির পরিমাণ কয়েক গুণ বেড়ে যায়।’

গাজীপুর মহানগরীর তিন সড়ক এলাকার স্প্যারো অ্যাপারেলস লিমিটেডের প্রধান উৎপাদন কর্মকর্তা (সিওও) শরিফুল রেজা বলেন, ‘আমাদের কারখানায় দৈনিক ৩৫ হাজার পিস পণ্য উৎপাদন হয়। গত পাঁচ দিন উৎপাদন বন্ধ থাকায় প্রায় ৮ লাখ ডলার ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া সময়মতো শিপমেন্ট করতে না পারায় আমাদের প্রায় আড়াই থেকে ৩ লাখ পিস পণ্য আটকা পড়েছে। ইন্টারনেট না থাকায় বায়ারদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। ফলে সময়মতো বায়ারদের কাছে পণ্য পৌঁছানোর জন্য এখন আমরা এগুলো বিমানে পাঠানোর চেষ্টা করছি।’

গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকার চন্দ্রার মাহমুদ ডেনিমস কারখানার অ্যাডমিন ম্যানেজার আবু তালেব বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমাদের অনেক শিপমেন্ট আটকা পড়েছে। তা ছাড়া বায়ারদের যেসব অর্ডার ছিল, সেসব পণ্য যথাসময়ে সাপ্লাই দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমরা তিন শিফটেই কাজ করছি। তবে বায়ার কোনো শিপমেন্ট বাতিল করলে আমরা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হব।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর শিল্প পুলিশের সুপার সারোয়ার আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, আজ সকাল থেকে সকল পোশাক কারখানায় শ্রমিকেরা শান্তিপূর্ণভাবে কাজে যোগ দিয়েছেন। কারখানাগুলোর নিরাপত্তায় শিল্প পুলিশের সদস্যরা কাজ করছেন। গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর এলাকাগুলোতে টহল ও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া গাজীপুর মহানগর পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি ও সেনা সদস্যরা টহল দিচ্ছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত