ভৈরবে শ্বশুরবাড়িতে যুবককে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে থানায় মামলা

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮: ১৯
Thumbnail image
প্রতীকী ছবি

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ইমন মিয়া (২৭) নামের এক যুবককে শ্বশুরবাড়িতে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে থানায় মামলা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে ইমনের বাবা হারুন মিয়া শাশুড়িকে প্রধান আসামি করে ছয়জনের বিরুদ্ধে ভৈরব থানায় মামলাটি করেন। ইমন ভৈরব পৌর শহরের কমলপুর সিকদার বাড়ি এলাকার হারুন মিয়ার ছেলে।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন ইমনের স্ত্রী আরজুদা আক্তার বীথিকা, শ্যালক তন্ময়, প্রতিবেশী সাজন, রাজন ও বিজন।

শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দাবি, ইমন স্ত্রীকে নিতে এলে স্ত্রী আরজুদা ইমনের সঙ্গে না ফেরায় তিনি নিজের শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২ জানুয়ারি ইমনের শ্বশুরবাড়ির লোকজন ইমনকে মারধর করেন। ৩ জানুয়ারি স্ত্রীকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে গেলে আসামিরা ইমনকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করেন। এ সময় পরিবারের সদস্যরা উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি দেখে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ইমনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শনিবার দুপুরে মৃত্যুবরণ করেন।

সিকদার বাড়ির ইমনের সঙ্গে মরম সরকার বাড়ির আরজুদা আক্তার বীথিকার সাড়ে চার বছর আগে বিয়ে হয়। এই দম্পতির আড়াই বছর বয়সী কন্যাসন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে তাঁদের দাম্পত্য জীবনে কলহ লেগে থাকত। স্বামীর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে আরজুদা আক্তার বীথিকা বাবার বাড়ি চলে যান। গত ৩১ ডিসেম্বর নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। আরজুদা আক্তার বীথিকার এটি দ্বিতীয় বিয়ে। এ ঘটনার পর ৩ জানুয়ারি ইমনের মা পুত্রবধূকে আনতে গেলে তিনি যাননি। সন্ধ্যায় ইমন স্ত্রীকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে গেলে আগুনে দগ্ধ হন।

ইমনের বাবা হারুন মিয়া বলেন, ‘আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই। আগেও একটি মোবাইল ফোন হারানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার ছেলের শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছিল।’

এ বিষয়ে স্ত্রী আরজুদা আক্তার বীথিকা বলেন, ‘ইমন শুক্রবার সন্ধ্যায় আমার বাড়িতে আসে। আমি তাকে বলি, তোমার সঙ্গে আমার তালাক হয়ে গেছে। এখন থেকে তোমার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। এ সময় ইমন শরীরে পেট্রল ঢেলে আমাকে হুমকি দেয়। পরক্ষণে নিজের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর পার্শ্ববর্তী লোকজন ও আমি তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করি। এ সময় আমার শরীরও দগ্ধ হয়। আত্মহত্যার চেষ্টা ছিল, এ জন্য তার পরিবারকে খবর দিলে তারা এসে ইমনকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ইমন আগেও ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানী বলেন, অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। ঢাকায় লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত অভিযুক্ত কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। পুলিশ তদন্ত অব্যাহত রেখেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত