Ajker Patrika

লাইসেন্স প্রদান ও চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের স্মারকলিপি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২১ মে ২০২৪, ১৯: ৪৭
লাইসেন্স প্রদান ও চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের স্মারকলিপি

বিআরটিএ কর্তৃক ব্যাটারিচালিত যানবাহন ও চালকদের লাইসেন্স প্রদানের দাবি জানিয়েছে রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়ন। একই সঙ্গে কার্ড-টোকেনের নামে চাঁদাবাজি বন্ধ, র‍্যাকার বিল কমানো এবং রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিকদের মানুষ হিসেবে নাগরিক অধিকার ও সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত বিজয় মিছিল ও সমাবেশে এসব দাবি জানিয়েছেন সংগঠনের নেতারা।

সমাবেশে রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম নাদিম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণায় শ্রমিকদের মাঝে সাময়িক প্রশান্তি এসেছে বটে। কিন্তু এই বিষয়ে শঙ্কামুক্ত হওয়া যাচ্ছে না। দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যাটারিচালিত যানবাহনের প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতির বিকল্প নেই বলে জানান তাঁরা।

গবেষক মাহা মির্জা বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে সৃষ্ট জনদুর্ভোগের দায় থেকে রাষ্ট্র ও নগর কর্মকর্তারা নিজেদের রক্ষা করতে রিকশাচালকসহ গরিব মানুষের ওপর দায় চাপিয়ে দিচ্ছেন। নগরের ৭৫ শতাংশ সড়ক প্রাইভেট কারের দখলে, অথচ যানজটের দায় চাপানো হচ্ছে গরিবের বাহন রিকশার ওপর।

প্রেস ক্লাবের সামনে রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের সমাবেশ। ছবি: আজকের পত্রিকাসংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক লিটন নন্দী বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের ঘোষণার পরেই অবৈধ কার্ড ও টোকেনের নামে চাঁদাবাজ এবং ট্রাফিক ও পুলিশের অসৎ কর্মকর্তারা সক্রিয় হয়ে উঠেছেন।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, রাষ্ট্র গরিবের ওপর জুলুম চাপিয়ে বড়লোকদের ভালো রাখতে ব্যস্ত। আজ শ্রমিকেরা এই আন্দোলনের মাধ্যমে শিখে গেছে, নিজেরা ভালো থাকতে হলে কীভাবে জুলুমকে প্রতিরোধ করে অধিকার আদায় করে নিতে হয়।

সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুছ বলেন, ‘আমরা সরকারের কাছ থেকে বৈধ লাইসেন্স নিয়ে আমাদের জীবিকা রক্ষা করতে চাই। পাশাপাশি সরকারকে রাজস্ব দিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে চাই। সারা পৃথিবী যখন বিদ্যুৎচালিত যানবাহনের দিকে ঝুঁকছে, তখন বাংলাদেশেরও সেই দিকে এগিয়ে যেতে হবে।’

সমাবেশ থেকে বক্তারা গ্রেপ্তার রিকশাশ্রমিকদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। সমাবেশ শেষে জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে সচিবালয় অভিমুখে বিজয় মিছিল করা হয় এবং ব্যাটারিচালিত যানবাহনে বিআরটিএ কর্তৃক লাইসেন্স প্রদান ও চাঁদাবাজি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সড়ক পরিবহন ও যোগাযোগমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি আব্দুল হাকিম মাইজভান্ডারির সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা আবদুল্লাহ্ ক্বাফি রতন, রাগীব আহসান মুন্না, কেন্দ্রীয় সদস্য মোহাম্মদ আলী, হাজারীবাগ থানা কমিটির সভাপতি সুমন মৃধা, মোহাম্মদপুর থানার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জুনায়েদ, লালবাগ থানা কমিটির নেতা দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।

১৫ মে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঢাকার দুই সিটির মেয়রের উপস্থিতিতে এক সভা-পরবর্তী ব্রিফিংয়ে ঢাকা শহরে ব্যাটারিচালিত যানবাহন বন্ধ করার জন্য মৌখিক ঘোষণা দেন। এর পরদিন থেকে যাত্রাবাড়ী-বাড্ডা-হাজারীবাগ-কামরাঙ্গীরচর-লালবাগ-খিলগাঁও-মোহাম্মদপুর-পল্লবীসহ ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় আন্দোলনে নামেন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকেরা। পরবর্তী সময়ে গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী ব্যাটারিচালিত যানবাহন চলাচলের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত