Ajker Patrika

কর ফাঁকির মামলা: হোটেল লো মেরিডিয়ানের মালিক আমিন আহমেদ কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১০ জুলাই ২০২৪, ১৮: ৪৮
কর ফাঁকির মামলা: হোটেল লো মেরিডিয়ানের মালিক আমিন আহমেদ কারাগারে

কর ফাঁকি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় হোটেল লো মেরিডিয়ানের মালিক ও ক্যাপিটেল বনানী ওয়ান লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিন আহমেদকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 

আজ বুধবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আসসামস জগলুল হোসেন তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করেন আমিন আহমেদ। তাঁর পক্ষে অ্যাডভোকেট এহসানুল হক সমাজী জামিন চেয়ে শুনানি করেন। অন্যদিকে দুদকের বিশেষ পিপি মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর জামিনের বিরোধিতা করেন। 

উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিনের বিষয়ে আদেশের জন্য বেলা ৩টায় সময় নির্ধারণ করেন। ৩টার পর আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

দুদকের বিশেষ পিপি মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর আসামির জামিন নামঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, ২০২৩ সালের ৩ অক্টোবর রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট বাজারের ৩০.২৫ কাঠা জমি ক্রয় দেখিয়ে প্রায় ৯৫ কোটি টাকা গোপন করার চেষ্টা এবং সাড়ে ৮ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু এবং হোটেল লো মেরিডিয়ানের মালিক আমিন আহমেদসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক। দুদকের উপপরিচালক নুরুল হুদা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। 

মামলার আসামিরা হলেন বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু, তাঁর স্ত্রী শিরিন আক্তার, তাঁর ভাই শেখ শাহরিয়ার পান্না, বাচ্চুর ছেলে শেখ রাফা হাই ও শেখ ছাবিদ হাই অনিক এবং হোটেল লো মেরিডিয়ানের মালিক আমিন আহমেদ।

মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামি শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু ২০১২ সালের ৮ জুলাই ক্যান্টনমেন্ট বাজার এলাকার ৬ নম্বর প্লটের ৩০.২৫ কাঠা জমি ১১০ কোটি টাকায় ক্রয়ের জন্য অপর আসামি আমিন আহমেদের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তিপত্র করেন। 

চুক্তি করা জমির মূল্য ১১০ কোটি টাকা এবং চুক্তিপত্র স্বাক্ষরের সময় পরিশোধিত অর্থ ১০ কোটি টাকা। চুক্তিপত্র অনুযায়ী দুটি দলিলে ভূমির দলিল রেজিস্ট্রি করা হয়। যার মধ্যে ২০১২ সালের ১৬ অক্টোবর প্রথম দলিলে ১৮ কাঠা জমির দাম ৯ কোটি টাকা উল্লেখ করা হয়েছ। যেখানে গ্রহীতা শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু, শেখ শাহরিয়ার পান্না ও মিসেস শিরিন আক্তার। 

অন্যদিকে দ্বিতীয় দলিলে ওই একই বছরে ১২.২৫ কাঠার দাম ৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। যেখানে গ্রহীতা হলেন শেখ ছাবিদ হাই অনিক ও শেখ রাফা হাই। অর্থাৎ জমির মোট রেজিস্ট্রেশন মূল্য ধরা হয়েছে ১৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ রেজিস্ট্রেশনে মূল্য ৯৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা কম দেখিয়ে অবৈধ আয় গোপন করার চেষ্টা করেন তিনি। 

এ ছাড়া জমির মূল্য কম দেখিয়ে সরকারের ৮ কোটি ৫২ লাখ ৭৫ হাজার টাকার রাজস্বও ফাঁকি দিয়েছেন। 

মামলা সূত্রে আরও জানা যায়, জমি বিক্রয় ও প্রকৃত মূল্য গোপন করতে আমিন আহমেদ শেখ আব্দুল হাই বাচ্চুকে সহযোগিতা করেছেন। আমিন আহমেদ ১৩৪টি পে-অর্ডারের মাধ্যমে ৭৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা ও নগদে ৩১ কোটি ৫০ লাখ টাকা গ্রহণ করেছেন। 

অপরদিকে তাঁদের আয়কর নথিতে জমির জন্য মূল্য প্রদর্শন করেছেন ২৪ কোটি ৬৪ লাখ ৩৮ হাজার ৪৫৪ টাকা। অর্থাৎ শেখ আব্দুল হাই বাচ্চুর আয়-ব্যয় এবং প্রকৃত সম্পদের মধ্যে কোনো সামঞ্জস্যতা পাওয়া যায়নি। তিনি বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অস্তিত্বহীন ও নামসর্বস্ব বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ভুয়া ঋণ মঞ্জুর করে আত্মসাৎ করা অর্থ হস্তান্তর, রূপান্তর, ছদ্মাবরণের মাধ্যমে গোপন করেছেন। আসামি আমিন আহমেদ বাচ্চুর অবৈধ অর্থের বৈধতা প্রদানে সরাসরি সহায়তা করেছেন।

এই মামলায় ৬ জনের বিরুদ্ধে গত ২৬ মে চার্জশিট দাখিল করে দুদক।

উল্লেখ্য, গত ১০ জুন আমিন আহমেদ হাইকোর্টে আত্মসমর্পণ করে আগাম জামিন চান। হাইকোর্ট ছয় সপ্তাহের মধ্যে বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। এর মধ্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাঁকে গ্রেপ্তার ও হয়রানি করতে পারবে না বলে হাইকোর্টের নির্দেশে বলা হয়। হাইকোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে দুদক লিভ টু আপিল করেন। 

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ গত ৩০ জুন ৭ দিনের মধ্যে আমীন আহমেদকে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। ওই নির্দেশনা অনুযায়ী আজ তিনি আত্মসমর্পণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জাতীয় নির্বাচন: ভোট কমিটির নেতৃত্বে ডিসি–ইউএনওকে না রাখার চিন্তা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিলুপ্তের সিদ্ধান্ত হয়নি, নাহিদের মন্তব্যের জবাবে উমামা

আ.লীগ নেতার গ্রেপ্তার নিয়ে রাজশাহীতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ

মাগুরার শিশুটি এখনো অচেতন, চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান

ঈদে পুলিশের সহযোগী ফোর্স হবে বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মী, পাবে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত