চালু হয়নি ফেরি, হাওরে যাত্রী পারাপারে ভোগান্তি

মো. ফরিদ রায়হান, অষ্টগ্রাম
প্রকাশ : ০৩ ডিসেম্বর ২০২২, ১৬: ৩৫

কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলে নভেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহেই নেমে গেছে বর্ষার পানি। হাওরের তিন উপজেলা অষ্টগ্রাম-ইটনা-মিঠামইনের সড়কে শুরু হয়েছে যোগাযোগ। এদিকে ফেরি চালু না হওয়ায় মিঠামইন-বালিখলা সড়কে চলছে না গাড়ি। নৌকায় নদী পারাপারে বাড়ছে যাত্রী ভোগান্তি। তবে কিশোরগঞ্জ সড়ক ও জনপদ (সওজ) অধিদপ্তরের আশ্বাস, চলতি মাসেই ফেরি চালু হবে। 

শুকনো মৌসুমে জেলার অষ্টগ্রাম, ইটনা ও মিঠামইন উপজেলার কয়েক লাখ মানুষের জেলা শহরে সড়ক পথে যাতায়াতের জন্য মিঠামইন-করিমগঞ্জ ও ইটনা-করিমগঞ্জ সড়কের বিভিন্ন নদীতে পাঁচটি ফেরি চালু করে সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর। ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি এসব ফেরি চালু হয়। 

জেলা সওজ সূত্রে জানা গেছে, মিঠামইন-করিমগঞ্জ সড়কের ঘোড়াউত্রা নদীর মিঠামইন সদরে শান্তিপুর ঘাট ও বাউলাই নদীর করিমগঞ্জ সুতারপাড়া ইউনিয়নের বালিখলা ঘাটে দুইটি ফেরি। ইটনা-করিমগঞ্জ সড়কের ধনু নদীর ইটনা সদর ইউনিয়নের বলদা ঘাট, ধনু নদীর শাখা নদী বড়ইবাড়ি ইউনিয়নে বড়ইবাড়ি ঘাট ও বাউলাই নদীর করিমগঞ্জের চমড়া বন্দরে তিনটিসহ দুই সড়কে শুষ্ক মৌসুমে ৫টি ফেরি চলাচল করে বছরে ছয় মাস। 

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, নদী পাড় হতে গুদারায় (নৌকা ফেরি) অতিরিক্ত যাত্রী হতে বাধ্য হচ্ছেন মানুষ। বিশেষ করে, প্রসূতি, রোগী ও বয়স্ক মানুষ যাতায়াতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। হাওরাঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষ জেলা শহরসহ বিভিন্ন গন্তব্যে এভাবেই প্রতিদিন যাতায়াত করেন। 

বালিখলা ফেরিঘাটের পূর্ব প্রান্তে দেখা গেছে, শ্রমিকেরা বালু, গাছ ও মাটি দিয়ে ফেরিঘাটের সংযোগ সড়ক সংস্কারের কাজ করছে। পাশেই প্রায় ডুবো ডুবো নৌকাটি শতাধিক যাত্রী নিয়ে ভিড়ছে। ইজারাদারের ইচ্ছেমতো অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে চলাচল করে গুদারাগুলো। 

যাত্রীরা জানান, এখানে কথা বলে কোনো লাভ হয় না। মাঝিদের মর্জিমাফিক চলে গুদারা। সময়মতো সরকারি ফেরি চলাচল না-করায়, গুদারায় যাত্রীর চাপ বেড়েছে কয়েক গুন। নারী ও শিশুসহ বাধ্য হয়ে, আতঙ্কের মধ্যেই গুদারা পারাপার হতে হয়। অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে যে কোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। 

ইটনা সদর ইউনিয়নের গণমাধ্যম কর্মী আজাদ হোসেন বাহাদুল বলেন, ‘বিশ দিনের বেশি হলো এখনো ফেরি চালু হয়নি। মানুষ ভেঙে ভেঙে তিন বার যানবাহন পরিবর্তন করে যাতায়াত করছে। দ্রুত ফেরি চালু হলে মানুষের ভোগান্তি লাঘব হতো।’ 

মিঠামইন উপজেলার কেওয়ারজোড় ইউনিয়নের খোকন মিয়া (৩৯) বলেন, ‘হাওরের পানি চলে গেলেও ডুবোসড়কে গাড়ি চলাচল করতে পারছে না, ফেরির অভাবে। ফলে ঝুঁকি নিয়ে অতিরিক্ত যাত্রীবাহী গোদারা (নৌকা) দিয়ে, প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ পারাপার হচ্ছে।’ 

এ নিয়ে জানতে চাইলে কিশোরগঞ্জ সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনির হোসেন বলেন, ‘ফেরিঘাটের সংযোগ সড়কের কাজ চলছে। আশা করি ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে ফেরিগুলো চলাচল শুরু করবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত