অর্থ পাচার মামলা: আওয়ামী লীগ নেতা এনু-রুপনের ৭ বছরের কারাদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২৮ নভেম্বর ২০২৩, ১৫: ৩৯
আপডেট : ২৮ নভেম্বর ২০২৩, ১৫: ৪৮

‘ক্যাসিনো ব্রাদার্স’ নামে খ্যাত ঢাকার গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা সাবেক সহসভাপতি এনামুল হক এনু ও তাঁর ভাই যুগ্ম-সম্পাদক রুপন ভূঁইয়াকে অর্থ পাচারের আরেক মামলায় সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। 

আজ মঙ্গলবার ঢাকার বিশেষ জজ-৮-এর বিচারক মো. বদরুল আলম ভূঞা এ রায় ঘোষণা করেন বলে আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. আমির হোসেন জানান।

আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, কারাদণ্ডের সঙ্গে প্রত্যেককে ৫২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। আগামী ৬০ দিনের মধ্যে জরিমানা পরিশোধ করতে হবে। 

অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার অপর ছয় আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। তারা হলেন- শহীদুল হক, মো. রশিদুল হক, মো. মেরাজুল হক শিপলু, জয় গোপাল সরকার, পাভেল রহমান ও ভুলু চন্দ্র দেব।

২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর গেন্ডারিয়ার দুই ভাই আওয়ামী লীগ নেতা এনামুল হক এনু ও রূপন ভূঁইয়ার আস্তানা থেকে ৫ কোটি টাকা ও আট কেজি স্বর্ণালংকার উদ্ধার করেছিল র‌্যাব। এরপর ২০২০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি তাঁদের বাড়ির ভল্টে পাওয়া যায় সাড়ে ২৬ কোটি টাকা, এক কেজি স্বর্ণ, বিদেশি মুদ্রা ও ৫ কোটি টাকার এফডিআর। মানি লন্ডারিং মামলা তদন্ত করতে গিয়ে সিআইডি তাঁদের ১২১টি ফ্ল্যাটের সন্ধান পায়। দুই ভাইয়ের কর্মচারী কালামের বাসা থেকে  ২ কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়। 

২০২০ সালের ২০ আগস্ট রাজধানীর বংশাল এলাকায় এনু-রুপনের সহযোগী আবুল কালাম আজাদ ও হারুন-অর-রশিদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে নগদ ৫ কোটি ৫ লাখ টাকা, সাড়ে আট কেজি স্বর্ণ ও ছয়টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে র‍্যাব।

এরপর তাঁদের দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে সে সময় অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ১২টি মামলা হয়।
এর মধ্যে ২০২০ সালের ৩১ অগাস্ট বংশাল থানায় সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম স্কোয়াডের পরিদর্শক মো. মেহেদী মাকসুদ একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১১ জনকে আসামি করা হয়। তবে তদন্ত শেষে তিনজনকে অব্যাহতি দিয়ে আটজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়। মামলার বিচারকালে ১০ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। ওই মামলায় আজ সাজা দেওয়া হলো।

আসামিদের মধ্যে এনু-রুপনসহ চার আসামি কারাগারে আছেন। রায় ঘোষণার সময় তাঁদের আদালতে হাজির করা হয়। পরে এনু ও রুপনকে সাজা পরোয়ানাসহ কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়। এনু-রুপনের তিন ভাই শহিদুল, রশিদুল, মেরাজুল পলাতক রয়েছেন। পাভেলও পলাতক রয়েছেন।

কারাগারে থাকা আসামি যাঁদের খালাস দেওয়া হয়েছে, তাঁদের অন্য কোনো মামলায় প্রয়োজন না হলে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি এনু ও রুপনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ২০২২ সালের ২৫ এপ্রিল ওয়ারী থানায় অর্থ পাচারের প্রথম মামলায় এনু-রুপনসহ ১১ জনকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক ইকবাল হোসেনের আদালত। একই সঙ্গে তাঁদের ৪ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়।

মামলার অভিযোগ বলা হয়, এনু ও রুপন দীর্ঘদিন ক্যাসিনো পরিচালনার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করেছেন। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের সময় তাঁরা নিজেদের অপকর্ম আড়াল করতে অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ বিভিন্নভাবে পাচার করেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত