Ajker Patrika

দেড়কোটি টাকার সেতুতে উঠতে বাঁশের সাঁকো 

ভেদরগঞ্জ (শরীয়তপুর) প্রতিনিধি
দেড়কোটি টাকার সেতুতে উঠতে বাঁশের সাঁকো 

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার একটি সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙে গেছে। উপজেলার ঢালী কান্দি গ্রামের চেয়ারম্যান স্টেশন থেকে তারাবুনিয়া স্টেশন যাওয়ার পথে একটি খালের ওপরে নির্মিত সেতুটিতে বন্ধ রয়েছে যান চলাচল। তাই বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করে সেতুতে উঠে খাল পারাপার করেন পথচারীরা। তাই ওই এলাকাসহ আশপাশের সাত গ্রামের মানুষকে দেড়কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই সেতু ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হচ্ছে এবং পোহাতে হচ্ছে সীমাহীন দুর্ভোগ। 

উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ১ কোটি ৬০ লাখ ১২ হাজার ৪ ৯৭ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের কিছুদিন পরই বন্যার পানিতে সেতুটির দুপাশের সংযোগ সড়কের মাটি সরে যায়। ফলে সংযোগ সড়ক না থাকায় এলাকা বাসীর কোনো কাজেই আসছে না এই সেতু। 

স্থানীয়দের অভিযোগ কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাবে ঠিকাদারেরা দায়সারা ভাবে বালু দিয়ে সেতুতে ওঠার সংযোগ নির্মাণ করেছেন। তাই নির্মাণের ৬ মার পরই তা ভেঙে যায়। এখন সেতুর এক প্রান্তে ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে নামতে বা উঠতে হয়। সেতুর পশ্চিমে রয়েছে বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলের ফসলি জমি। সেই চরে বসবাস করে শত শত পরিবার। এসব পরিবারের ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া করতে আসতে হয় সেতুর পূর্ব পাশের চেয়ারম্যান বাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় ও তারাবুনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে। 
 
তারাবুনিয়া উচ্চবিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী রমজান জানায়, ‘আমরা প্রতিদিন এই রাস্তা ও সেতু দিয়ে স্কুলে যাই। তবে সেতুটি তো ভাঙা। সেতুতে ওঠার কোনো রাস্তা নেই। তাই আমরা বাঁশের সাঁকো দিয়ে পার হই। যে কোনো সময় আমরা নিচে পড়ে মারা যেতেও পারি। তাই সেতুটি তাড়াতাড়ি ঠিক করে দিলে আমাদের জন্য উপকার হতো।’ 

স্থানীয় কৃষকেরা জানান, এই এলাকার ৮০ শতাংশ মানুষ কৃষি কাজ করেন। মৌসুমি ফসল উপজেলা সদরসহ জেলায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেতুটি ব্যবহার করতে না পারায় ১০ কিলোমিটার রাস্তা বেশি ঘুরতে হয়। এতে তাঁদের সময় ও অর্থ দুটোই অপচয় হচ্ছে। বেড়ে যাচ্ছে ফসল উৎপাদন খরচও। সেই তুলনায় মূল্য পাচ্ছেন না কৃষকেরা। ফলে অনেক কৃষকই মৌসুমি ফসল উৎপাদন করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। 

উত্তর তারাবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইউনুস মোল্লা বলেন, ‘সেতুটির ব্যাপারে মন্ত্রী থেকে শুরু করে উপজেলা চেয়ারম্যান সবাইকে জানানো হয়েছে। তাই আর এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করব না।’ 

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ভেদরগঞ্জ উপজেলার প্রকৌশলী অনুপম চক্রবর্তী বলেন, ‘প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’ 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে ৫ থেকে ৬ বছর আগে। বর্ষার সময় বন্যার পানিতে দুপাশের মাটি ভেঙে যায়। এখনতো বর্ষাকাল। বর্ষা গেলে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত