গাজীপুরে কারখানা ভাঙচুর: ১৭ মামলায় আসামি ১২ হাজার

গাজীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২৩, ২০: ৪৬
Thumbnail image

পোশাকশ্রমিকদের আন্দোলনে গাজীপুরে কারখানায় হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও শ্রমিক পুড়ে মৃত্যুর ঘটনায় ১৭টি মামলা হয়েছে। এসব মামলার চারটিতে বাদী পুলিশ, বাকিগুলোর বাদী ক্ষতিগ্রস্ত কারখানা কর্তৃপক্ষ। মামলায় এজাহারনামীয় ১০৭ জন ছাড়াও অজ্ঞাতনামা ১২ হাজারের বেশি আসামি করা হয়েছে। তাঁদের অধিকাংশই পোশাকশ্রমিক। 

আজ রোববার গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (ডিবি উত্তর–মিডিয়া) মোহাম্মদ ইব্রাহিম খান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য জানান। 

উপপুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ ইব্রাহিম খান বলেন, ‘শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলন শুরুর পর থেকে গতকাল শনিবার রাত পর্যন্ত মহানগরীর বিভিন্ন কারখানায় হামলা, ভাঙচুর, গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও একটি কারখানায় দেওয়া আগুনে পুড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় নগরীর বিভিন্ন থানায় ১৭টি মামলা করা করেছে। এসব মামলায় এজাহারে নাম উল্লেখ আছে ১০৭ জনের।’ 

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এসব মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামির সংখ্যা ১২ হাজারের বেশি। গতকাল রাত পর্যন্ত এসব মামলায় মোট ১২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’ 

সর্বশেষ মামলাটি করা হয়েছে মহানগরীর কোনাবাড়ী তুসুকা কারখানায় হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায়। গতকাল রাতে থানায় মামলাটি করেন কারখানার প্রশাসনিক কর্মকর্তা (অ্যাডমিন) আবু সাঈদ। মামলায় ২৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। 

মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার দুপুরের বিরতির পর বহিরাগত শতাধিক দুষ্কৃতকারী তুসুকা কারখানার ভেতরে কাজ চলাকালে প্রবেশ করে। পরে দুষ্কৃতকারীরা কারখানার শ্রমিকদের উসকানি দিয়ে সব কটি ফ্লোরে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এ সময় কারখানার কর্মকর্তাদেরও মারধর করা হয়। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। কারখানার বিভিন্ন মালামাল ভাঙচুর করায় প্রায় পাঁচ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া কারখানা থেকে নগদ প্রায় আট লাখ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে দুষ্কৃতকারীরা। 

তুসুকা গ্রুপের পরিচালক মো. তারিক হাসান বলেন, ‘কারখানার ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত ২৪ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে।’ 

তিনি বলেন, ‘শনাক্ত হওয়া সবাই তুসুকার শ্রমিক। এ জন্য মামলায় শনাক্ত হওয়া সবাইকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে। কারখানায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত অন্যদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।’ 

কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আশরাফ উদ্দিন বলেন, ‘কারখানা কর্তৃপক্ষ এজাহার দিতে দেরি করায় মামলা দেরিতে রুজু করা হয়েছে। তুসুকার সামনে পুলিশের যানবাহন ভাঙচুরের মামলায় গ্রেপ্তার ২৪ জনকেও এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’ 

উল্লেখ্য, মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছেন পোশাকশ্রমিকেরা। এর মধ্যে ৭ নভেম্বর কারখানার মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে সরকার ন্যূনতম মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা ঘোষণা করে। তবে পোশাকশ্রমিক সংগঠনগুলো তা প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে। তারা ২০ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরি চায়। বেশ কয়েক দিন ধরে চলা এই বিক্ষোভে অন্তত তিনজন শ্রমিকের নিহত হয়েছেন। এখনো ঢাকায় শতাধিক পোশাক কারখানা বন্ধ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত