Ajker Patrika

বসতভিটা বিক্রি করে ছেলে শ্বশুর বাড়িতে, অকূল পাথারে বৃদ্ধা মা

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
বসতভিটা বিক্রি করে ছেলে শ্বশুর বাড়িতে, অকূল পাথারে বৃদ্ধা মা

‘এইড্যা আমার স্বামীর ভিটা, এই জমির দলিল আমার নামে। আমার পোলায় (ছেলে) আমারে না জানাইয়া এই বাড়ি ভিটা বেইচা দিছে। চেয়ারম্যান-মেম্বর কেউ তার বিচার করবার পারতাছে না। তাইলে কি দেশে আইন নাই? বিচার নাই?’—এভাবেই বিলাপ করছেন টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কালমেঘা গ্রামের শতবর্ষী বৃদ্ধা বাছিরন বেগম। তিনি ওই গ্রামের মৃত খবরুদ্দিনের স্ত্রী। 

বৃদ্ধা বাছিরনের অভিযোগ, প্রায় ছয় মাস আগে বাছিরনের বসতভিটার ঘরসহ ছয় শতাংশ জমি গোপনে বিক্রি করেছেন তাঁরই সন্তান মো. বাছেদ মিয়া। জমি উদ্ধার করতে বাছিরন বেগম স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্যসহ মাতাব্বরদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন, কিন্তু একরোখা ছেলে বাছেদ মিয়া ও ক্রেতা আব্দুল গফুর মিয়া বিচার-সালিসের ধারে-কাছেই ভিড়ছেন না। 

সরেজমিনে কালমেঘা গ্রামের সুবহান মার্কেট এলাকার ওই বৃদ্ধা বাছিরন ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাস ছয়েক আগে অভিযুক্ত বাছেদ মিয়া গোপনে তাঁর বৃদ্ধা মা বাছিরনের ছয় শতাংশ জমি স্থানীয় গফুর মিয়ার কাছে বিক্রি করেন। স্থানীয়দের মতে, ক্রেতা গফুর মিয়ার কাজই হলো বিরোধপূর্ণ জমি কিনে নিজের দখলে নেওয়া। জমি বিক্রির পরপরই ছেলে বাছেদ মিয়া বউ-বাচ্চা নিয়ে পাশের গ্রামে তাঁর শ্বশুরবাড়িতে চলে গেছেন। এদিকে জমির ক্রেতা গফুর মিয়া ওই বৃদ্ধাকে বসতভিটা ছেড়ে দিতে বারবার চাপ দিচ্ছেন। 

এ ঘটনায় বাছিরন বেগম বসতভিটা রক্ষা করতে বহুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে সন্তানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। গ্রাম আদালত অভিযুক্ত বাছেদকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য পরপর তিনটি নোটিশ দেন। দ্বিতীয় নোটিশে বাছেদ ইউনিয়ন পরিষদে হাজির হয়ে মায়ের নামে জমি বিক্রির বিষয়টি স্বীকারও করেন। তবে জমির ক্রেতা গফুর মিয়াকে নিয়ে মীমাংসা করতে আর তিনি গ্রাম আদালতে উপস্থিত হননি। পরে গ্রাম আদালত বৃদ্ধার পক্ষে একটি প্রতিবেদন দিয়েছেন। 

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ছেলে বাছেদ মিয়ার মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হয়। একবার ফোন ধরে বাছেদের ছেলে পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘বাবা কানে কম শোনেন, তিনি অন্য কারও জমি বিক্রি করেন নাই। তিনি তাঁর নিজের জমিই বিক্রি করেছেন।’ 

স্থানীয় ইউপি সদস্য মোশারফ খান বলেন, ‘বিষয়টি মীমাংসার লক্ষ্যে আমরা চেষ্টা করেছি। কিন্তু বয়স্ক মহিলার ছেলে বাছেদ এবং ওই জমি ক্রয়কারী গফুর আমাদের কারও কথা শোনে না।’

বহুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা একাধিকবার বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেছি, কিন্তু বাছেদ ও গফুর কারও কথা শোনে না। আমরা অবাধ্য সন্তান বাছেদ ও দুষ্কৃতকারী গফুরের শাস্তি দাবি করছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বহরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সরকার নূরে আলম মুক্তা বলেন, ‘ঘটনাটি সত্যিই দুঃখজনক। জমিটুকুর মালিক বৃদ্ধা বাছিরন। তাঁর ছেলে না জানিয়ে বিক্রি করেছে এবং যে ক্রয় করেছে সেও একরোখা প্রকৃতির মানুষ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশকে ভেঙে ফেলার আহ্বান ত্রিপুরার রাজপরিবার প্রধানের

পরিবারের সামনে পুলিশ কর্মকর্তা লাঞ্ছিত, স্বেচ্ছাসেবক দলের ৩ নেতা-কর্মী আটক

নয়াদিল্লি হাসিনা আমলের দৃষ্টিভঙ্গিই ধরে রেখেছে: ভারতীয় গণমাধ্যমকে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

বিমসটেক সম্মেলনে ড. ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদি বৈঠক হচ্ছে

গ্রেপ্তার আসামিকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের ওপর হামলা, বিএনপির ১৭ নেতা-কর্মী আটক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত