Ajker Patrika

শরীয়তপুরে কীর্তিনাশা নদীতে ডাকাতের গুলিতে আহত ৪, গণপিটুনিতে নিহত ২

শরীয়তপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ মার্চ ২০২৫, ১০: ১৮
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নদীতে ডাকাতির ঘটনায় শরীয়তপুরে গণপিটুনিতে দুই ডাকাত নিহত হয়েছে এবং গুরুতর আহত হয়েছে পাঁচ ডাকাত। এ সময় ডাকাতদের ছোড়া গুলিতে চারজন শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

গুলিবিদ্ধ তিন শ্রমিক ও গুরুতর আহত পাঁচ ডাকাতকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শরীয়তপুর সদর উপজেলার ডোমসার ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া এলাকায় গণপিটুনির শিকার হয় সাত ডাকাত।

পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে নিহত দুই ডাকাতের পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একদল সংঘবদ্ধ ডাকাত স্পিডবোটে এসে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার রাজারচর এলাকায় কীর্তিনাশা নদীতে নৌযানে ডাকাতির চেষ্টা চালায়। খবর পেয়ে স্থানীয়রা তাদের ধাওয়া দেয়। তখন ডাকাতদের ছোড়া গুলিতে বাল্কহেডের শ্রমিক পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ার মাসুম মিয়া (৩০) ও পিরোজপুরের কালীকাঠির আলামিন ফকির (১৯) গুলিবিদ্ধ হন।

ধাওয়া খেয়ে ডাকাতেরা স্পিডবোট নিয়ে কীর্তিনাশা নদী দিয়ে পালিয়ে শরীয়তপুরের আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের ভাসানচর এলাকায় ঢুকে পড়ে। এরই মধ্যে ডাকাতির খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা সতর্ক হয়ে যান।

পরে ডাকাতেরা আবার কীর্তিনাশা নদী দিয়ে শরীয়তপুর সদরের রাজগঞ্জ এলাকা দিয়ে নদীপথে বের হওয়ার চেষ্টা করে। তখন ডোমসার এলাকায় স্থানীয়রা বাল্কহেড দিয়ে নদীপথ আটকে দেয়। বাধা পেয়ে ডাকাতেরা স্পিডবোট তীরে রেখে পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয় জনতা তাদের ধাওয়া করে। এ সময় ডাকাতেরা হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটায় এবং এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এ সময় ডাকাতদের গুলিতে বাল্কহেডের শ্রমিক ডোমসার মোল্লাকান্দি এলাকার তোতা মিয়া (৩৫) ও স্থানীয় একজন আহত হন।

একপর্যায়ে স্থানীয় জনতা সাত ডাকাতকে ধরে ফেলে এবং তাদের গণপিটুনি দেয়। পুলিশ এসে মুন্সিগঞ্জের কালীচর থানার রিপন (৪০), শরীয়তপুরের জাজিরার কুন্ডেরচরের আনোয়ার দেওয়ান (৫০), মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুরের সজীব (৩০) অজ্ঞাত আরো চারজনসহ মোট সাত ডাকাতকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।

গুরুতর আহত ডাকাতদের শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। গুলিবিদ্ধ তিন শ্রমিকসহ পাঁচ ডাকাতের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মুনতাসির খান বলেন, ডাকাতের গুলিতে আহত চারজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাদের মধ্যে একজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছে। বাকি তিনজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া সাতজন আহত ডাকাতের মধ্যে দুজন মারা গেছে এবং বাকি পাঁচজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করা হয়েছে।

শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, মাদারীপুরের রাজারচর এলাকায় নদীতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। স্থানীদের প্রতিরোধের মুখে ডাকাতের দল কীর্তিনাশা নদী দিয়ে শরীয়তপুর হয়ে পালানোর চেষ্টা করে। একপর্যায়ে জনতা তাদের ধরে ফেলে এবং গণপিটুনি দেয়। খবর পেয়ে আমরা দ্রুত সেনাবাহিনী ও পুলিশ দলকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছাই এবং সাতজন ডাকাতকে জনগণের কাছ থেকে উদ্ধার করি। ঘটনাস্থল থেকে একটি স্পিডবোট ও দেশীয় অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত