ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জাবি ছাত্রের ‘আত্মহত্যা’

জাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৪ এপ্রিল ২০২৩, ২১: ৪০
আপডেট : ০৪ এপ্রিল ২০২৩, ২২: ০৮

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সিয়াম মো. আরাফাত নামে এক ছাত্রের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের খবর পাওয়া গেছে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের বি ব্লকের ১১৫ নম্বর কক্ষ থেকে লাশটি তাঁর সহপাঠীরা উদ্ধার করেন। 

সিয়াম মো. আরাফাত বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তাঁর গ্রামের বাড়ি নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলায়। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসক বীরেন্দ্র কুমার বিশ্বাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, সন্ধ্যা ৭টার দিকে সিয়ামকে চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। তখন আমরা পরীক্ষা করে দেখি, তিনি আগেই মারা গেছেন। যখন তাঁর লাশ পাই, তখন তাঁর গলার মধ্যে রশি বাঁধা ছিল। ফাঁস লেগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।’ 

সিয়ামের সহপাঠীরা জানান, ‘দুপুরের দিকে সিয়ামের কক্ষের সামনে গিয়ে কয়েকবার ডাকাডাকি করা হয়। এরপর বিকেলে আবার ডাকাডাকি করা হয়। তবে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। পরে সন্ধ্যায় যখন ডাকাডাকি করা হয়, তখন কোনো সাড়া না পেয়ে জানালার গ্লাসের ওপরের কাগজ সরিয়ে ভেতরে সিয়ামকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখা যায়। তখন দরজা ভেঙে তাঁকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়।’ 

এর আগে গতকাল (সোমবার) সন্ধ্যার দিকে সিয়াম মো. আরাফাত ফেসবুকে ‘অন্তিম যাত্রার পথে’ শীর্ষক একটি স্ট্যাটাস দেন। যেখানে একটি নির্দিষ্ট সময় (ভোর ৪টা ২৫ মিনিট) উল্লেখ করা হয়। 

এতে তিনি লিখেন, ‘আমি চাইলেও সেটা অবর্ণনীয় যে আমি কিসের মধ্য দিয়ে গেছি। যদি সম্ভব হয়, তবে সেই আধ্যাত্মিক অনুভূতি উপলব্ধি করার চেষ্টা করুন। কত সময় কেটে গেছে জানি না। আমি নিশ্চিত ছিলাম না যে আমি আবার আমার শরীরে ফিরে আসব কি না। কিন্তু যখন আমি হুঁশ পেয়েছি তখন মেঝেতে বজ্রাহত অবস্থায় আবিষ্কার করেছি। এ সময় আমি আমার শরীর নাড়াতে পারিনি, অনেকক্ষণ কিছু বলতে পারিনি। আমি শুধু এই পৃথিবীতে চিরকাল থাকতে চেয়েছিলাম। সেখানে স্থায়ীভাবে যেতে হলে হয়তো দৈহিক দেহের মৃত্যুই একমাত্র সমাধান।’ 

শেষে তিনি লিখেন, ‘মানবিক সামর্থ্যের সীমাবদ্ধতার বাইরে একজন মানুষ ছিলেন যিনি চলে গেছেন।’ 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ফ ফিরোজ উল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা আরাফাতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। নীলফামারী থেকে তাঁর অভিভাবকেরা রওনা দিয়েছেন। পাশাপাশি ঢাকার জিরানী থেকে তাঁর পরিবারের একজন সদস্য আসছেন। তিনি আসলে লাশ ও ময়নাতদন্তের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ 

তিনি আরও বলেন, আরাফাত সেশন ড্রপ আউট হয়ে জুনিয়র ব্যাচের সঙ্গে কনটিনিউ করছিল। তাঁর কক্ষটি আপাতত সিলগালা করা আছে। পরিবারের সদস্যরা আসলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শ কেন্দ্রের একাধিক মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা জানান, ‘আরাফাত আমাদের কাছে কখনো চিকিৎসা নিতে এসেছে বলে জানা নেই।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত