নির্মাণাধীন ভবনের ইঞ্জিনিয়ারের নির্দেশে রাতভর নির্যাতন করে শ্রমিকেরা: র‍্যাব

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৫: ২৯
আপডেট : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৫: ৪৬

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে গত ৬ সেপ্টেম্বর রাতে বরাব সরকারি প্রাথমিক স্কুলের নির্মাণাধীন ভবনে যায় ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী আকাশসহ তার বেশ কয়েকজন বন্ধু। শ্রমিকদের ধাওয়ায় সবাই বেরিয়ে গেলেও আকাশ আটকা পড়ে। পরে নির্মাণাধীন ভবনের ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেমের নির্দেশে লোহার রড চুরির অভিযোগে মধ্যযুগীয় কায়দায় লাঠি, লোহার রড ও স্টাম্প দিয়ে মারধর করা হয়। 

রাতভর মারধরের পর পরদিন সকালে আকাশের মৃত্যু হয়। আকাশের ফুফু মোহাম্মদপুর থানায় বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত নির্মাণাধীন ভবনের ইঞ্জিনিয়ারসহ তিনজনকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। 

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মো. মীর মোয়াজ্জেম হোসেন ওরফে প্রান্ত (২৫), মো. ফিরোজ (১৮) ও মো. মোস্তাফিজুর রহমান (৩৫)। 

আজ শনিবার দুপুর ১২টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। 

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে খন্দকার আল মঈন বলেন, গত ৬ সেপ্টেম্বর রাত আনুমানিক ১০টায় ভুক্তভোগী আকাশ ও তার বন্ধুরা মিলে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি স্কুলের নির্মাণাধীন সাইটে প্রবেশ করে। এ সময় নির্মাণাধীন সাইটের শ্রমিকেরা তাদের ধাওয়া করলে সবাই পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও আকাশ আটকা পড়ে। আকাশকে শ্রমিকদের থাকার জায়গায় নেওয়া হয়। পরে মোয়াজ্জেমের নির্দেশে ভুক্তভোগীকে লোহার রড চুরির অপবাদ দিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় হাত-পা বেঁধে বাঁশের সঙ্গে ঝুলিয়ে লাঠি, লোহার রড ও স্টাম্প দিয়ে নির্মমভাবে রাতভর মারধর করে। ভুক্তভোগীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক জখম হয়। 

তিনি বলেন, পরদিন সকাল ৬টার দিকে আকাশ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা তার ফুফুকে মোবাইল ফোনে জানান। আকাশের ফুফু ঘটনাস্থলে এসে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তাকে বাসায় নিয়ে যান। সকাল ৮টার দিকে আকাশের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গ্রেপ্তার এড়াতে ইঞ্জিনিয়ার ও শ্রমিকেরা নির্মাণাধীন সাইট থেকে পালিয়ে রাজধানীর মগবাজার ও রমনাসহ বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে চলে যান। 

গ্রেপ্তার মো. মীর মোয়াজ্জেম হোসেন ওরফে প্রান্ত, মো. ফিরোজ ও মো. মোস্তাফিজুর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকাখন্দকার মঈন বলেন, মোয়াজ্জেম উক্ত স্কুলের নির্মাণাধীন সাইটের সাইট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। তাঁর নির্দেশে ভুক্তভোগীকে বাঁশের সঙ্গে ঝুলিয়ে নির্যাতন করে এবং মোবাইল ফোনে পুরো ঘটনার ভিডিও ধারণ করেন। আর ফিরোজ ও মোস্তাফিজুর ভুক্তভোগী আকাশকে নির্যাতন করেন। ফিরোজ পেশায় একজন শ্রমিক। মোস্তাফিজুর নির্মাণাধীন সাইটের ফোরম্যান হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। 

গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত