দুই কিশোরীর সমপ্রেম নিয়ে বিপাকে পরিবার-প্রশাসন

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২২ মার্চ ২০২২, ১৭: ০০
আপডেট : ২২ মার্চ ২০২২, ২২: ০৫

ফেসবুকের গ্রুপ মেসেঞ্জারে পরিচয়। এসএমএস ও ছবি আদান-প্রদানের মাধ্যমে একপর্যায়ে তাদের মধ্যে সখ্য গড়ে ওঠে। এ সখ্য পরে গভীর প্রেমে রূপ নেয়। দুই বছর ধরে চলে প্রেম। সশরীরে সাক্ষাৎও হয় তাদের। জানাজানি হওয়ার পর অভিভাবকদের চাপে আলাদা হতে হয়। প্রেমের টানে আবার একত্র হয়েছে দুই কিশোরী। 

গতকাল সোমবার টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার ফুলকির ময়থা গাছপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। টাঙ্গাইলের কিশোরী নবম শ্রেণির ছাত্রী। অপরজনের বাড়ি নোয়াখালী।

স্থানীয় লোকজন জানান, প্রায় দুই বছর আগে তাদের সম্পর্ক তৈরি হয়। দুই মাস আগে ঢাকার সাভারে এক আত্মীয়ের বাসায় তারা থাকে। এরপর সেখান থেকে আনোয়ার নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে সিরাজগঞ্জের চৌহালী গিয়ে রাত কাটায়। ওই এলাকার স্থানীয় লোকজনের কাছে দুই কিশোরীর আচরণ সন্দেহজনক মনে হলে বিষয়টি পুরো এলাকায় জানাজানি হয়। একপর্যায়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে দুই কিশোরীকে নিজ নিজ পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। 

সর্বশেষ গত রোববার তাদের ফোনে কথা হয়। এরপর সন্ধ্যায় নোয়াখালীর কিশোরী টাঙ্গাইল শহরে চলে আসে। অপরজন স্কুল থেকে সেখানে গিয়ে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে। ওই রাতেই তারা সংসার পাতার সিদ্ধান্ত নেয়। তাদের সিদ্ধান্তের বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। তাদের দেখতে দলে দলে লোকজন গিয়ে ওই বাড়িতে ভিড় করে।

দুই কিশোরী পরিবারকে জানিয়ে দিয়েছে, তারা একে অপরকে ছাড়া বাঁচতে পারবে না। বাঁচলেও একসঙ্গে, মরলেও একসঙ্গে। কোনোভাবেই কোনো ছেলেকে বিয়ে করবে না।

টাঙ্গাইলের ওই কিশোরীর বাবা বলেন, ‘আমি মেয়েকে দেড় মাস বয়সে পালতে এনেছি। ও আমার আদরের একমাত্র সন্তান। তার এমন কাণ্ডে আমি খুবই কষ্ট পেয়েছি। নোয়াখালীর ওই মেয়েটিকে তার বাড়িতে চলে যেতে বলেছি। কিন্তু সে যাচ্ছে না। সে কিছুতেই একে ছাড়া যাবে না। পরে তার পরিবারকে বিষয়টি জানানো হলে তারা এখানে আসবে না বলে আমাকে জানায়। প্রশাসনকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। আমি বিষয়টি নিয়ে খুবই বিপদে আছি।’

ওই দুই কিশোরী বলে, ফেসবুকের মাধ্যমে তাদের প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। এখন কেউ কাউকে ছাড়া থাকতে পারবে না। প্রয়োজনে বাড়ি ছেড়ে গার্মেন্টসে চাকরি করে দুজন সংসার করবে।

ময়থা গাছপাড়া এলাকার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য সেকান্দার আলী স্বপন বলেন, নোয়াখালীর মেয়েটি গত রোববার সন্ধ্যায় এসেছে। বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। দুই কিশোরী জানিয়েছে, তারা কেউ কাউকে ছাড়া থাকবে না। তারা গার্মেন্টসে চাকরি করে একত্রে সারা জীবন কাটাবে। এ ক্ষেত্রে নোয়াখালীর কিশোরী টাঙ্গাইলের কিশোরীকে স্বামী হিসেবে জীবনসঙ্গী করবে বলে জানিয়েছে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাসাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা পারভীন বলেন, ‘স্থানীয় চেয়ারম্যান বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে নোয়াখালী প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। কিশোরীর প্রকৃত অভিভাবকের খোঁজ পেলে তাঁদের হাতে ফিরিয়ে দেব। আর তার পরিবারকে খুঁজে না পেলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’

বাসাইল থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্যের সঙ্গে কথা হয়েছে। নোয়াখালীর ওই কিশোরীর পরিবারকে তারা বিষয়টি জানিয়েছে। কিশোরীর পরিবার এলে তাকে ফিরিয়ে দিতে বলেছি।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আবু সাঈদকে ৪–৫ ঘণ্টা পরে হাসপাতালে নেওয়া হয়—শেখ হাসিনার দাবির সত্যতা কতটুকু

মেট্রোরেল থেকে আমলাদের বিদায়, অগ্রাধিকার প্রকৌশলীদের

সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার সময় বাড়ল

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

ব্যাংক খাতে নতুন নীতিমালা: আটকে গেল ২৫৮ কর্মকর্তার জিএম পদে পদোন্নতি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত