Ajker Patrika

৫ লাখ ডোজ উপহার, ছয় দেশ জোট করতে চীনের প্রস্তাব

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০২১, ২০: ৪২
৫ লাখ ডোজ উপহার, ছয় দেশ জোট করতে চীনের প্রস্তাব

ঢাকা: চীন বাংলাদেশকে পাঁচ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন উপহার দিতে চায়। সেই সঙ্গে জরুরিভিত্তিতে ব্যবহারের জন্য দক্ষিণ এশিয়ার ছয় দেশ নিয়ে একটি মজুত ব্যবস্থা তৈরির প্রস্তাব দিয়েছে চীন সরকার। দুটি প্রস্তাবই সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে বাংলাদেশ সরকার।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চীন এরই মধ্যে সাড়া দিয়ে পাঁচ লাখ টিকা উপহার হিসেবে বাংলাদেশ সরকারকে দিতে চেয়েছে। কিন্তু সংক্রমণ অনুযায়ী কার্যকর ও সক্ষমতা যাচাই না করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চাচ্ছে না সরকার। যেহেতু এই মুহূর্তে বাংলাদেশের জন্য টিকা অতি জরুরি, তাই দ্রুত যাচাই–বাছাই ও পরীক্ষা করে সরকারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

গত ২০ এপ্রিল স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেককে চিঠি দেন ঢাকাস্থ চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। চিঠিতে চীনা রাষ্ট্রদূত লেখেন, আমাদের ফোনে আলাপের পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে যে, পাঁচ লাখ টিকা উপহার হিসেবে গ্রহণ করতে মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি লাগবে। অনুমতি পেতে চিঠির সঙ্গে দুটি আবেদনপত্র সংযুক্ত করা হলো। দ্রুত সময়ের মধ্যে আবেদন দুটি সই করে দূতাবাসকে জানাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দিতে অনুরোধ করছি।

এদিকে করোনাভাইরাসের টিকা মজুত রাখার জন্য দক্ষিণ এশিয়ায় একটি ‘স্টোরেজ ফ্যাসিলিটি’ গঠন করতে চায় চীন। আর এ উদ্যোগে ভারতকে বাদ দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার ছয়টি দেশকে রাখার প্রস্তাব দিয়েছে দেশটি। এর মূল উদ্দেশ্য জরুরি প্রয়োজনে যেন দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো ভ্যাকসিন পায়। ভারতবিহীন এই উদ্যোগে থাকতে আপত্তি নেই বাংলাদেশের। তবে এখনও জোটটি চূড়ান্ত হয়নি, আর আলোচনা চলছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এ ব্যাপারে আজকের পত্রিকাকে বলেন, চীনের পক্ষ থেকে একটা প্রস্তাব এসেছে, তারা ছয়টি দেশকে নিয়ে কোভিড ভ্যাকিসেনের জন্য একটি স্টোরেজ ফ্যাসিলিটি করতে চায়। এটাতে থাকতে মোটামুটি ছয়টি দেশ সম্মত হয়েছে। এটা জাস্ট ফর কোভিড ভ্যাকসিন স্টোরেজের জন্য।

এ নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, টিকা সংগ্রহের জন্য চীন একটি ‘ইমার্জেন্সি ভ্যাকসিন স্টোরেজ ফ্যাসিলিটি ফর কোভিড-১৯ ফর সাউথ এশিয়া’ গঠন করতে চায়। প্রস্তাবটি বিবেচনা করছে বাংলাদেশ।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চীন এই উদ্যোগে বাংলাদেশ ছাড়াও আফগানিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানকে রাখতে চায়। জোটটি গঠন নিয়ে আলোচনা চলছে, এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এটি এখনো চূড়ান্ত কিছু নয়। আর এতে যোগ দিতে বাংলাদেশের কোনো আপত্তি নেই। বাংলাদেশে করোনার টিকার সঙ্কট হলে এখান থেকে পাওয়া যাবে। তবে শুধু জরুরি উদ্দেশ্যে এটি ব্যবহার করা হবে।

দেশে করোনা পরিস্থিতির ভয়ানক অবনতির পরিপ্রেক্ষিতে মার্চের শুরুর দিকেই টিকা রপ্তানি স্থগিত করে ভারত সরকার। ফলে সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে এখনই টিকা পাওয়া অনিশ্চিত হওয়ায় বিকল্প উৎস থেকে সংগ্রহের চেষ্টা শুরু করেছে বাংলাদেশ। এছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোভ্যাক্স উদ্যোগের টিকা পাওয়ার বিষয়েও এখনো নিশ্চয়তা মেলেনি। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে ভরসা করতে হচ্ছে চীন ও রাশিয়ার ওপর।

আজ বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) পর্যন্ত দেশে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ মিলে দেওয়া হয়েছে প্রায় ৭৭ লাখ ৪৭ হাজার ডোজ টিকা। এর মধ্যে প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৫৭ লাখ ৭৮ হাজার ৬৮৬ জন। অন্যদিকে দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ১৯ লাখ ৬৭ হাজার ৯৭৫ জন। সে অনুযায়ী বর্তমানে মজুত আছে মাত্র সাড়ে ২৫ হাজার টিকা। যা দিয়ে দ্বিতীয় ডোজ সম্পন্ন করা সম্ভব নয়।

ফলে চলমান টিকাদান কর্মসূচি শেষ করা এখন অনেকটাই অনিশ্চিত। এই মুহূর্তে দ্বিতীয় ডোজ টিকার জন্য প্রয়োজনীয় ডোজের চেয়ে ১২ লাখের বেশি ডোজ ঘাটতি রয়েছে। প্রথম ডোজ দেওয়া অব্যাহত থাকলে ঘাটতির পরিমাণ আরও বাড়বে।

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জাতীয় নির্বাচন: ভোট কমিটির নেতৃত্বে ডিসি–ইউএনওকে না রাখার চিন্তা

মাগুরার শিশুটি এখনো অচেতন, চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান

ঈদে পুলিশের সহযোগী ফোর্স হবে বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মী, পাবে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা

তিন নারী আমার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ: তারেক রহমান

গত দশ বছর ভিসা না পাওয়ার কারণে বাংলাদেশে আসতে পারিনি: মাইলাম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত