Ajker Patrika

নির্যাতনের শিকার নারীর মামলা না নিয়ে সমঝোতার প্রস্তাব

নুরুল আমিন হাসান, উত্তরা (ঢাকা) 
আপডেট : ২২ আগস্ট ২০২২, ১৬: ২৪
নির্যাতনের শিকার নারীর মামলা না নিয়ে সমঝোতার প্রস্তাব

ইসরাত জাহান ইলমা নামের একজন গৃহবধূ স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়ে গাজীপুরের টঙ্গী পূর্ব থানায় এক সপ্তাহ ধরে ঘুরলে মামলা নেয়নি পুলিশ। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, স্বামীর পক্ষ নিয়ে মামলার পরিবর্তে তালাকের মাধ্যমে পুলিশ সমঝোতার প্রস্তাব দিয়েছে। 

ইসরাত জাহান ইলমা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘২০২০ সালের জুন মাসে মাদারীপুরের দক্ষিণখাগছাড়া উপজেলার মিজানুর রহমানের ছেলে অনিক কাজীর সঙ্গে দুই লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে হয়। বর্তমানে গাজীপুরের পুবাইলের হায়দারাবাদ এলাকায় থাকেন তারা। বিয়ের পর থেকে নানা কিছু দাবি করে আসছিল অনিক। আমার পরিবারও যথাসাধ্য চাহিদা পূরণের চেষ্টা করেছে। তবুও সে আমাকে নানা অছিলায় মারধর করত। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের কারণে গত এপ্রিল মাসে আমার গর্ভের ছয় মাসের সন্তান মারা যায়। তবুও যৌতুকের জন্য নির্যাতন কমেনি।’ 

ইলমা বলেন, ‘সবশেষ গত ১৩ আগস্ট রাতে অনিক আমাকে ফোন করে, তার চাচাতো ভাই মামুন অসুস্থ এবং আমায় সেখানে দেখতে যাওয়ার জন্য বলে। পরে আমি টঙ্গীর মধুমিতা রোডের মামুন কাজীর ভাড়া বাসায় গেলে রাত ১০টার দিকে অনিক আমাকে যৌতুকের এক লাখ টাকার জন্য ব্যাপক মারধর করে। তখন মামুন ভাই ও তার স্ত্রীসহ ওই বাসার অন্যান্য লোকজন অনিকের হাত থেকে আমাকে প্রাণে রক্ষা করে।’ 

ওই গৃহবধূর অভিযোগ, ‘এ ঘটনায় মামলা করা জন্য পরের দিন রোববার (১৪ আগস্ট) সকালে টঙ্গী পূর্ব থানায় গেছি। থানার কম্পিউটার অপারেট এজাহার লিখে দিছে পরে অভিযোগের তদন্তকারী অফিসার এসআই ইয়াসিন আরাফাত আমাকে বলেন, ওই ছেলের বাসা থেকে ৫০ হাজার টাকা দিবে। আর ছেলেকে ‘খোলা তালাক’ দিতে হবে। এতেই যেন সমাধান হয়ে যায়। আমি যেন কোনো চিল্লাচিল্লি না করি। অথচ আমার দেনমোহর ২ লাখ টাকা।’ 

ভুক্তভোগীর স্বজনদের অভিযোগ, ‘পুলিশ অনিকের বাড়ি থেকে টাকা খেয়েছে। যার কারণে তাঁদের পক্ষ হয়ে কথা বলছে। মামলা না নিয়ে উল্টো দেনমোহরের ২ লাখ টাকার পরিবর্তে ৫০ হাজার টাকায় তালাকের চেষ্টা করছে।’ 

এ প্রসঙ্গে টঙ্গী পূর্ব থানার এসআই ইয়াসিন আরাফাত আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওরা বলছে দুই পক্ষ বসে একটা সমাধান করে দেন। পরে অনিকের বাবা ইলমাকে ৫০ হাজার টাকা ও খোলা তালাক দেওয়ার শর্ত দিয়েছে। সেটাই ওদেরকে জানিয়েছি।’ মামলা না নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি নিব না কেন, তারা যদি মামলা দেন তাহলে অবশ্যই নিব।’ 

এ বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ-দক্ষিণ) ইলতুৎমিশ বলেন, ‘এমন তো হওয়ার কথা না। বিষয়টি আমি দেখব।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত