Ajker Patrika

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দেড় কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগপত্রে ৩০০ ছাত্রীর সই 

ঘিওর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪: ২৪
প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দেড় কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগপত্রে ৩০০ ছাত্রীর সই 

মানিকগঞ্জের ঘিওর পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী খানের বিরুদ্ধে ১ কোটি ৩৮ লাখ ৪৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ, শিক্ষকদের হয়রানি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। তাঁর বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে দেওয়া অভিযোগপত্রে সই করেছেন বিদ্যালয়ের ২৮ শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে ২৭ জন ও প্রায় ৩০০ জন ছাত্রী। 

আজ বুধবার অভিযোগপত্র পাওয়ার বিষয় আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেন ঘিওরের ইউএনও আমিনুল ইসলাম। গতকাল মঙ্গলবার বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতিনিধি মো. রফিকুল ইসলাম, আতিকুজ্জামান ও খায়রুন নাহার খন্দকার ওই অভিযোগপত্র জমা দেন। 

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১২ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত এসএসসি ও জেএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফরম পূরণ বাবদ ৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন প্রধান শিক্ষক। ১২ বছর ধরে মালামাল ক্রয় না করে ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে ১২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। বিদ্যালয়ে উত্তীর্ণ নিয়োগ প্রার্থীদের নিয়োগপত্র আটকে উন্নয়নের কথা বলে ৩০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। মার্কশিট, সার্টিফিকেট ও প্রশংসাপত্র বাবদ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১২ বছরে ৭ লাখ ২০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন। গত আট বছর বিদ্যালয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের স্কুল বেতনের শতকরা ২০ ভাগ প্রভিডেন্ট ফান্ড কর্তন করে ব্যাংকে জমা না দিয়ে ১৪ লাখ ৮৫ হাজার ১২০ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। 

সম্প্রতি বৈজ্ঞানিক মালামাল না কিনে সরকারের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযোগপত্রে দাবি করা হয়েছে, বিদ্যালয়ের দোকানের জমানত আত্মসাৎ ও ভাড়া আদায় এবং বিদ্যালয়ের জমি ইজারা দিতে অনিয়ম করেছেন প্রধান শিক্ষক। বিদ্যালয়ের ল্যাপটপ, চার্জার ফ্যান, সিসি টিভি প্রধান শিক্ষক নিজ বাসায় ব্যবহার ও বিদ্যালয়ের টাকায় নিজের জন্য একাধিক মোবাইল ফোনসেট ক্রয় করেন। শিক্ষক-কর্মীচারীদের সঙ্গে স্বেচ্ছাচারিতা ও হয়রানির করা এবং শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেল প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বিদ্যালয়ের উন্নয়নের নামে টাকা আদায়, ক্লাস চলাকালীন ছাত্রীদের জোর করে প্রাইভেট পড়ানোসহ রাতের বেলায় বহিরাগতদের নিয়ে আড্ডা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী খানের বিরুদ্ধে। 

অভিযোগকারী শিক্ষক প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছাড়া ২৮ জন শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন। এর মধ্যে সহকারী প্রধান শিক্ষক ছাড়া অন্যরা সই করেছেন অভিযোগপত্রে। এ ছাড়া প্রায় ৩০০ ছাত্রী গণস্বাক্ষর করেছেন প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তার সবগুলো সত্য ও প্রমাণ রয়েছে।’ 

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী খান জানান, যাঁরা তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন তাঁদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁরা অভিযোগ তুলে নেবেন। তাঁকে হয়রানি করার জন্য একটি গোষ্ঠী মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন। 

ইউএনও আমিনুল ইসলাম জানান, ঘিওর পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে অভিযোগের বিষয় তদন্ত করবেন। তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষর কাছে সুপারিশ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত