মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

একই গ্রামের হিন্দু ছেলের সঙ্গে মুসলিম মেয়ের বন্ধুত্ব। একপর্যায়ে পালিয়ে বিয়ে। মুসলিম ধর্মাবলম্বী হয়ে অন্য ধর্মের ছেলেকে বিয়ে মেনে নেননি গ্রামের প্রভাবশালী মাতবরেরা। সালিস বসিয়ে সাজা দেওয়া হয় মেয়েকে, সঙ্গে বিয়েতে সাহায্য করার অভিযোগ এনে প্রতিবেশী চারজনকে করা হয় একঘরে। এরই মধ্যে ঘটনার এক যুগ পেরিয়ে গেছে, তবুও কাটেনি রেশ। একঘরে রয়েছে ওই চার পরিবার। তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে। তবে ওই ছেলে ও মেয়ের পরিবারের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা দেননি মাতবরেরা।
ঘটনাটি মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দরগ্রাম ইউনিয়নের নওগাঁও গ্রামের। সমাজপতিদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ওই চার পরিবার সমাজের কারও সঙ্গে কথা বললে গুনতে হবে এক হাজার টাকা। এমনকি কারও বাড়ির দাওয়াতে যেতে পারবেন না তাঁরা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, মিথ্যা অপবাদে দীর্ঘ ১২ বছর একঘরে রাখায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এখন সামাজিকভাবে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাঁদের। ১২ বছর আগের পরিবারের ছোট ছেলে-মেয়েরা এখন বড় হয়েছে। একঘরে হয়ে থাকায় তাঁদের বিয়ে হচ্ছে না। এ বিষয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন জাফর আলী নামের এক ভুক্তভোগী।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালে নওগাঁও গ্রামের হিন্দুধর্মের এক ছেলের সঙ্গে মুসলিম মেয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে করেন। ওই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর তাঁদের গ্রামে ধরে এনে সালিস বসানো হয়। আব্দুর রাজ্জাক, আবু হোসেন, বাবু, শফিক মন্ডল, সাঈদ আলীসহ গ্রামের প্রভাবশালী মাতবরেরা সালিস বসান।
সালিসে মেয়েকে জুতা মারা হয়। তাঁদের সহযোগিতা করার অভিযোগ এনে ওই মেয়ের প্রতিবেশী কৃষক জাফর আলী, তাঁর ভাই সাদেক আলী ও আলম হোসেন এবং সাদেকের চাচা জিলাল উদ্দিনকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এমনকি সমাজের কারও সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে এক হাজার টাকা জরিমানা, একঘরে থাকা চার পরিবারের বাড়িতে কেউ যেতে পারবেন না এবং তাঁরাও সমাজের কারও বাড়িতে যেতে পারবেন না—সালিসে এমন নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
এ ছাড়া গ্রামের মসজিদ, মাদ্রাসা ও ঈদগাহে কোনো অনুদান দিতে পারবেন না বলেও নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়।
এদিকে সালিস ডাকলে ওই হিন্দু ছেলে পালিয়ে যান। এরপর তাঁদের বিয়েও ভেঙে যায়।
একঘরে থাকা জাফর আলীর পঞ্চাশোর্ধ্ব স্ত্রী লিপি বেগম প্রায়ই ঘরের দরজার পাশে ভেজা চোখে বসে থাকেন। লিপি বেগমের পাশের ঘরে থাকা সাদেক আলীর স্ত্রী জাহানারা বেগমেরও একই অবস্থা। জাহানারা বেগম ঘরের জানালার সামনে দাঁড়িয়ে অপলক দৃষ্টিতে দেখেন রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা মানুষদের।
এলাকার প্রভাবশালী একটি মহল তাঁদের একঘরে করে রাখায় প্রতিবেশী কারও সঙ্গে কথা বলতে পারেন না তাঁরা। মন চাইলেও যেতে পারেন না প্রতিবেশী কারও বাড়িতে। এ অবস্থায় পরিবারের কারও মৃত্যু হলে কবর কোথায় হবে, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন সত্তোরর্ধ্ব নূরজাহানসহ একঘরে থাকা চার পরিবারের সদস্যরা।
সম্প্রতি নওগাঁও গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, গ্রামের পশ্চিমে দিকে একটি কাঁচা রাস্তার উত্তর পাশে পাশাপাশি জাফর ও তাঁর দুই ভাইয়ের বাড়ি। সেখান থেকে প্রায় ২০০ গজ পশ্চিমে জাফর আলীর কাকা জিলাল আলীর বাড়ি। বাড়ির নারী সদস্যদের একজন বাড়ির দরজার সামনে বসে আছেন, আরেকজন ঘরের জানালার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন; আর জিলাল আলীর স্ত্রী বাড়ির সামনে মুদিদোকান করছেন। পুরুষদের কেউ জমিতে কাজ করতে গেছেন। কেউ আছেন এলাকার বাইরে।
এ বিষয়ে একঘরে হয়ে থাকা জিলাল উদ্দিন বলেন, ‘এক যুগ ধরে আমার তিন ভাতিজার পরিবারসহ আমার পরিবারকে একঘরে করা হয়েছে। প্রভাবশালী মোড়লদের নিষেধাজ্ঞার কারণে ১২ বছর আগের ছোট মেয়েরা এখন বড় হলেও এলাকায় রেখে তাদের বিয়ে দিতে না পারা ও নানা সামাজিক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।’
জিলাল উদ্দিন আক্ষেপের সঙ্গে বলেন, ‘বড় মেয়েকে গ্রামে রেখে বিয়ে দিতে না পারায় মানিকগঞ্জে আমার এক আত্মীয়ের বাসায় রেখে বিয়ে দিয়েছি। আমি গরিব মানুষ অনেক টাকা খরচ হয়েছে। এখন ছোট মেয়েটা বড় হয়েছে, সে এখন অনার্সে পড়ছে। তাকে কীভাবে বিয়ে দেব চিন্তায় আছি। আমার ছেলেটা কারও বাড়িতে যেতে পারেন না, কারও সঙ্গে মিশতে পারেন না। আমি স্বাধীন দেশে বসবাস করে স্বাধীনভাবে চলতে পারছি না। স্বাধীনভাবে বাঁচতে চাই। আমি সরকারের হস্তক্ষেপ চাই।’
‘গ্রামের সালিস বিচারে মেয়েটিকে দোররা মারার ঘটনা আমি প্রতিবাদ করি। তাই আমাদের একঘরে করে রাখছে গ্রামের মাতবরেরা। গ্রামের কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে আমরা যেতে পারি না। মসজিদ, মাদ্রাসায় আমরা কিছু (অনুদান) দিতে পারি না। এটা আমাদের জন্য শুধু কষ্টের না, লজ্জারও।’ বলেন, একঘরে থাকা জাফর আলী।
জাফর আলীর স্ত্রী লিপি বেগম বলেন, ‘কোরবানির ঈদে মাদ্রাসার মাঠে কোরবানির গোশত আনতে গেলে আমাগো পোলাপানরে গোশত দ্যায় না। পোলাপান খালি হাতে ফিরে আসে, এগুলো দেখে আমাগো কষ্ট লাগে।’
‘আমাগো একঘরে রাখায় ইচ্ছে থাকলেও প্রতিবেশীর সঙ্গে কথা বলতে পারি না। মন ছুটলে যেতে পারি না নিজের প্রতিবেশীর বাড়িতে। এই অবস্থায় পরিবারের কারও মৃত্যু হলে কবর কোথায় হবে তা নিয়ে চিন্তায় আছি।’ বলেন, সত্তোরর্ধ্ব নূরজাহান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রতিবেশী বলেন, ‘জাফর ও তাঁর ভাইয়েরা খেটে খাওয়া মানুষ। গ্রামের কেউ তাঁদের বাড়িতে কোনো অনুষ্ঠানে গেলে এক হাজার টাকা জরিমানা করা হবে বলে মাতবরেরা হুঁশিয়ার করে দেন। গ্রামের অনেকেই তাঁদের বাড়িতে যান না, তাঁরাও কারও বাড়িতে আসেন না।’
চার পরিবারেকে একঘরে রাখার কথা স্বীকার করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আব্দুর হান্নান হানিফ বলেন, ‘বিষয়টি বেশ কয়েকবার মীমাংসা করে দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। ভুক্তভোগী ওই পরিবারের লোকজনদের মাতবরদের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা কেউ যাননি।’
তবে ওই পরিবারগুলোকে একঘরে করে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মাতবরেরা। এ ব্যাপারে সাবেক ইউপি সদস্য ও প্রধান অভিযুক্ত আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘চার পরিবারকে একঘরে রাখার কথা সত্য নয়। সমাজের লোকজনের সঙ্গে ওই পরিবারের সদস্য মেলামেশায় কোনো বিধিনিষেধ নেই।’ তবে তাদের ‘আচরণের কারণে’ সমাজের কিছু বিষয়ে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বলে স্বীকার করেন তিনি।
একঘরে করার বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন ইউএনও শান্তা রহমান। তিনি বলেন, ‘আগামী গণশুনানিতে ভুক্তভোগীসহ সংশ্লিষ্টদের ডেকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে। অভিযোগের বিষয়টি সত্য হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

একই গ্রামের হিন্দু ছেলের সঙ্গে মুসলিম মেয়ের বন্ধুত্ব। একপর্যায়ে পালিয়ে বিয়ে। মুসলিম ধর্মাবলম্বী হয়ে অন্য ধর্মের ছেলেকে বিয়ে মেনে নেননি গ্রামের প্রভাবশালী মাতবরেরা। সালিস বসিয়ে সাজা দেওয়া হয় মেয়েকে, সঙ্গে বিয়েতে সাহায্য করার অভিযোগ এনে প্রতিবেশী চারজনকে করা হয় একঘরে। এরই মধ্যে ঘটনার এক যুগ পেরিয়ে গেছে, তবুও কাটেনি রেশ। একঘরে রয়েছে ওই চার পরিবার। তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে। তবে ওই ছেলে ও মেয়ের পরিবারের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা দেননি মাতবরেরা।
ঘটনাটি মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দরগ্রাম ইউনিয়নের নওগাঁও গ্রামের। সমাজপতিদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ওই চার পরিবার সমাজের কারও সঙ্গে কথা বললে গুনতে হবে এক হাজার টাকা। এমনকি কারও বাড়ির দাওয়াতে যেতে পারবেন না তাঁরা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, মিথ্যা অপবাদে দীর্ঘ ১২ বছর একঘরে রাখায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এখন সামাজিকভাবে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাঁদের। ১২ বছর আগের পরিবারের ছোট ছেলে-মেয়েরা এখন বড় হয়েছে। একঘরে হয়ে থাকায় তাঁদের বিয়ে হচ্ছে না। এ বিষয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন জাফর আলী নামের এক ভুক্তভোগী।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালে নওগাঁও গ্রামের হিন্দুধর্মের এক ছেলের সঙ্গে মুসলিম মেয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে করেন। ওই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর তাঁদের গ্রামে ধরে এনে সালিস বসানো হয়। আব্দুর রাজ্জাক, আবু হোসেন, বাবু, শফিক মন্ডল, সাঈদ আলীসহ গ্রামের প্রভাবশালী মাতবরেরা সালিস বসান।
সালিসে মেয়েকে জুতা মারা হয়। তাঁদের সহযোগিতা করার অভিযোগ এনে ওই মেয়ের প্রতিবেশী কৃষক জাফর আলী, তাঁর ভাই সাদেক আলী ও আলম হোসেন এবং সাদেকের চাচা জিলাল উদ্দিনকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এমনকি সমাজের কারও সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে এক হাজার টাকা জরিমানা, একঘরে থাকা চার পরিবারের বাড়িতে কেউ যেতে পারবেন না এবং তাঁরাও সমাজের কারও বাড়িতে যেতে পারবেন না—সালিসে এমন নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
এ ছাড়া গ্রামের মসজিদ, মাদ্রাসা ও ঈদগাহে কোনো অনুদান দিতে পারবেন না বলেও নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়।
এদিকে সালিস ডাকলে ওই হিন্দু ছেলে পালিয়ে যান। এরপর তাঁদের বিয়েও ভেঙে যায়।
একঘরে থাকা জাফর আলীর পঞ্চাশোর্ধ্ব স্ত্রী লিপি বেগম প্রায়ই ঘরের দরজার পাশে ভেজা চোখে বসে থাকেন। লিপি বেগমের পাশের ঘরে থাকা সাদেক আলীর স্ত্রী জাহানারা বেগমেরও একই অবস্থা। জাহানারা বেগম ঘরের জানালার সামনে দাঁড়িয়ে অপলক দৃষ্টিতে দেখেন রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা মানুষদের।
এলাকার প্রভাবশালী একটি মহল তাঁদের একঘরে করে রাখায় প্রতিবেশী কারও সঙ্গে কথা বলতে পারেন না তাঁরা। মন চাইলেও যেতে পারেন না প্রতিবেশী কারও বাড়িতে। এ অবস্থায় পরিবারের কারও মৃত্যু হলে কবর কোথায় হবে, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন সত্তোরর্ধ্ব নূরজাহানসহ একঘরে থাকা চার পরিবারের সদস্যরা।
সম্প্রতি নওগাঁও গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, গ্রামের পশ্চিমে দিকে একটি কাঁচা রাস্তার উত্তর পাশে পাশাপাশি জাফর ও তাঁর দুই ভাইয়ের বাড়ি। সেখান থেকে প্রায় ২০০ গজ পশ্চিমে জাফর আলীর কাকা জিলাল আলীর বাড়ি। বাড়ির নারী সদস্যদের একজন বাড়ির দরজার সামনে বসে আছেন, আরেকজন ঘরের জানালার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন; আর জিলাল আলীর স্ত্রী বাড়ির সামনে মুদিদোকান করছেন। পুরুষদের কেউ জমিতে কাজ করতে গেছেন। কেউ আছেন এলাকার বাইরে।
এ বিষয়ে একঘরে হয়ে থাকা জিলাল উদ্দিন বলেন, ‘এক যুগ ধরে আমার তিন ভাতিজার পরিবারসহ আমার পরিবারকে একঘরে করা হয়েছে। প্রভাবশালী মোড়লদের নিষেধাজ্ঞার কারণে ১২ বছর আগের ছোট মেয়েরা এখন বড় হলেও এলাকায় রেখে তাদের বিয়ে দিতে না পারা ও নানা সামাজিক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।’
জিলাল উদ্দিন আক্ষেপের সঙ্গে বলেন, ‘বড় মেয়েকে গ্রামে রেখে বিয়ে দিতে না পারায় মানিকগঞ্জে আমার এক আত্মীয়ের বাসায় রেখে বিয়ে দিয়েছি। আমি গরিব মানুষ অনেক টাকা খরচ হয়েছে। এখন ছোট মেয়েটা বড় হয়েছে, সে এখন অনার্সে পড়ছে। তাকে কীভাবে বিয়ে দেব চিন্তায় আছি। আমার ছেলেটা কারও বাড়িতে যেতে পারেন না, কারও সঙ্গে মিশতে পারেন না। আমি স্বাধীন দেশে বসবাস করে স্বাধীনভাবে চলতে পারছি না। স্বাধীনভাবে বাঁচতে চাই। আমি সরকারের হস্তক্ষেপ চাই।’
‘গ্রামের সালিস বিচারে মেয়েটিকে দোররা মারার ঘটনা আমি প্রতিবাদ করি। তাই আমাদের একঘরে করে রাখছে গ্রামের মাতবরেরা। গ্রামের কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে আমরা যেতে পারি না। মসজিদ, মাদ্রাসায় আমরা কিছু (অনুদান) দিতে পারি না। এটা আমাদের জন্য শুধু কষ্টের না, লজ্জারও।’ বলেন, একঘরে থাকা জাফর আলী।
জাফর আলীর স্ত্রী লিপি বেগম বলেন, ‘কোরবানির ঈদে মাদ্রাসার মাঠে কোরবানির গোশত আনতে গেলে আমাগো পোলাপানরে গোশত দ্যায় না। পোলাপান খালি হাতে ফিরে আসে, এগুলো দেখে আমাগো কষ্ট লাগে।’
‘আমাগো একঘরে রাখায় ইচ্ছে থাকলেও প্রতিবেশীর সঙ্গে কথা বলতে পারি না। মন ছুটলে যেতে পারি না নিজের প্রতিবেশীর বাড়িতে। এই অবস্থায় পরিবারের কারও মৃত্যু হলে কবর কোথায় হবে তা নিয়ে চিন্তায় আছি।’ বলেন, সত্তোরর্ধ্ব নূরজাহান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রতিবেশী বলেন, ‘জাফর ও তাঁর ভাইয়েরা খেটে খাওয়া মানুষ। গ্রামের কেউ তাঁদের বাড়িতে কোনো অনুষ্ঠানে গেলে এক হাজার টাকা জরিমানা করা হবে বলে মাতবরেরা হুঁশিয়ার করে দেন। গ্রামের অনেকেই তাঁদের বাড়িতে যান না, তাঁরাও কারও বাড়িতে আসেন না।’
চার পরিবারেকে একঘরে রাখার কথা স্বীকার করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আব্দুর হান্নান হানিফ বলেন, ‘বিষয়টি বেশ কয়েকবার মীমাংসা করে দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। ভুক্তভোগী ওই পরিবারের লোকজনদের মাতবরদের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা কেউ যাননি।’
তবে ওই পরিবারগুলোকে একঘরে করে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মাতবরেরা। এ ব্যাপারে সাবেক ইউপি সদস্য ও প্রধান অভিযুক্ত আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘চার পরিবারকে একঘরে রাখার কথা সত্য নয়। সমাজের লোকজনের সঙ্গে ওই পরিবারের সদস্য মেলামেশায় কোনো বিধিনিষেধ নেই।’ তবে তাদের ‘আচরণের কারণে’ সমাজের কিছু বিষয়ে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বলে স্বীকার করেন তিনি।
একঘরে করার বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন ইউএনও শান্তা রহমান। তিনি বলেন, ‘আগামী গণশুনানিতে ভুক্তভোগীসহ সংশ্লিষ্টদের ডেকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে। অভিযোগের বিষয়টি সত্য হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

একই গ্রামের হিন্দু ছেলের সঙ্গে মুসলিম মেয়ের বন্ধুত্ব। একপর্যায়ে পালিয়ে বিয়ে। মুসলিম ধর্মাবলম্বী হয়ে অন্য ধর্মের ছেলেকে বিয়ে মেনে নেননি গ্রামের প্রভাবশালী মাতবরেরা। সালিস বসিয়ে সাজা দেওয়া হয় মেয়েকে, সঙ্গে বিয়েতে সাহায্য করার অভিযোগ এনে প্রতিবেশী চারজনকে করা হয় একঘরে। এরই মধ্যে ঘটনার এক যুগ পেরিয়ে গেছে, তবুও কাটেনি রেশ। একঘরে রয়েছে ওই চার পরিবার। তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে। তবে ওই ছেলে ও মেয়ের পরিবারের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা দেননি মাতবরেরা।
ঘটনাটি মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দরগ্রাম ইউনিয়নের নওগাঁও গ্রামের। সমাজপতিদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ওই চার পরিবার সমাজের কারও সঙ্গে কথা বললে গুনতে হবে এক হাজার টাকা। এমনকি কারও বাড়ির দাওয়াতে যেতে পারবেন না তাঁরা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, মিথ্যা অপবাদে দীর্ঘ ১২ বছর একঘরে রাখায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এখন সামাজিকভাবে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাঁদের। ১২ বছর আগের পরিবারের ছোট ছেলে-মেয়েরা এখন বড় হয়েছে। একঘরে হয়ে থাকায় তাঁদের বিয়ে হচ্ছে না। এ বিষয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন জাফর আলী নামের এক ভুক্তভোগী।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালে নওগাঁও গ্রামের হিন্দুধর্মের এক ছেলের সঙ্গে মুসলিম মেয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে করেন। ওই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর তাঁদের গ্রামে ধরে এনে সালিস বসানো হয়। আব্দুর রাজ্জাক, আবু হোসেন, বাবু, শফিক মন্ডল, সাঈদ আলীসহ গ্রামের প্রভাবশালী মাতবরেরা সালিস বসান।
সালিসে মেয়েকে জুতা মারা হয়। তাঁদের সহযোগিতা করার অভিযোগ এনে ওই মেয়ের প্রতিবেশী কৃষক জাফর আলী, তাঁর ভাই সাদেক আলী ও আলম হোসেন এবং সাদেকের চাচা জিলাল উদ্দিনকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এমনকি সমাজের কারও সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে এক হাজার টাকা জরিমানা, একঘরে থাকা চার পরিবারের বাড়িতে কেউ যেতে পারবেন না এবং তাঁরাও সমাজের কারও বাড়িতে যেতে পারবেন না—সালিসে এমন নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
এ ছাড়া গ্রামের মসজিদ, মাদ্রাসা ও ঈদগাহে কোনো অনুদান দিতে পারবেন না বলেও নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়।
এদিকে সালিস ডাকলে ওই হিন্দু ছেলে পালিয়ে যান। এরপর তাঁদের বিয়েও ভেঙে যায়।
একঘরে থাকা জাফর আলীর পঞ্চাশোর্ধ্ব স্ত্রী লিপি বেগম প্রায়ই ঘরের দরজার পাশে ভেজা চোখে বসে থাকেন। লিপি বেগমের পাশের ঘরে থাকা সাদেক আলীর স্ত্রী জাহানারা বেগমেরও একই অবস্থা। জাহানারা বেগম ঘরের জানালার সামনে দাঁড়িয়ে অপলক দৃষ্টিতে দেখেন রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা মানুষদের।
এলাকার প্রভাবশালী একটি মহল তাঁদের একঘরে করে রাখায় প্রতিবেশী কারও সঙ্গে কথা বলতে পারেন না তাঁরা। মন চাইলেও যেতে পারেন না প্রতিবেশী কারও বাড়িতে। এ অবস্থায় পরিবারের কারও মৃত্যু হলে কবর কোথায় হবে, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন সত্তোরর্ধ্ব নূরজাহানসহ একঘরে থাকা চার পরিবারের সদস্যরা।
সম্প্রতি নওগাঁও গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, গ্রামের পশ্চিমে দিকে একটি কাঁচা রাস্তার উত্তর পাশে পাশাপাশি জাফর ও তাঁর দুই ভাইয়ের বাড়ি। সেখান থেকে প্রায় ২০০ গজ পশ্চিমে জাফর আলীর কাকা জিলাল আলীর বাড়ি। বাড়ির নারী সদস্যদের একজন বাড়ির দরজার সামনে বসে আছেন, আরেকজন ঘরের জানালার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন; আর জিলাল আলীর স্ত্রী বাড়ির সামনে মুদিদোকান করছেন। পুরুষদের কেউ জমিতে কাজ করতে গেছেন। কেউ আছেন এলাকার বাইরে।
এ বিষয়ে একঘরে হয়ে থাকা জিলাল উদ্দিন বলেন, ‘এক যুগ ধরে আমার তিন ভাতিজার পরিবারসহ আমার পরিবারকে একঘরে করা হয়েছে। প্রভাবশালী মোড়লদের নিষেধাজ্ঞার কারণে ১২ বছর আগের ছোট মেয়েরা এখন বড় হলেও এলাকায় রেখে তাদের বিয়ে দিতে না পারা ও নানা সামাজিক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।’
জিলাল উদ্দিন আক্ষেপের সঙ্গে বলেন, ‘বড় মেয়েকে গ্রামে রেখে বিয়ে দিতে না পারায় মানিকগঞ্জে আমার এক আত্মীয়ের বাসায় রেখে বিয়ে দিয়েছি। আমি গরিব মানুষ অনেক টাকা খরচ হয়েছে। এখন ছোট মেয়েটা বড় হয়েছে, সে এখন অনার্সে পড়ছে। তাকে কীভাবে বিয়ে দেব চিন্তায় আছি। আমার ছেলেটা কারও বাড়িতে যেতে পারেন না, কারও সঙ্গে মিশতে পারেন না। আমি স্বাধীন দেশে বসবাস করে স্বাধীনভাবে চলতে পারছি না। স্বাধীনভাবে বাঁচতে চাই। আমি সরকারের হস্তক্ষেপ চাই।’
‘গ্রামের সালিস বিচারে মেয়েটিকে দোররা মারার ঘটনা আমি প্রতিবাদ করি। তাই আমাদের একঘরে করে রাখছে গ্রামের মাতবরেরা। গ্রামের কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে আমরা যেতে পারি না। মসজিদ, মাদ্রাসায় আমরা কিছু (অনুদান) দিতে পারি না। এটা আমাদের জন্য শুধু কষ্টের না, লজ্জারও।’ বলেন, একঘরে থাকা জাফর আলী।
জাফর আলীর স্ত্রী লিপি বেগম বলেন, ‘কোরবানির ঈদে মাদ্রাসার মাঠে কোরবানির গোশত আনতে গেলে আমাগো পোলাপানরে গোশত দ্যায় না। পোলাপান খালি হাতে ফিরে আসে, এগুলো দেখে আমাগো কষ্ট লাগে।’
‘আমাগো একঘরে রাখায় ইচ্ছে থাকলেও প্রতিবেশীর সঙ্গে কথা বলতে পারি না। মন ছুটলে যেতে পারি না নিজের প্রতিবেশীর বাড়িতে। এই অবস্থায় পরিবারের কারও মৃত্যু হলে কবর কোথায় হবে তা নিয়ে চিন্তায় আছি।’ বলেন, সত্তোরর্ধ্ব নূরজাহান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রতিবেশী বলেন, ‘জাফর ও তাঁর ভাইয়েরা খেটে খাওয়া মানুষ। গ্রামের কেউ তাঁদের বাড়িতে কোনো অনুষ্ঠানে গেলে এক হাজার টাকা জরিমানা করা হবে বলে মাতবরেরা হুঁশিয়ার করে দেন। গ্রামের অনেকেই তাঁদের বাড়িতে যান না, তাঁরাও কারও বাড়িতে আসেন না।’
চার পরিবারেকে একঘরে রাখার কথা স্বীকার করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আব্দুর হান্নান হানিফ বলেন, ‘বিষয়টি বেশ কয়েকবার মীমাংসা করে দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। ভুক্তভোগী ওই পরিবারের লোকজনদের মাতবরদের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা কেউ যাননি।’
তবে ওই পরিবারগুলোকে একঘরে করে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মাতবরেরা। এ ব্যাপারে সাবেক ইউপি সদস্য ও প্রধান অভিযুক্ত আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘চার পরিবারকে একঘরে রাখার কথা সত্য নয়। সমাজের লোকজনের সঙ্গে ওই পরিবারের সদস্য মেলামেশায় কোনো বিধিনিষেধ নেই।’ তবে তাদের ‘আচরণের কারণে’ সমাজের কিছু বিষয়ে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বলে স্বীকার করেন তিনি।
একঘরে করার বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন ইউএনও শান্তা রহমান। তিনি বলেন, ‘আগামী গণশুনানিতে ভুক্তভোগীসহ সংশ্লিষ্টদের ডেকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে। অভিযোগের বিষয়টি সত্য হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

একই গ্রামের হিন্দু ছেলের সঙ্গে মুসলিম মেয়ের বন্ধুত্ব। একপর্যায়ে পালিয়ে বিয়ে। মুসলিম ধর্মাবলম্বী হয়ে অন্য ধর্মের ছেলেকে বিয়ে মেনে নেননি গ্রামের প্রভাবশালী মাতবরেরা। সালিস বসিয়ে সাজা দেওয়া হয় মেয়েকে, সঙ্গে বিয়েতে সাহায্য করার অভিযোগ এনে প্রতিবেশী চারজনকে করা হয় একঘরে। এরই মধ্যে ঘটনার এক যুগ পেরিয়ে গেছে, তবুও কাটেনি রেশ। একঘরে রয়েছে ওই চার পরিবার। তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে। তবে ওই ছেলে ও মেয়ের পরিবারের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা দেননি মাতবরেরা।
ঘটনাটি মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দরগ্রাম ইউনিয়নের নওগাঁও গ্রামের। সমাজপতিদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ওই চার পরিবার সমাজের কারও সঙ্গে কথা বললে গুনতে হবে এক হাজার টাকা। এমনকি কারও বাড়ির দাওয়াতে যেতে পারবেন না তাঁরা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, মিথ্যা অপবাদে দীর্ঘ ১২ বছর একঘরে রাখায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এখন সামাজিকভাবে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাঁদের। ১২ বছর আগের পরিবারের ছোট ছেলে-মেয়েরা এখন বড় হয়েছে। একঘরে হয়ে থাকায় তাঁদের বিয়ে হচ্ছে না। এ বিষয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন জাফর আলী নামের এক ভুক্তভোগী।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালে নওগাঁও গ্রামের হিন্দুধর্মের এক ছেলের সঙ্গে মুসলিম মেয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে করেন। ওই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর তাঁদের গ্রামে ধরে এনে সালিস বসানো হয়। আব্দুর রাজ্জাক, আবু হোসেন, বাবু, শফিক মন্ডল, সাঈদ আলীসহ গ্রামের প্রভাবশালী মাতবরেরা সালিস বসান।
সালিসে মেয়েকে জুতা মারা হয়। তাঁদের সহযোগিতা করার অভিযোগ এনে ওই মেয়ের প্রতিবেশী কৃষক জাফর আলী, তাঁর ভাই সাদেক আলী ও আলম হোসেন এবং সাদেকের চাচা জিলাল উদ্দিনকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এমনকি সমাজের কারও সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে এক হাজার টাকা জরিমানা, একঘরে থাকা চার পরিবারের বাড়িতে কেউ যেতে পারবেন না এবং তাঁরাও সমাজের কারও বাড়িতে যেতে পারবেন না—সালিসে এমন নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
এ ছাড়া গ্রামের মসজিদ, মাদ্রাসা ও ঈদগাহে কোনো অনুদান দিতে পারবেন না বলেও নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়।
এদিকে সালিস ডাকলে ওই হিন্দু ছেলে পালিয়ে যান। এরপর তাঁদের বিয়েও ভেঙে যায়।
একঘরে থাকা জাফর আলীর পঞ্চাশোর্ধ্ব স্ত্রী লিপি বেগম প্রায়ই ঘরের দরজার পাশে ভেজা চোখে বসে থাকেন। লিপি বেগমের পাশের ঘরে থাকা সাদেক আলীর স্ত্রী জাহানারা বেগমেরও একই অবস্থা। জাহানারা বেগম ঘরের জানালার সামনে দাঁড়িয়ে অপলক দৃষ্টিতে দেখেন রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা মানুষদের।
এলাকার প্রভাবশালী একটি মহল তাঁদের একঘরে করে রাখায় প্রতিবেশী কারও সঙ্গে কথা বলতে পারেন না তাঁরা। মন চাইলেও যেতে পারেন না প্রতিবেশী কারও বাড়িতে। এ অবস্থায় পরিবারের কারও মৃত্যু হলে কবর কোথায় হবে, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন সত্তোরর্ধ্ব নূরজাহানসহ একঘরে থাকা চার পরিবারের সদস্যরা।
সম্প্রতি নওগাঁও গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, গ্রামের পশ্চিমে দিকে একটি কাঁচা রাস্তার উত্তর পাশে পাশাপাশি জাফর ও তাঁর দুই ভাইয়ের বাড়ি। সেখান থেকে প্রায় ২০০ গজ পশ্চিমে জাফর আলীর কাকা জিলাল আলীর বাড়ি। বাড়ির নারী সদস্যদের একজন বাড়ির দরজার সামনে বসে আছেন, আরেকজন ঘরের জানালার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন; আর জিলাল আলীর স্ত্রী বাড়ির সামনে মুদিদোকান করছেন। পুরুষদের কেউ জমিতে কাজ করতে গেছেন। কেউ আছেন এলাকার বাইরে।
এ বিষয়ে একঘরে হয়ে থাকা জিলাল উদ্দিন বলেন, ‘এক যুগ ধরে আমার তিন ভাতিজার পরিবারসহ আমার পরিবারকে একঘরে করা হয়েছে। প্রভাবশালী মোড়লদের নিষেধাজ্ঞার কারণে ১২ বছর আগের ছোট মেয়েরা এখন বড় হলেও এলাকায় রেখে তাদের বিয়ে দিতে না পারা ও নানা সামাজিক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।’
জিলাল উদ্দিন আক্ষেপের সঙ্গে বলেন, ‘বড় মেয়েকে গ্রামে রেখে বিয়ে দিতে না পারায় মানিকগঞ্জে আমার এক আত্মীয়ের বাসায় রেখে বিয়ে দিয়েছি। আমি গরিব মানুষ অনেক টাকা খরচ হয়েছে। এখন ছোট মেয়েটা বড় হয়েছে, সে এখন অনার্সে পড়ছে। তাকে কীভাবে বিয়ে দেব চিন্তায় আছি। আমার ছেলেটা কারও বাড়িতে যেতে পারেন না, কারও সঙ্গে মিশতে পারেন না। আমি স্বাধীন দেশে বসবাস করে স্বাধীনভাবে চলতে পারছি না। স্বাধীনভাবে বাঁচতে চাই। আমি সরকারের হস্তক্ষেপ চাই।’
‘গ্রামের সালিস বিচারে মেয়েটিকে দোররা মারার ঘটনা আমি প্রতিবাদ করি। তাই আমাদের একঘরে করে রাখছে গ্রামের মাতবরেরা। গ্রামের কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে আমরা যেতে পারি না। মসজিদ, মাদ্রাসায় আমরা কিছু (অনুদান) দিতে পারি না। এটা আমাদের জন্য শুধু কষ্টের না, লজ্জারও।’ বলেন, একঘরে থাকা জাফর আলী।
জাফর আলীর স্ত্রী লিপি বেগম বলেন, ‘কোরবানির ঈদে মাদ্রাসার মাঠে কোরবানির গোশত আনতে গেলে আমাগো পোলাপানরে গোশত দ্যায় না। পোলাপান খালি হাতে ফিরে আসে, এগুলো দেখে আমাগো কষ্ট লাগে।’
‘আমাগো একঘরে রাখায় ইচ্ছে থাকলেও প্রতিবেশীর সঙ্গে কথা বলতে পারি না। মন ছুটলে যেতে পারি না নিজের প্রতিবেশীর বাড়িতে। এই অবস্থায় পরিবারের কারও মৃত্যু হলে কবর কোথায় হবে তা নিয়ে চিন্তায় আছি।’ বলেন, সত্তোরর্ধ্ব নূরজাহান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রতিবেশী বলেন, ‘জাফর ও তাঁর ভাইয়েরা খেটে খাওয়া মানুষ। গ্রামের কেউ তাঁদের বাড়িতে কোনো অনুষ্ঠানে গেলে এক হাজার টাকা জরিমানা করা হবে বলে মাতবরেরা হুঁশিয়ার করে দেন। গ্রামের অনেকেই তাঁদের বাড়িতে যান না, তাঁরাও কারও বাড়িতে আসেন না।’
চার পরিবারেকে একঘরে রাখার কথা স্বীকার করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আব্দুর হান্নান হানিফ বলেন, ‘বিষয়টি বেশ কয়েকবার মীমাংসা করে দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। ভুক্তভোগী ওই পরিবারের লোকজনদের মাতবরদের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা কেউ যাননি।’
তবে ওই পরিবারগুলোকে একঘরে করে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মাতবরেরা। এ ব্যাপারে সাবেক ইউপি সদস্য ও প্রধান অভিযুক্ত আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘চার পরিবারকে একঘরে রাখার কথা সত্য নয়। সমাজের লোকজনের সঙ্গে ওই পরিবারের সদস্য মেলামেশায় কোনো বিধিনিষেধ নেই।’ তবে তাদের ‘আচরণের কারণে’ সমাজের কিছু বিষয়ে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বলে স্বীকার করেন তিনি।
একঘরে করার বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন ইউএনও শান্তা রহমান। তিনি বলেন, ‘আগামী গণশুনানিতে ভুক্তভোগীসহ সংশ্লিষ্টদের ডেকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে। অভিযোগের বিষয়টি সত্য হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

সাতক্ষীরার বহুল প্রতীক্ষিত রেললাইনের নির্মাণকাজ এগোচ্ছে কচ্ছপগতিতে। এক যুগ আগে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর গেল মাসে যশোরের নাভারণ থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের ডিপিপি প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগে
ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার আমুয়া ইউনিয়নে হাসপাতালসংলগ্ন ধোপাবাড়ির খালের ওপর সেতুর নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ শেষ হয়নি। দুই পাড়ে খুঁটি (পিলার) নির্মাণ করে বন্ধ রয়েছে কাজ। এতে পাশের ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সেতু ব্যবহার করতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।
৪ ঘণ্টা আগে
ময়মনসিংহের নান্দাইলে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতা হাবিবুর রহমান বাচ্চুর বিরুদ্ধে নরসুন্দা নদীর পাড় দখল করে পাকা ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। মুশুল্লি ইউনিয়নের তারের ঘাট বাজারসংলগ্ন নদীর জায়গা দখল করে দোতলা মার্কেট নির্মাণ করছেন তিনি।
৪ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুরের চারটি আসনের সব কটিতে প্রাথমিক মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। নেতা-কর্মীদের নিয়ে এলাকায় ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছেন উভয় দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
৫ ঘণ্টা আগেআবুল কাসেম, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার বহুল প্রতীক্ষিত রেললাইনের নির্মাণকাজ এগোচ্ছে কচ্ছপগতিতে। এক যুগ আগে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর গেল মাসে যশোরের নাভারণ থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের ডিপিপি প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
সাতক্ষীরাবাসী বলছে, শত বছরের প্রতীক্ষিত রেললাইন নির্মিত হলে একদিকে যেমন সুন্দরবনকেন্দ্রিক পর্যটন বিকশিত হবে, অন্যদিকে পণ্য পরিবহনে খরচ কমায় ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ও অন্যান্য সূত্রে জানা যায়, ১৯১৪ সালে ব্রিটিশ ভাইসরয় সাতক্ষীরাকে রেললাইনে সংযুক্ত করে সুন্দরবন পর্যন্ত সম্প্রসারণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই নির্দেশনা বাস্তবায়িত হয়নি। ১৯৫৮ সালে সাতক্ষীরা-ভেটখালি সড়ক নির্মাণের সময় জমি অধিগ্রহণ করেও নির্মিত হয়নি রেললাইন।
দীর্ঘকাল পরে ২০১০ সালে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে এক জনসভায় তৎকালীন সরকারপ্রধান নাভারণ-সাতক্ষীরা-মুন্সিগঞ্জ রেললাইন নির্মাণের ঘোষণা দেন। ২০১৩ সালে সম্ভাব্যতা যাচাই করে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দেয় অস্ট্রেলিয়ার ক্যানারেইল কোম্পানি লিমিটেড। সম্ভাব্যতা যাচাই করতে খরচ হয় ১১ কোটি টাকা। সম্ভাব্যতা ম্যাপে ৯৮ কিলোমিটার রেললাইনে ৮টি স্টেশনের প্রস্তাব রাখা হয়।
এরপর আবারও থেমে যায় রেললাইন নির্মাণের উদোগ। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর রেললাইন স্থাপনের দাবিতে সাতক্ষীরায় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের ব্যানারে আন্দোলন শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে নাভারণ-সাতক্ষীরা রেললাইন স্থাপনের উদ্যোগের অংশ হিসেবে যশোর রেলওয়ের পক্ষ থেকে সরেজমিন পরিদর্শন করা হয়। এরপর গত মাসে যশোরের নাভারণ থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত ৫টি স্টেশনযুক্ত ৪২ কিলোমিটার রেললাইনের ডিপিপি প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র।
সাতক্ষীরার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শেষ জেলা সাতক্ষীরায় ২২ লাখের বেশি মানুষের বাস। এ জেলা থেকে দেশের অন্যান্য স্থানে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম সড়কপথ। সুন্দরবন, চিংড়ি, আম ও ভোমরা বন্দরের কারণে অর্থনৈতিকভাবে ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠায় সাতক্ষীরায় রেললাইন নির্মাণ এখন সময়ের দাবি।
জেলা চিংড়ি চাষি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. আবুল কালাম বাবলা বলেন, নৌপথ ও আকাশপথে যাতায়াতের কোনো সুযোগ নেই জেলাবাসীর। রেললাইন নির্মিত হলে মৎস্য খাতের নতুন দিকের সূচনা হবে।
সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী নূর খান বাবুল বলেন, ‘সাতক্ষীরা থেকে আমরা যে পরিমাণ রাজস্ব সরকারকে দিই, সে ধরনের উন্নয়ন চোখে পড়ে না।’
ভোমরা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবু মুসা বলেন, কলকাতা থেকে ভোমরা স্থলবন্দরের দূরত্ব মাত্র ৬০ কিলোমিটার। তাই রেললাইন হলে ভোমরায় ব্যবসা-বাণিজ্যের চিত্র পাল্টে যাবে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক আফরোজা আখতার বলেন, ‘জিআই পণ্য আম, চিংড়ি এবং ভোমরা স্থলবন্দরের পণ্য পরিবহনের জন্য সাতক্ষীরায় রেললাইন নির্মাণ জরুরি। আমি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রেললাইন নির্মাণের জন্য যত প্রচেষ্টা রয়েছে, সেটা করব।’

সাতক্ষীরার বহুল প্রতীক্ষিত রেললাইনের নির্মাণকাজ এগোচ্ছে কচ্ছপগতিতে। এক যুগ আগে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর গেল মাসে যশোরের নাভারণ থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের ডিপিপি প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
সাতক্ষীরাবাসী বলছে, শত বছরের প্রতীক্ষিত রেললাইন নির্মিত হলে একদিকে যেমন সুন্দরবনকেন্দ্রিক পর্যটন বিকশিত হবে, অন্যদিকে পণ্য পরিবহনে খরচ কমায় ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ও অন্যান্য সূত্রে জানা যায়, ১৯১৪ সালে ব্রিটিশ ভাইসরয় সাতক্ষীরাকে রেললাইনে সংযুক্ত করে সুন্দরবন পর্যন্ত সম্প্রসারণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই নির্দেশনা বাস্তবায়িত হয়নি। ১৯৫৮ সালে সাতক্ষীরা-ভেটখালি সড়ক নির্মাণের সময় জমি অধিগ্রহণ করেও নির্মিত হয়নি রেললাইন।
দীর্ঘকাল পরে ২০১০ সালে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে এক জনসভায় তৎকালীন সরকারপ্রধান নাভারণ-সাতক্ষীরা-মুন্সিগঞ্জ রেললাইন নির্মাণের ঘোষণা দেন। ২০১৩ সালে সম্ভাব্যতা যাচাই করে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দেয় অস্ট্রেলিয়ার ক্যানারেইল কোম্পানি লিমিটেড। সম্ভাব্যতা যাচাই করতে খরচ হয় ১১ কোটি টাকা। সম্ভাব্যতা ম্যাপে ৯৮ কিলোমিটার রেললাইনে ৮টি স্টেশনের প্রস্তাব রাখা হয়।
এরপর আবারও থেমে যায় রেললাইন নির্মাণের উদোগ। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর রেললাইন স্থাপনের দাবিতে সাতক্ষীরায় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের ব্যানারে আন্দোলন শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে নাভারণ-সাতক্ষীরা রেললাইন স্থাপনের উদ্যোগের অংশ হিসেবে যশোর রেলওয়ের পক্ষ থেকে সরেজমিন পরিদর্শন করা হয়। এরপর গত মাসে যশোরের নাভারণ থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত ৫টি স্টেশনযুক্ত ৪২ কিলোমিটার রেললাইনের ডিপিপি প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র।
সাতক্ষীরার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শেষ জেলা সাতক্ষীরায় ২২ লাখের বেশি মানুষের বাস। এ জেলা থেকে দেশের অন্যান্য স্থানে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম সড়কপথ। সুন্দরবন, চিংড়ি, আম ও ভোমরা বন্দরের কারণে অর্থনৈতিকভাবে ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠায় সাতক্ষীরায় রেললাইন নির্মাণ এখন সময়ের দাবি।
জেলা চিংড়ি চাষি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. আবুল কালাম বাবলা বলেন, নৌপথ ও আকাশপথে যাতায়াতের কোনো সুযোগ নেই জেলাবাসীর। রেললাইন নির্মিত হলে মৎস্য খাতের নতুন দিকের সূচনা হবে।
সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী নূর খান বাবুল বলেন, ‘সাতক্ষীরা থেকে আমরা যে পরিমাণ রাজস্ব সরকারকে দিই, সে ধরনের উন্নয়ন চোখে পড়ে না।’
ভোমরা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবু মুসা বলেন, কলকাতা থেকে ভোমরা স্থলবন্দরের দূরত্ব মাত্র ৬০ কিলোমিটার। তাই রেললাইন হলে ভোমরায় ব্যবসা-বাণিজ্যের চিত্র পাল্টে যাবে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক আফরোজা আখতার বলেন, ‘জিআই পণ্য আম, চিংড়ি এবং ভোমরা স্থলবন্দরের পণ্য পরিবহনের জন্য সাতক্ষীরায় রেললাইন নির্মাণ জরুরি। আমি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রেললাইন নির্মাণের জন্য যত প্রচেষ্টা রয়েছে, সেটা করব।’

একই গ্রামের হিন্দু ছেলের সঙ্গে মুসলিম মেয়ের বন্ধুত্ব। একপর্যায়ে পালিয়ে বিয়ে। মুসলিম ধর্মাবলম্বী হয়ে অন্য ধর্মের ছেলেকে বিয়ে মেনে নেননি গ্রামের প্রভাবশালী মাতবরেরা। সালিস বসিয়ে সাজা দেওয়া হয় মেয়েকে, সঙ্গে বিয়েতে সাহায্য করার অভিযোগ এনে প্রতিবেশী চারজনকে করা হয় একঘরে। এরই মধ্যে ঘটনার এক যুগ পেরিয়ে গেছ
১৫ মার্চ ২০২৪
ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার আমুয়া ইউনিয়নে হাসপাতালসংলগ্ন ধোপাবাড়ির খালের ওপর সেতুর নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ শেষ হয়নি। দুই পাড়ে খুঁটি (পিলার) নির্মাণ করে বন্ধ রয়েছে কাজ। এতে পাশের ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সেতু ব্যবহার করতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।
৪ ঘণ্টা আগে
ময়মনসিংহের নান্দাইলে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতা হাবিবুর রহমান বাচ্চুর বিরুদ্ধে নরসুন্দা নদীর পাড় দখল করে পাকা ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। মুশুল্লি ইউনিয়নের তারের ঘাট বাজারসংলগ্ন নদীর জায়গা দখল করে দোতলা মার্কেট নির্মাণ করছেন তিনি।
৪ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুরের চারটি আসনের সব কটিতে প্রাথমিক মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। নেতা-কর্মীদের নিয়ে এলাকায় ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছেন উভয় দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
৫ ঘণ্টা আগেআরিফ রহমান, ঝালকাঠি

ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার আমুয়া ইউনিয়নে হাসপাতালসংলগ্ন ধোপাবাড়ির খালের ওপর সেতুর নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ শেষ হয়নি। দুই পাড়ে খুঁটি (পিলার) নির্মাণ করে বন্ধ রয়েছে কাজ। এতে পাশের ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সেতু ব্যবহার করতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ নড়বড়ে ও ভাঙাচোরা ওই সেতু দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে শিক্ষার্থী, নারী, শিশু ও হাসপাতালে আসা রোগীরা।
উপজেলা প্রকৌশল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সুপ্তি কনস্ট্রাকশন এবং কবির ট্রেডার্স যৌথভাবে ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রকল্পটির কার্যাদেশ পায়। সেতুটি নির্মাণে ৫ কোটি ৪৩ লাখ ১৯ হাজার ৬৮০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। নির্মাণকাজ ২০২২ সালের মে মাসে শুরু হয়। ২০২৩ সালের অক্টোবরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সেতুর নকশা পরিবর্তনের কারণে প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে ৬ কোটি ১৩ লাখ ২৫ হাজার ৪৪৭ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ জন্য মেয়াদ নির্ধারণ করা হয় চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত। কিন্তু প্রায় ছয় মাস আগে মেয়াদ শেষ হলেও নির্মাণকাজ খুঁটি পর্যন্তই আটকে আছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির মালিকেরা জেলহাজতে থাকা এবং তাঁদের সব ব্যাংক হিসাব স্থগিত রয়েছে। এ কারণে নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। ঠিকাদারদের পক্ষ থেকে বারবার প্রতিশ্রুতি দিলেও কার্যক্রম শুরু করতে পারছে না।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে প্রকল্প প্রকৌশলী মিলন ঘরামি ও ব্যবস্থাপক মো. বাহাদুর হাওলাদার জানিয়েছেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কাজ পুনরায় শুরু করা হবে এবং তিন থেকে চার মাসের মধ্যে শেষ করা হবে।
প্রকল্পের অগ্রিম কোনো বিল তোলা হয়েছে কি না জানতে চাইলে উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী মো. জিয়াউর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অগ্রিম কোনো বিল তোলেনি। তবে কাজের বেশ কয়েকটি মেমো তাঁদের কাছে আছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ধোপাবাড়ির খাল অনেক প্রশস্ত। এ জন্য স্থানীয়দের কাছে এটি নদী হিসেবে পরিচিত। খালটি বিষখালী নদীর সঙ্গে যুক্ত। খালের ওপর দীর্ঘদিন ধরে একটি কাঠের সেতু রয়েছে। এটি দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারে না। নড়বড়ে হওয়ায় পথচারীরাও অনেক ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। সেতুটি শুধু আমুয়া ইউনিয়নের নয়, বরং পুরো কাঁঠালিয়া উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগমাধ্যম। সেতুটিকে কেন্দ্র করে রয়েছে ৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, উপজেলার একমাত্র আমুয়া হাসপাতাল, আমুয়া বন্দর ও তিনটি বড় বাজার। প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ এই সেতু ব্যবহার করছে, যার মধ্যে শিক্ষার্থী, রোগী, ব্যবসায়ী, নারী ও শিশু রয়েছে। বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি বাড়লে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে সেতুর কাজ বন্ধ থাকায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। স্কুলশিক্ষার্থীরা আতঙ্ক নিয়ে কাঠের সেতু পার হয়। রোগী নিয়ে হাসপাতালে যেতে গিয়ে পরিবারগুলোর দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
আমুয়ার জনপ্রতিনিধি নকিরুল ইসলাম বলেন, ‘সেতুটি আমাদের এলাকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বছরের পর বছর কাজ বন্ধ হয়ে আছে।’
শেখ ফজিলাতুন্নেছা ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন ভাঙাচোরা কাঠের সেতু দিয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করে। যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে দ্রুত কাজ শেষ করা প্রয়োজন।’
কাঁঠালিয়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. গোলাম মোস্তফা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য নিয়মিত তাগিদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায় কাজ বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে।’
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ঝালকাঠির জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহীদুল ইসলাম সরকারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি সাড়া দেননি।

ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার আমুয়া ইউনিয়নে হাসপাতালসংলগ্ন ধোপাবাড়ির খালের ওপর সেতুর নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ শেষ হয়নি। দুই পাড়ে খুঁটি (পিলার) নির্মাণ করে বন্ধ রয়েছে কাজ। এতে পাশের ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সেতু ব্যবহার করতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ নড়বড়ে ও ভাঙাচোরা ওই সেতু দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে শিক্ষার্থী, নারী, শিশু ও হাসপাতালে আসা রোগীরা।
উপজেলা প্রকৌশল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সুপ্তি কনস্ট্রাকশন এবং কবির ট্রেডার্স যৌথভাবে ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রকল্পটির কার্যাদেশ পায়। সেতুটি নির্মাণে ৫ কোটি ৪৩ লাখ ১৯ হাজার ৬৮০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। নির্মাণকাজ ২০২২ সালের মে মাসে শুরু হয়। ২০২৩ সালের অক্টোবরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সেতুর নকশা পরিবর্তনের কারণে প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে ৬ কোটি ১৩ লাখ ২৫ হাজার ৪৪৭ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ জন্য মেয়াদ নির্ধারণ করা হয় চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত। কিন্তু প্রায় ছয় মাস আগে মেয়াদ শেষ হলেও নির্মাণকাজ খুঁটি পর্যন্তই আটকে আছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির মালিকেরা জেলহাজতে থাকা এবং তাঁদের সব ব্যাংক হিসাব স্থগিত রয়েছে। এ কারণে নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। ঠিকাদারদের পক্ষ থেকে বারবার প্রতিশ্রুতি দিলেও কার্যক্রম শুরু করতে পারছে না।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে প্রকল্প প্রকৌশলী মিলন ঘরামি ও ব্যবস্থাপক মো. বাহাদুর হাওলাদার জানিয়েছেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কাজ পুনরায় শুরু করা হবে এবং তিন থেকে চার মাসের মধ্যে শেষ করা হবে।
প্রকল্পের অগ্রিম কোনো বিল তোলা হয়েছে কি না জানতে চাইলে উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী মো. জিয়াউর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অগ্রিম কোনো বিল তোলেনি। তবে কাজের বেশ কয়েকটি মেমো তাঁদের কাছে আছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ধোপাবাড়ির খাল অনেক প্রশস্ত। এ জন্য স্থানীয়দের কাছে এটি নদী হিসেবে পরিচিত। খালটি বিষখালী নদীর সঙ্গে যুক্ত। খালের ওপর দীর্ঘদিন ধরে একটি কাঠের সেতু রয়েছে। এটি দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারে না। নড়বড়ে হওয়ায় পথচারীরাও অনেক ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। সেতুটি শুধু আমুয়া ইউনিয়নের নয়, বরং পুরো কাঁঠালিয়া উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগমাধ্যম। সেতুটিকে কেন্দ্র করে রয়েছে ৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, উপজেলার একমাত্র আমুয়া হাসপাতাল, আমুয়া বন্দর ও তিনটি বড় বাজার। প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ এই সেতু ব্যবহার করছে, যার মধ্যে শিক্ষার্থী, রোগী, ব্যবসায়ী, নারী ও শিশু রয়েছে। বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি বাড়লে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে সেতুর কাজ বন্ধ থাকায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। স্কুলশিক্ষার্থীরা আতঙ্ক নিয়ে কাঠের সেতু পার হয়। রোগী নিয়ে হাসপাতালে যেতে গিয়ে পরিবারগুলোর দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
আমুয়ার জনপ্রতিনিধি নকিরুল ইসলাম বলেন, ‘সেতুটি আমাদের এলাকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বছরের পর বছর কাজ বন্ধ হয়ে আছে।’
শেখ ফজিলাতুন্নেছা ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন ভাঙাচোরা কাঠের সেতু দিয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করে। যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে দ্রুত কাজ শেষ করা প্রয়োজন।’
কাঁঠালিয়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. গোলাম মোস্তফা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য নিয়মিত তাগিদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায় কাজ বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে।’
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ঝালকাঠির জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহীদুল ইসলাম সরকারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি সাড়া দেননি।

একই গ্রামের হিন্দু ছেলের সঙ্গে মুসলিম মেয়ের বন্ধুত্ব। একপর্যায়ে পালিয়ে বিয়ে। মুসলিম ধর্মাবলম্বী হয়ে অন্য ধর্মের ছেলেকে বিয়ে মেনে নেননি গ্রামের প্রভাবশালী মাতবরেরা। সালিস বসিয়ে সাজা দেওয়া হয় মেয়েকে, সঙ্গে বিয়েতে সাহায্য করার অভিযোগ এনে প্রতিবেশী চারজনকে করা হয় একঘরে। এরই মধ্যে ঘটনার এক যুগ পেরিয়ে গেছ
১৫ মার্চ ২০২৪
সাতক্ষীরার বহুল প্রতীক্ষিত রেললাইনের নির্মাণকাজ এগোচ্ছে কচ্ছপগতিতে। এক যুগ আগে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর গেল মাসে যশোরের নাভারণ থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের ডিপিপি প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগে
ময়মনসিংহের নান্দাইলে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতা হাবিবুর রহমান বাচ্চুর বিরুদ্ধে নরসুন্দা নদীর পাড় দখল করে পাকা ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। মুশুল্লি ইউনিয়নের তারের ঘাট বাজারসংলগ্ন নদীর জায়গা দখল করে দোতলা মার্কেট নির্মাণ করছেন তিনি।
৪ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুরের চারটি আসনের সব কটিতে প্রাথমিক মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। নেতা-কর্মীদের নিয়ে এলাকায় ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছেন উভয় দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
৫ ঘণ্টা আগেনান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

ময়মনসিংহের নান্দাইলে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতা হাবিবুর রহমান বাচ্চুর বিরুদ্ধে নরসুন্দা নদীর পাড় দখল করে পাকা ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। মুশুল্লি ইউনিয়নের তারের ঘাট বাজারসংলগ্ন নদীর জায়গা দখল করে দোতলা মার্কেট নির্মাণ করছেন তিনি।
হাবিবুর রহমান বাচ্চু মুশুল্লি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। তিনি তারের ঘাট বাজার পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক।
সরেজমিনে দেখা যায়, তারের ঘাট বাজারে নরসুন্দা নদীর ওপর সড়ক ও জনপথ বিভাগের একটি সেতু রয়েছে। সেতুর পশ্চিম পাশে নদীর উপরে নির্মাণ হচ্ছে পাকা ভবন। সাংবাদিকেরা ছবি তুলতে গেলে হাবিবুর রহমান বাচ্চুর ছেলে মো. ফয়সাল ছবি তোলার কারণ জানতে যান। এ সময় তিনি দাবি করেন, নদীর ওপর কোনো মার্কেট নির্মাণ করা হচ্ছে না। নিজেদের জায়গায় নির্মাণ করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগ আমলে সাবেক এমপি তুহিনের প্রভাব খাটিয়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেছেন হাবিবুর রহমান বাচ্চু। অবৈধভাবে পাথর ব্যবসার পাশাপাশি দখল করেছেন সরকারি জায়গা। ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে চেয়ারম্যান হতে চেয়েছিলেন। তবে সরকার পতনের পর ভোল বদলে ফেলেন।
নদীর জায়গায় ভবন নির্মাণের বিষয়ে হাবিবুর রহমান বাচ্চু বলেন, ‘এই জমি আমার নিজস্ব সম্পত্তি। নদীর পাড়ের ভেতরে আমার আরও প্রায় ৫০ ফুট জমি আছে।’ তবে মুশুল্লি ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (তহশিলদার) মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘নির্মাণাধীন স্থাপনাটি কোনো ব্যক্তিগত জমিতে নয়। এটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধিগ্রহণ করা জমির মধ্যে পড়ে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
কিশোরগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী বিজয় চন্দ্র বসাক বলেন, ‘সড়ক ও সেতুর দুই পাশে সওজের নিজস্ব জমি রয়েছে। সওজের জায়গায় স্থাপনা নির্মাণ করা হলে তদন্তের মাধ্যমে অপসারণ করা হবে।’
নান্দাইলের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতেমা জান্নাত বলেন, অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আপাতত নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

ময়মনসিংহের নান্দাইলে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতা হাবিবুর রহমান বাচ্চুর বিরুদ্ধে নরসুন্দা নদীর পাড় দখল করে পাকা ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। মুশুল্লি ইউনিয়নের তারের ঘাট বাজারসংলগ্ন নদীর জায়গা দখল করে দোতলা মার্কেট নির্মাণ করছেন তিনি।
হাবিবুর রহমান বাচ্চু মুশুল্লি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। তিনি তারের ঘাট বাজার পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক।
সরেজমিনে দেখা যায়, তারের ঘাট বাজারে নরসুন্দা নদীর ওপর সড়ক ও জনপথ বিভাগের একটি সেতু রয়েছে। সেতুর পশ্চিম পাশে নদীর উপরে নির্মাণ হচ্ছে পাকা ভবন। সাংবাদিকেরা ছবি তুলতে গেলে হাবিবুর রহমান বাচ্চুর ছেলে মো. ফয়সাল ছবি তোলার কারণ জানতে যান। এ সময় তিনি দাবি করেন, নদীর ওপর কোনো মার্কেট নির্মাণ করা হচ্ছে না। নিজেদের জায়গায় নির্মাণ করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগ আমলে সাবেক এমপি তুহিনের প্রভাব খাটিয়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেছেন হাবিবুর রহমান বাচ্চু। অবৈধভাবে পাথর ব্যবসার পাশাপাশি দখল করেছেন সরকারি জায়গা। ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে চেয়ারম্যান হতে চেয়েছিলেন। তবে সরকার পতনের পর ভোল বদলে ফেলেন।
নদীর জায়গায় ভবন নির্মাণের বিষয়ে হাবিবুর রহমান বাচ্চু বলেন, ‘এই জমি আমার নিজস্ব সম্পত্তি। নদীর পাড়ের ভেতরে আমার আরও প্রায় ৫০ ফুট জমি আছে।’ তবে মুশুল্লি ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (তহশিলদার) মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘নির্মাণাধীন স্থাপনাটি কোনো ব্যক্তিগত জমিতে নয়। এটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধিগ্রহণ করা জমির মধ্যে পড়ে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
কিশোরগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী বিজয় চন্দ্র বসাক বলেন, ‘সড়ক ও সেতুর দুই পাশে সওজের নিজস্ব জমি রয়েছে। সওজের জায়গায় স্থাপনা নির্মাণ করা হলে তদন্তের মাধ্যমে অপসারণ করা হবে।’
নান্দাইলের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতেমা জান্নাত বলেন, অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আপাতত নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

একই গ্রামের হিন্দু ছেলের সঙ্গে মুসলিম মেয়ের বন্ধুত্ব। একপর্যায়ে পালিয়ে বিয়ে। মুসলিম ধর্মাবলম্বী হয়ে অন্য ধর্মের ছেলেকে বিয়ে মেনে নেননি গ্রামের প্রভাবশালী মাতবরেরা। সালিস বসিয়ে সাজা দেওয়া হয় মেয়েকে, সঙ্গে বিয়েতে সাহায্য করার অভিযোগ এনে প্রতিবেশী চারজনকে করা হয় একঘরে। এরই মধ্যে ঘটনার এক যুগ পেরিয়ে গেছ
১৫ মার্চ ২০২৪
সাতক্ষীরার বহুল প্রতীক্ষিত রেললাইনের নির্মাণকাজ এগোচ্ছে কচ্ছপগতিতে। এক যুগ আগে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর গেল মাসে যশোরের নাভারণ থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের ডিপিপি প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগে
ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার আমুয়া ইউনিয়নে হাসপাতালসংলগ্ন ধোপাবাড়ির খালের ওপর সেতুর নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ শেষ হয়নি। দুই পাড়ে খুঁটি (পিলার) নির্মাণ করে বন্ধ রয়েছে কাজ। এতে পাশের ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সেতু ব্যবহার করতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।
৪ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুরের চারটি আসনের সব কটিতে প্রাথমিক মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। নেতা-কর্মীদের নিয়ে এলাকায় ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছেন উভয় দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
৫ ঘণ্টা আগেহাসান মাতুব্বর, ফরিদপুর

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুরের চারটি আসনের সব কটিতে প্রাথমিক মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। নেতা-কর্মীদের নিয়ে এলাকায় ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছেন উভয় দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। তৎপর এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদ, খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মতো দলগুলোও। আগামী নির্বাচনে জেলায় অন্তত ৩০ জন প্রার্থী হবেন। তাঁদের মধ্যে হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদসহ অন্তত ছয়জন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন।
চার আসনের দুটিতেই বিএনপির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল। তবে চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে ওঠার ব্যাপারে আশাবাদী জেলা বিএনপির সদস্যসচিব এ কে এম কিবরিয়া স্বপন। তিনি বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ কোন্দলে ভোটে প্রভাব ফেলবে না। বিভেদ ভুলে
সবাই ধানের শীষের পক্ষেই কাজ করবে।’ জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির মুহাম্মাদ বদরুদ্দীন বলেন, ‘চার আসনেই আমাদের ভালো অবস্থান রয়েছে। এখন ইসলামি সমমনা ৮ দলের বিষয়ে কেন্দ্র যে সিদ্ধান্ত দেবে, সেটি মেনে নেওয়া হবে।’
ফরিদপুর-১
আলফাডাঙ্গা, বোয়ালমারী ও মধুখালী উপজেলা নিয়ে ফরিদপুর-১ আসন। তিন উপজেলার মধ্যে বোয়ালমারী ও মধুখালীতে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের ভোট প্রায় সমান। আলফাডাঙ্গায় প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ আওয়ামী লীগ সমর্থক। ৫ আগস্টের পর বিএনপির প্রভাব বাড়লেও দলটির অভ্যন্তরীণ কোন্দল চরমে। উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনুর সঙ্গে কৃষক দলের সহসভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলামের বিবাদে নেতা-কর্মীরা বিভক্ত হয়ে পড়েন। গত ৭ নভেম্বর উপজেলা সদরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ রণক্ষেত্রে রূপ নেয়। এর মধ্যে ৪ ডিসেম্বর সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে খন্দকার নাসিরুল ইসলামের নাম ঘোষণা করে বিএনপি। এ ঘোষণায় ক্ষুব্ধ শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনুর সমর্থকেরা।
খন্দকার নাসিরুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে বহুদিন পরে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের সুযোগ এসেছে। এটি কাজে লাগাতে দলে কোনো ভেদাভেদ না রেখে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার চেষ্টা করছি।’ শামসুদ্দীন মিয়া বলেন, ‘খন্দকার নাসিরকে মনোনয়ন দিয়ে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করা হয়েছে। তাঁর কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই, এলাকায় তাঁর কোনো ভোট নেই। যারা দলকে আজকের পর্যায়ে এনেছে, তাদের মূল্যায়ন করা হয়নি। সমর্থকদের নিয়ে বসে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।’
জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মো. ইলিয়াস মোল্যা। নেতা-কর্মীদের নিয়ে এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। দলের জেলা আমির মুহাম্মদ বদরুদ্দীন বলেন, একজন হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে এলাকায় ইলিয়াস মোল্যার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। ভোটারদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া মিলছে।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম থেকে মুফতি মো. জাকির হুসাইন কাসেমী, খেলাফত মজলিস থেকে মুফতি শারাফাত হুসাইন ও ইসলামী আন্দোলন থেকে ওয়ালিউর রহমান প্রার্থী হতে পারেন। এনসিপির মনোনয়ন পেতে পারেন হাসিবুর রহমান অপু। সাবেক ছাত্রদল নেতা আবুল বাসার খান ও সাংবাদিক আরিফুর রহমান দোলন স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
ফরিদপুর-২
সালথা ও নগরকান্দা উপজেলা নিয়ে ফরিদপুর-২ আসন। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে এখান থেকে নির্বাচিত হন বিএনপির সাবেক মহাসচিব কে এম ওবায়দুর রহমান। এবার বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছেন তাঁর মেয়ে শামা ওবায়েদ। নির্বাচনী প্রচারে বাবার উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী নগরকান্দা উপজেলা আমির সোহরাব হোসেন। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের প্রার্থী হতে পারেন শাহ আকরাম আলী। ফরিদপুরে তিনি সর্বজনশ্রদ্ধেয় মুরব্বি হিসেবে পরিচিত। ইসলামি বক্তা হিসেবেও তাঁর জনপ্রিয়তা রয়েছে। শাহ আকরাম আলী বলেন, ‘আমাদের এলাকায় আলেম-ওলামাদের সমর্থক বেশি। সেই হিসেবে চেষ্টা করছি ইসলামি দলগুলোর একক প্রার্থী হতে। সভা-সমাবেশে যেভাবে সাড়া পাচ্ছি, তাতে আমি বিজয়ী হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।’
ফরিদপুর-৩
ফরিদপুর সদর উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন এবং একটি পৌরসভা নিয়ে ফরিদপুর-৩ আসন। ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত আসনটি ছিল বিএনপির সাবেক মন্ত্রী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের দখলে। এবার এখানে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী তাঁর মেয়ে চৌধুরী নায়াব ইউসুফ। তবে তাঁকে মেনে নিতে রাজি নন আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মোদাররেছ আলী ইছার অনুসারীরা। চৌধুরী নায়াব ইউসুফের প্রাথমিক মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে সমাবেশও করেছেন তাঁরা। চৌধুরী নায়াব ইউসুফ বলেন, ‘আমার বাবা এখান থেকে বারবার নির্বাচিত হয়েছেন। এটা প্রমাণিত যে ফরিদপুর সদরের মানুষ বিএনপিকে ভালোবাসে। মানুষ গত ১৫ বছর ভোট দিতে পারেনি। তারা আবার বিএনপির শাসন ফেরাতে চায়।’
জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী আবদুত তাওয়াব নেতা-কর্মীদের নিয়ে এলাকায় ব্যাপক প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রচারে দখল বাণিজ্য ও চাঁদাবাজিমুক্ত একটি বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তিনি। স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ। স্বতন্ত্র হলেও তাঁকে শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। ২০২৪ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনি প্রায় ৬০ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেন। তবে গত ১৯ অক্টোবর তাঁর গণসংযোগে বিএনপি সমর্থকদের হামলার পর তাঁকে আর মাঠে দেখা যায়নি।
খেলাফত মজলিস থেকে আমজাদ হোসাইন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম থেকে কামরুজ্জামান ও ইসলামী আন্দোলন থেকে কে এম সারোয়ার মনোনয়ন পেতে পারেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন মোর্শেদুল ইসলাম আসিফ নামের এক তরুণ। হাতেনাতে চাঁদাবাজ ধরে পুলিশে সোপর্দ করে এলাকায় আলোচনার জন্ম দিয়েছেন তিনি। ফরিদপুর পৌরসভায় নিজ উদ্যোগে মশকনিধন কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
ফরিদপুর-৪
ভাঙ্গা, চরভদ্রাসন ও সদরপুর উপজেলা নিয়ে ফরিদপুর-৪ আসন। এখানে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবলু। তাঁর পৈতৃক বাড়ি ফরিদপুর-২ আসনে হলেও দল তাঁকে এখানে প্রাথমিক মনোনয়ন দিয়েছে। তাঁর বিভিন্ন সমাবেশ ও উঠান বৈঠকে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের পদধারী নেতাদের দেখা গেছে। জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী ভাঙ্গা উপজেলা আমির সরোয়ার হোসেন। সভা-সমাবেশের মাধ্যমে ভোটারদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছেন তিনি। খেলাফত মজলিসের প্রার্থী হতে পারেন মো. মিজানুর রহমান মোল্যা। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রচার চালাচ্ছেন স্থপতি মুজাহিদ বেগ।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুরের চারটি আসনের সব কটিতে প্রাথমিক মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। নেতা-কর্মীদের নিয়ে এলাকায় ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছেন উভয় দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। তৎপর এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদ, খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মতো দলগুলোও। আগামী নির্বাচনে জেলায় অন্তত ৩০ জন প্রার্থী হবেন। তাঁদের মধ্যে হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদসহ অন্তত ছয়জন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন।
চার আসনের দুটিতেই বিএনপির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল। তবে চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে ওঠার ব্যাপারে আশাবাদী জেলা বিএনপির সদস্যসচিব এ কে এম কিবরিয়া স্বপন। তিনি বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ কোন্দলে ভোটে প্রভাব ফেলবে না। বিভেদ ভুলে
সবাই ধানের শীষের পক্ষেই কাজ করবে।’ জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির মুহাম্মাদ বদরুদ্দীন বলেন, ‘চার আসনেই আমাদের ভালো অবস্থান রয়েছে। এখন ইসলামি সমমনা ৮ দলের বিষয়ে কেন্দ্র যে সিদ্ধান্ত দেবে, সেটি মেনে নেওয়া হবে।’
ফরিদপুর-১
আলফাডাঙ্গা, বোয়ালমারী ও মধুখালী উপজেলা নিয়ে ফরিদপুর-১ আসন। তিন উপজেলার মধ্যে বোয়ালমারী ও মধুখালীতে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের ভোট প্রায় সমান। আলফাডাঙ্গায় প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ আওয়ামী লীগ সমর্থক। ৫ আগস্টের পর বিএনপির প্রভাব বাড়লেও দলটির অভ্যন্তরীণ কোন্দল চরমে। উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনুর সঙ্গে কৃষক দলের সহসভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলামের বিবাদে নেতা-কর্মীরা বিভক্ত হয়ে পড়েন। গত ৭ নভেম্বর উপজেলা সদরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ রণক্ষেত্রে রূপ নেয়। এর মধ্যে ৪ ডিসেম্বর সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে খন্দকার নাসিরুল ইসলামের নাম ঘোষণা করে বিএনপি। এ ঘোষণায় ক্ষুব্ধ শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনুর সমর্থকেরা।
খন্দকার নাসিরুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে বহুদিন পরে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের সুযোগ এসেছে। এটি কাজে লাগাতে দলে কোনো ভেদাভেদ না রেখে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার চেষ্টা করছি।’ শামসুদ্দীন মিয়া বলেন, ‘খন্দকার নাসিরকে মনোনয়ন দিয়ে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করা হয়েছে। তাঁর কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই, এলাকায় তাঁর কোনো ভোট নেই। যারা দলকে আজকের পর্যায়ে এনেছে, তাদের মূল্যায়ন করা হয়নি। সমর্থকদের নিয়ে বসে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।’
জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মো. ইলিয়াস মোল্যা। নেতা-কর্মীদের নিয়ে এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। দলের জেলা আমির মুহাম্মদ বদরুদ্দীন বলেন, একজন হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে এলাকায় ইলিয়াস মোল্যার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। ভোটারদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া মিলছে।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম থেকে মুফতি মো. জাকির হুসাইন কাসেমী, খেলাফত মজলিস থেকে মুফতি শারাফাত হুসাইন ও ইসলামী আন্দোলন থেকে ওয়ালিউর রহমান প্রার্থী হতে পারেন। এনসিপির মনোনয়ন পেতে পারেন হাসিবুর রহমান অপু। সাবেক ছাত্রদল নেতা আবুল বাসার খান ও সাংবাদিক আরিফুর রহমান দোলন স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
ফরিদপুর-২
সালথা ও নগরকান্দা উপজেলা নিয়ে ফরিদপুর-২ আসন। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে এখান থেকে নির্বাচিত হন বিএনপির সাবেক মহাসচিব কে এম ওবায়দুর রহমান। এবার বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছেন তাঁর মেয়ে শামা ওবায়েদ। নির্বাচনী প্রচারে বাবার উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী নগরকান্দা উপজেলা আমির সোহরাব হোসেন। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের প্রার্থী হতে পারেন শাহ আকরাম আলী। ফরিদপুরে তিনি সর্বজনশ্রদ্ধেয় মুরব্বি হিসেবে পরিচিত। ইসলামি বক্তা হিসেবেও তাঁর জনপ্রিয়তা রয়েছে। শাহ আকরাম আলী বলেন, ‘আমাদের এলাকায় আলেম-ওলামাদের সমর্থক বেশি। সেই হিসেবে চেষ্টা করছি ইসলামি দলগুলোর একক প্রার্থী হতে। সভা-সমাবেশে যেভাবে সাড়া পাচ্ছি, তাতে আমি বিজয়ী হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।’
ফরিদপুর-৩
ফরিদপুর সদর উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন এবং একটি পৌরসভা নিয়ে ফরিদপুর-৩ আসন। ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত আসনটি ছিল বিএনপির সাবেক মন্ত্রী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের দখলে। এবার এখানে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী তাঁর মেয়ে চৌধুরী নায়াব ইউসুফ। তবে তাঁকে মেনে নিতে রাজি নন আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মোদাররেছ আলী ইছার অনুসারীরা। চৌধুরী নায়াব ইউসুফের প্রাথমিক মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে সমাবেশও করেছেন তাঁরা। চৌধুরী নায়াব ইউসুফ বলেন, ‘আমার বাবা এখান থেকে বারবার নির্বাচিত হয়েছেন। এটা প্রমাণিত যে ফরিদপুর সদরের মানুষ বিএনপিকে ভালোবাসে। মানুষ গত ১৫ বছর ভোট দিতে পারেনি। তারা আবার বিএনপির শাসন ফেরাতে চায়।’
জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী আবদুত তাওয়াব নেতা-কর্মীদের নিয়ে এলাকায় ব্যাপক প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রচারে দখল বাণিজ্য ও চাঁদাবাজিমুক্ত একটি বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তিনি। স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ। স্বতন্ত্র হলেও তাঁকে শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। ২০২৪ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনি প্রায় ৬০ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেন। তবে গত ১৯ অক্টোবর তাঁর গণসংযোগে বিএনপি সমর্থকদের হামলার পর তাঁকে আর মাঠে দেখা যায়নি।
খেলাফত মজলিস থেকে আমজাদ হোসাইন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম থেকে কামরুজ্জামান ও ইসলামী আন্দোলন থেকে কে এম সারোয়ার মনোনয়ন পেতে পারেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন মোর্শেদুল ইসলাম আসিফ নামের এক তরুণ। হাতেনাতে চাঁদাবাজ ধরে পুলিশে সোপর্দ করে এলাকায় আলোচনার জন্ম দিয়েছেন তিনি। ফরিদপুর পৌরসভায় নিজ উদ্যোগে মশকনিধন কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
ফরিদপুর-৪
ভাঙ্গা, চরভদ্রাসন ও সদরপুর উপজেলা নিয়ে ফরিদপুর-৪ আসন। এখানে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবলু। তাঁর পৈতৃক বাড়ি ফরিদপুর-২ আসনে হলেও দল তাঁকে এখানে প্রাথমিক মনোনয়ন দিয়েছে। তাঁর বিভিন্ন সমাবেশ ও উঠান বৈঠকে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের পদধারী নেতাদের দেখা গেছে। জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী ভাঙ্গা উপজেলা আমির সরোয়ার হোসেন। সভা-সমাবেশের মাধ্যমে ভোটারদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছেন তিনি। খেলাফত মজলিসের প্রার্থী হতে পারেন মো. মিজানুর রহমান মোল্যা। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রচার চালাচ্ছেন স্থপতি মুজাহিদ বেগ।

একই গ্রামের হিন্দু ছেলের সঙ্গে মুসলিম মেয়ের বন্ধুত্ব। একপর্যায়ে পালিয়ে বিয়ে। মুসলিম ধর্মাবলম্বী হয়ে অন্য ধর্মের ছেলেকে বিয়ে মেনে নেননি গ্রামের প্রভাবশালী মাতবরেরা। সালিস বসিয়ে সাজা দেওয়া হয় মেয়েকে, সঙ্গে বিয়েতে সাহায্য করার অভিযোগ এনে প্রতিবেশী চারজনকে করা হয় একঘরে। এরই মধ্যে ঘটনার এক যুগ পেরিয়ে গেছ
১৫ মার্চ ২০২৪
সাতক্ষীরার বহুল প্রতীক্ষিত রেললাইনের নির্মাণকাজ এগোচ্ছে কচ্ছপগতিতে। এক যুগ আগে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর গেল মাসে যশোরের নাভারণ থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের ডিপিপি প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগে
ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার আমুয়া ইউনিয়নে হাসপাতালসংলগ্ন ধোপাবাড়ির খালের ওপর সেতুর নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ শেষ হয়নি। দুই পাড়ে খুঁটি (পিলার) নির্মাণ করে বন্ধ রয়েছে কাজ। এতে পাশের ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সেতু ব্যবহার করতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।
৪ ঘণ্টা আগে
ময়মনসিংহের নান্দাইলে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতা হাবিবুর রহমান বাচ্চুর বিরুদ্ধে নরসুন্দা নদীর পাড় দখল করে পাকা ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। মুশুল্লি ইউনিয়নের তারের ঘাট বাজারসংলগ্ন নদীর জায়গা দখল করে দোতলা মার্কেট নির্মাণ করছেন তিনি।
৪ ঘণ্টা আগে