পুলিশের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১৫ জানুয়ারি ২০২২, ১৫: ৪৩
আপডেট : ১৫ জানুয়ারি ২০২২, ১৬: ০৯

পুলিশের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা। জাতীয় প্রেসক্লাবে আজ শনিবার সকালে মানবাধিকার সংগঠন মায়ের ডাকের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন তাঁরা ।  

এ সময় ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, জাতিসংঘ থেকে দেশে গুম হওয়া ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে পুলিশ তাঁদের থানায় ডেকে পাঠায়, জবানবন্দি চায়, এমনকি তাঁদের স্বজন পারিবারিক কারণে আত্মগোপন করেছে বলে জবানবন্দি চায়। অভিযোগকারীরা বলছেন, স্বজন হারানোর পর পুলিশের এমন আচরণে তাঁরা ভীত ও আতঙ্কিত।

২০১৯ সালের জুন মাসে নিজের কর্মস্থল থেকে নিখোঁজ হন ইসমাইল হোসেন বাতেন। কাঠের ব্যবসায়ী বাতেন মিরপুরে তাঁর কাজের জায়গা থেকে দুপুরের পর থেকে নিখোঁজ হন। এরপর আর ফিরে আসেননি। জাতিসংঘ থেকে বের হওয়া গুমের তালিকায় বাতেন ১৮ নম্বরে। 

বাতেনের স্ত্রী নাসরিন জাহান সংবাদ সম্মেলনে জানান, গত রোববার রাতে দারুস সালাম থানা থেকে তাঁকে ফোন করে যেতে বলেন। একপ্রকার বাধ্য হয়েই তিনি যান। পরে থানার পুলিশ আবারও পুরো ঘটনা জানতে চায়। 

এই ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘পুলিশের দাবি, আমার স্বামী কোথায় আছেন সেটা আমি জানি। পুলিশের এমন চাপে পুরো পরিবার আবার নতুন করে ভয় পাচ্ছি।’ 

এই নারী আরও বলেন, ‘স্বামী নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত নানাভাবে তাঁকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমি ব্যর্থ হয়েছি।’ 

২০১৩ সালের নভেম্বরে ছাত্রদলের নেতা পারভেজ হোসেনকে তুলে নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ধারী একদল লোক। দুই সন্তানকে নিয়ে পারভেজের স্ত্রী ফারজানা আক্তার নিদারুণ কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। একদিকে স্বামী জীবিত না মৃত, সেই ধন্দে আটকে আছে জীবনের অনেক কিছুই। আরেক দিকে নিজের কোনো আয় নেই, দুই সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে একরকম আশ্রিত হয়ে আছেন। 

ফারজানা সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, নতুন ওসি এলেই বাসায় একবার করে পুলিশ আসে। সর্বশেষ গত রোববার স্থানীয় আওয়ামী লীগে এক নেতাসহ বংশাল থানার কয়েকজন পুলিশ তাঁদের বাসায় আসে। তিনি বাড়িতে না থাকায় তাঁর শাশুড়ি মোবাইল থেকে তাকে ফোন দেন। 

পুলিশ দাবি করে, স্বামী কোথায় আছেন তা জানেন ফারজানা। কোনো এক মহলের হয়ে তাঁরা এই গুমের নাটক করছেন। 

ওই সময় এক এসআই তাঁকে রেস্টুরেন্টে আসতে বলেন, ফারজানা আপত্তি করায় থানায় আসতে বলেন। এই পরিবার বলছে, স্বজন হারানোর পরও পুলিশের এমন অভিযোগ আর হয়রানি মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। তাঁরা পুলিশকে আরও মানবিক হতে বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে অতিথির বক্তব্যে মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটন বলেন, ২০০৯ ও ২০১৩-১৪ সালে এসব গুমের ঘটনা বেশি ঘটেছে। তবে সম্প্রতি জাতিসংঘ গুমের তালিকা প্রকাশ করার পর পুলিশ নতুন করে এসব পরিবারকে হয়রানি করছে, কিন্তু গুম থামাতে পারছে না। আজও ইসলামি জঙ্গি নামে অনেককে গুম করা হচ্ছে। স্বাক্ষর নেওয়া হচ্ছে তাঁরা আত্মগোপনে গেছেন, ঋণের চাপে চলে গেছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল বলেন, পুলিশ যদি সত্যি বিচার করতে চায়, সেই সময়ের কর্মকর্তাদের জেরা করুন, গ্রেপ্তার করুন। ঘটনার সময় পুলিশের দ্বারে দ্বারে ঘুরে মামলা করতে পারেননি। করেছেন জিডি। সেই জিডির খোঁজ আজ তাঁরা পাচ্ছেন না।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত