Ajker Patrika

নামেই মেডিকেল কলেজ, ইউটিউব দেখে চিকিৎসক হওয়ার পরামর্শ!

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
নামেই মেডিকেল কলেজ, ইউটিউব দেখে চিকিৎসক হওয়ার পরামর্শ!

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ইকবাল রোডের কেয়ার মেডিকেল কলেজে শিক্ষার কোনো ব্যবস্থা না থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) অনুমোদন, শিক্ষক সংকটে পাঠদানও প্রায় হয় না বললেই চলে। শিক্ষার্থীদের ইউটিউব দেখে চিকিৎসক হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়! শিক্ষার্থীরা কলেজের নানা অনিয়ম ও প্রতারণার চিত্র তুলে ধরে বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশনভুক্ত অন্য মেডিকেল কলেজে মাইগ্রেশনের দাবি জানিয়েছেন। 

আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডে কেয়ার মেডিকেল কলেজের সামনে মাইগ্রেশনের দাবিতে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা। 

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা কলেজের নানা অসংগতি ও অনিয়ম তুলে ধরে বলেন, ভর্তি হওয়ার পর থেকে কলেজে কোনো শিক্ষক নেই। পরীক্ষার ৪-৫ দিন আগে অতিথি শিক্ষক এনে শুধু পরীক্ষা নিয়ে কোর্স শেষ করে ফেলা হতো। এসব অনিয়ম নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বলতে গেলে ইউটিউবে ভিডিও দেখে চিকিৎসক হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা ভর্তি হওয়ার পর জানতে পারে, ২০১৮ সালের পর থেকে এই মেডিকেল কলেজটির বিএমডিসির কোনো রেজিস্ট্রেশন নেই। শিক্ষার্থীরা লিখিত আকারে কলেজের অনিয়ম তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং বিএডিসি বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন। 

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগগুলো, কলেজের ২০১৭-২০১৮ সেশন থেকে ২০২০-২০২১ সেশন পর্যন্ত কোনো শিক্ষার্থীর বিএমডিসির অনুমোদন নেই। ২০১৬-২০১৭ সেশনের ভর্তির পরে ২০১৭-২০১৮ সেশন থেকে ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। পরে হাইকোর্টের রিটের ভিত্তিতে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ২০১৭-১৮,২০১৮-১৯, ২০১৯-২০,২০২০-২১ সেশনে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। তবে এ বছর ২০২১-২০২২ সেশনে ভর্তি কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা ২০২১ সালের আগস্টে চূড়ান্ত পেশাগত পরীক্ষায় অংশ নেন। নভেম্বর থেকে তাঁদের ইনটার্নশিপ শুরু করার কথা। কিন্তু বিএমডিসির অনুমোদন না থাকায় গত নয় মাসেও তাঁরা ইন্টার্নশিপ শুরু করতে পারেননি। 

মাইগ্রেশনের দাবিতে আন্দোলন করছেন কেয়ার মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকাশিক্ষার্থীরা আরও বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী হাসপাতালে পর্যাপ্ত শয্যা নেই। অধিকাংশ সময় সব ওয়ার্ড রোগীশূন্য থাকে। পূর্ণাঙ্গ অপারেশন থিয়েটার ও আইসিইউ নেই এবং সিসিইউ ও এনআইসিইউ থাকলেও সেখানে অপারেশন ও ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা নগণ্য। এমনকি এখানে কোনো ক্লিনিক্যাল ক্লাস হয় না। প্রফেশনাল পরীক্ষার জন্য রোগী ভাড়া করে নিয়ে আসা হয়। কলেজ ভিজিটের সময় কর্তৃপক্ষ রোগী ভাড়া করে আনে এবং কেয়ার নার্সিং কলেজের ছাত্রছাত্রীদের রোগী সাজিয়ে দেখানো হয়। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের সুষ্ঠু একাডেমিক কার্যক্রম চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় কোনো ব্যবস্থা নেই। ওয়ার্ডে কোনো রোগী নেই, হাতে কলমে শিক্ষার ব্যবস্থা নেই। এই ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে বারবার বলা হলে তাঁরা ইউটিউব দেখে শিখে নিতে বলেন! 

এ পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তাঁরা মাইগ্রেশন করার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন। 

তবে এ ব্যাপারে কেয়ার মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাইলে তাঁরা বলেছেন, গত ১৪ আগস্ট শিক্ষার্থীদের মাইগ্রেশনের ব্যবস্থা করার জন্য স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠির একটি কপি গণমাধ্যমেও সরবরাহ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

‘মবের হাত থেকে বাঁচাতে’ পলকের বাড়ি হয়ে গেল অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প

ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান, সন্তানসহ ছিটকে পড়তেই তরুণীর গালে ছুরিকাঘাত

এনসিপিকে চাঁদা দিচ্ছেন ধনীরা, ক্রাউডফান্ডিং করেও অর্থ সংগ্রহ করা হবে: নাহিদ ইসলাম

আ. লীগ নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, তারাই সিদ্ধান্ত নেবে: বিবিসিকে প্রধান উপদেষ্টা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত