Ajker Patrika

কোরবানির আগে লাম্পি স্কিন ডিজিসের প্রাদুর্ভাব, আতঙ্কে খামারিরা

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ জুন ২০২২, ২০: ৫১
কোরবানির আগে লাম্পি স্কিন ডিজিসের প্রাদুর্ভাব, আতঙ্কে খামারিরা

গাজীপুরের শ্রীপুরের বিভিন্ন এলাকায় গবাদিপশুতে লাম্পি স্কিন ডিজিস বা এলএসডি রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে। ভাইরাসজনিত এ চর্মরোগের কোনো প্রতিষেধক টিকা নেই। সুনির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসাও নেই। কোরবানি ঈদের আগে এই রোগের প্রাদুর্ভাব নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন খামারিরা। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যাপকভাবে এলএসডি ছড়িয়ে পড়েছে। খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ছোট বড় সব বয়সী গরুর মধ্যেই এ ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিচ্ছে। আসন্ন ঈদুল আজহা সামনে রেখে গরু লালন-পালন করছেন অনেকে। ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেওয়ায় খামারিদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এত খরচ করে পালন করা গরু ঈদের হাটে বিক্রি নিয়েই অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। 

খামারিরা বলছেন, এ রোগে আক্রান্ত গরুর গলা, সিনার নিচে পানি জমে। হাঁটু ও খুরার কাছে ফুলে যায়। আক্রান্ত স্থানে ক্ষত সৃষ্টি হয়। গায়ে জ্বর থাকে। খাবার খাওয়া কমিয়ে দেয়। আক্রান্ত গরু সুস্থ হতে বেশ কিছুদিন সময় লাগে। 

উপজেলার গাড়ারণ গ্রামের খামারি আসলাম বলেন, লাম্পি ভাইরাসে তাঁর একটি গরু আক্রান্ত হয়েছে। গরুটির পুরো শরীর ফোঁড়ার মতো ফুলে গেছে। আশপাশে বহু গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। ভাংনাহাটি গ্রামের আনারুল বলেন, তার একটি গরু আক্রান্ত হয়েছে। গরুটির খাবার গ্রহণ কমে গেছে, শরীরে জ্বর আছে। 

প্রহলাদপুর ইউনিয়নের খামারি আকরাম হোসেন বলেন, ‘দ্রুত সময়ের মধ্যে এই রোগের যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা না করলে এটি ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়বে। এতে খামারিদের ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।’ 

শ্রীপুর পৌর শহরের ভেটেরিনারি ওষুধ বিক্রেতা মো. নাসির উদ্দিন মৃধা জানান, প্রতিদিনই বহু খামারি এ রোগে আক্রান্ত গরু নিয়ে পশু হাসপাতালে আসছেন। চিকিৎসকেরা এ রোগের চিকিৎসায় সাধারণত প্রাথমিক চিকিৎসা ছাড়া আর কিছু দেন না। যে ধরনের ব্যবস্থাপত্র দেন সেসব ওষুধ ব্যবহার করলেও গরু সুস্থ হতে বেশ সময় লাগে। 

এ রোগের চিকিৎসার বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রুকুনুজ্জামান পলাশ বলেন, ‘বিভিন্ন স্থানে লাম্পি ভাইরাসে গরু আক্রান্তের খবর পাওয়া যাচ্ছে। গরুর মালিকেরা চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে আসছেন। সরকারিভাবে এ রোগের কোনো ভ্যাকসিন নেই। যেসব ওষুধ বাজারে আছে, তা দিয়েই চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়।’ 

জানা যায়, ১৯২৯ সালে প্রথম আফ্রিকা মহাদেশের জাম্বিয়াতে পশুর লাম্পি স্কিন ডিজিস দেখা দেয়। ১৯৪৩ থেকে ১৯৪৫ সালের মধ্যে মহাদেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। তবে এখন পর্যন্ত এর কোনো কার্যকর প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। মশা-মাছিবাহিত রোগটি মূলত মশার মধ্যমেই বেশি ছড়ায়। আক্রান্ত গরু সুস্থ হতে দীর্ঘ সময় লাগে। দিন দিন দুর্বল হয়ে পড়ে। অনেক ক্ষেত্রে বিশেষ করে কম বয়সী পশু মারাও যেতে পারে। একটি খামারকে অর্থনৈতিকভাবে ধসিয়ে দিতে খুরা রোগের চেয়েও ভয়ংকর এই রোগ। 

বাংলাদেশে গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিস প্রথম দেখা দেয় ২০১৯ সালে চট্টগ্রামে। এরপরই মাঠে নামে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তদন্ত টিম। তখন দেশের ১২ জেলায় ৪৮ হাজার গরুর মধ্যে এ রোগের লক্ষণ খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

৬ জ্যান্ত হাতি নিয়ে রাশিয়ায় মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান, উচ্ছ্বসিত পুতিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত