Ajker Patrika

ভুতুড়ে নীরবতা স্পিডবোট– লঞ্চঘাটে

প্রতিনিধি, শিবচর (মাদারীপুর)
আপডেট : ০৩ জুলাই ২০২১, ১১: ২২
ভুতুড়ে নীরবতা স্পিডবোট– লঞ্চঘাটে

কোলাহলে মুখর থাকা শিবচরের বাংলাবাজার লঞ্চ ও স্পিডবোটঘাটে এখন ভুতুড়ে নীরবতা বিরাজ করছে। লঞ্চঘাটের টার্মিনালে থাকা সব দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। লঞ্চের মালিক-শ্রমিকেরা মাঝেমধ্যে ঘাট এলাকায় ঢুঁ মারলেও জনসাধারণের লঞ্চ টার্মিনাল অংশে যাওয়ার কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই।

১ জুলাই থেকে কঠোর লকডাউন শুরু হলে ফেরিতে কোনো যাত্রী পার হচ্ছে না। তবে পণ্যবাহী ট্রাক আর জরুরি যানবাহন কিছু কিছু পার হওয়ায় ফেরিঘাটে লোকজনের কিছুটা চলাচল থাকলেও লঞ্চ ও স্পিডবোট ঘাটের অংশ বর্তমানে সুনসান নীরব।

লঞ্চঘাট সূত্রে জানা গেছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে যতবারই লকডাউন ঘোষণা হয়েছে, গণপরিবহনের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে বন্ধ রাখা হয়েছে লঞ্চ চলাচলও। তবে সে সময় হাজার হাজার যাত্রীর ফেরিতে ছিল অবাধ পারাপার। আর্থিকভাবে লঞ্চ মালিকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ফেরিঘাটের ইজারাদারদের লাভের মাত্রা বেড়ে গিয়েছিল কয়েক গুণ। আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সরকারি এই সিদ্ধান্ত সব সময় মেনে নিয়েছে লঞ্চ মালিক কর্তৃপক্ষ। লঞ্চের চালক-শ্রমিক থেকে শুরু করে সব কর্মচারীর লকডাউনের মধ্যেও বেতন-ভাতা চালু রেখেছেন তাঁরা।

এদিকে গত ৩ মে সকালে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটের কাঁঠালবাড়ী ঘাটের কাছে স্পিডবোটডুবিতে ২৬ জনের মৃত্যুর ঘটনার পর থেকে সব স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রয়েছে এই নৌরুটে। স্পিডবোট ও লঞ্চঘাট পাশাপাশি থাকায় লকডাউনে ভুতুড়ে নিস্তব্ধতা এই ঘাট এলাকায়।

স্থানীয়রা জানান, লঞ্চ ও ফেরিঘাট আলাদা। লঞ্চঘাট থেকে ফেরিঘাটের মাঝে বেশ কিছুটা পথের দূরত্বও রয়েছে। লকডাউনে জরুরি পরিবহনের জন্য ফেরি চালু থাকায় ফেরিঘাটে লোকজনের আনাগোনা রয়েছে। আর পুরো লঞ্চঘাট জনমানবশূন্য।

বিআইডব্লিউটিএর বাংলাবাজার লঞ্চঘাট সূত্রে জানা গেছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে গত ২২ জুন মঙ্গলবার সকাল থেকে নৌরুটে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়। এরপর ১ জুলাই থেকে দেশজুড়ে কঠোর লকডাউন শুরু হলে নৌরুটের ফেরিতেও বন্ধ হয়ে যায় যাত্রী পারাপার। পণ্যবাহী ট্রাক আর অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি যানবাহন পারাপারের জন্য ফেরি চলাচল করলেও তেমন চাপ নেই। লঞ্চঘাটের অংশে চারটি লঞ্চঘাট ও একটি স্পিডবোটঘাট ঘিরে দুই শতাধিক দোকানপাট রয়েছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের বিচরণ এই ঘাট এলাকা এখন জনমানবশূন্য। ঘাটের পন্টুনে নোঙর করে রাখা রয়েছে লঞ্চগুলো। অলস পড়ে আছে স্পিডবোট। 

বিআইডব্লিউটিএর বাংলাবাজার লঞ্চঘাটের ট্রাফিক পরিদর্শ আক্তার হোসেন বলেন, ‘নৌরুটে ৮৭টি লঞ্চ রয়েছে। এ ছাড়া স্পিডবোটের সংখ্যা দুই শতাধিক। যদিও স্পিডবোট চলাচলের কোনো বৈধতা নেই। গত ৩ মে থেকে সম্পূর্ণভাবে স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রয়েছে। যাত্রীদের পারাপারের সবচেয়ে জনপ্রিয় নৌযান হলো লঞ্চ। তবে লকডাউনে লঞ্চ চলাচলও বন্ধ থাকছে। আর লঞ্চ বন্ধ থাকলে এই লঞ্চঘাট জনমানবশূন্যতায় পরিণত হয়। কেমন যেন ভুতুড়ে পরিবেশ ঘাটে।’ 

এদিকে বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ফেরিঘাট সূত্রে জানা গেছে, ১ জুলাই থেকে কঠোর লকডাউন শুরু হলে নৌরুটে যাত্রী পারাপার বন্ধ হয়ে যায়। ঘাটে আটকে থাকা পণ্যবাহী ট্রাক আর জরুরি যানবাহন পারাপার করা হয়েছে গত দুই দিনে। উভয় ঘাটেই কোনো আটকে থাকা ট্রাক নেই। ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। গাড়ি এলেই ফেরি ছাড়ছে। তবে ঘাটে গাড়িও দীর্ঘসময় পরপর আসছে।’ 

বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ঘাট ফাঁকা রয়েছে। কোনো ট্রাক নেই ঘাটে। সকাল থেকে দুই-একটা করে অ্যাম্বুলেন্স আসছে। তা নিয়েই ফেরি ছেড়ে যাচ্ছে। গত কয়েক দিনের চেয়ে আজকের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। অনেকটাই সুনসান নীরবতা ঘাটে। 

এদিকে ঘাট এলাকায় পুলিশের চেকপোস্ট বাড়ানো হয়েছে। ঘাটে প্রবেশের সব পথেই রয়েছে পুলিশের চেকপোস্ট। লঞ্চ ও ফেরিঘাটে পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। ঘাটে কোনো থ্রি-হুইলার প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বাংলাবাজার ঘাটের ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক মো. জামালউদ্দিন।

তিনি বলেন, যাত্রী নেই, যানবাহনও নেই। ঘাট এলাকায় কোনো চাপ নেই এখন। ঘাটের চিত্র পাল্টে গেছে। সার্বক্ষণিক পুলিশ সদস্যরা ঘাটে দায়িত্ব পালন করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৭ ঘণ্টা পর ঝালকাঠির অবরোধ প্রত্যাহার, যান চলাচল স্বাভাবিক

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা ও মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে এবং খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে তাঁর নিজ জেলা ঝালকাঠিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ছাত্র-জনতা। সাত ঘণ্টা পর পুলিশের অনুরোধে আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করা হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

আজ জুমার নামাজ শেষে বেলা আড়াইটার দিকে বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি কলেজ মোড় এলাকায় অবরোধ শুরু করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। অবরোধ চলাকালে মহাসড়কের উভয় পাশে বিপুলসংখ্যক যানবাহন আটকে পড়ে। ফলে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তবে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, জরুরি ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় কাঁচামাল বহনকারী যান চলাচলের সুযোগ দেওয়া হয়।

অবরোধ কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। এ সময় মহাসড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করা হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন এনসিপির ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক মাইনুল ইসলাম মান্না, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক আল তৌফিক লিখন, যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি, সদস্যসচিব রাইয়ান বিন কামাল, গণঅধিকার পরিষদ ঝালকাঠি জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঝালকাঠি-২ আসনের মনোনীত প্রার্থী মাহমুদুল ইসলাম সাগরসহ অন্য নেতারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ সহযোদ্ধাকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করেছে। তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। হামলাকারীদের ইন্টারপোলের মাধ্যমে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। তা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

ঝালকাঠি সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বেলায়েত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বেলা আড়াইটায় অবরোধ শুরু হওয়ায় বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি শান্ত করা হলে তাঁরা রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহারে সম্মত হন। পরে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ ও সাবেক মেয়রের বাড়িতে আগুন

দিনাজপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৪৪
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছে একদল লোক। আজ শুক্রবার রাতে দুজনের বাড়িতে আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে বোচাগঞ্জ থানা-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় জনতা ও বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। তবে কারা আগুন দিয়েছে, এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।

বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সাব-অফিসার শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘রাত সোয়া ৮টার দিকে সাবেক মেয়র আসলামের বাড়িতে আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা সেখানে পৌঁছাই। বর্তমানে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়েছে।’

এ ছাড়া খালিদ মাহমুদের বাড়ির আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানার জন্য বোচাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৮
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ভালুকায় দিপু চন্দ্র দাস (২৮) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা ও মরদেহে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আজ শুক্রবার নিহত দিপুর ছোট ভাই অপু চন্দ্র দাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিক্ষুব্ধ জনতার হাতে নিহত হন দিপু চন্দ্র দাস। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা হয়েছে।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার ডুবালিয়াপাড়া এলাকার পাইওনিয়ার নিট কম্পোজিট কারখানা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত দিপু চন্দ্র দাস জেলার তারাকান্দা উপজেলার মোকামিয়া কান্দা গ্রামের রবি চন্দ্র দাসের ছেলে। তিনি ওই কোম্পানির শ্রমিক ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে যে হামলা চালিয়েছে, তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে রিপোর্টার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশন (র‍্যাক)।

অন্যদিকে, দুই গণমাধ্যমে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করতে গিয়ে নাজেহাল ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন ইংরেজি দৈনিক দ্য নিউ এজের সম্পাদক প্রবীণ সাংবাদিক নূরুল কবীর। এ ঘটনারও তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে র‍্যাক। অবিলম্বে এসব ঘটনার সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছে র‍্যাক।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে সভাপতি আলাউদ্দিন আরিফ ও সাধারণ সম্পাদক তাবারুল হক বলেন, সংবাদমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান ভিত্তি। গণমাধ্যমের কণ্ঠ রুদ্ধ করতে সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন, হামলা কিংবা হেনস্তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের কর্মকাণ্ড গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার এবং আইনের শাসনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

১৮ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাত ১২টার দিকে উচ্ছৃঙ্খল কতিপয় ব্যক্তি প্রথমে দৈনিক প্রথম আলো, তারপর দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এ সময় পত্রিকা দুটির অনেক সাংবাদিক ভবনের ভেতরে আটকা পড়েছিলেন। খবর পেয়ে সেনা, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে হামলাকারীদের সরিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ভবনের ভেতরে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

পত্রিকা দুটির শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাতে আকস্মিক হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর কর্মীদের সবাইকে দ্রুত অফিস ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে শুক্রবার ছাপা পত্রিকা বের করা সম্ভব হয়নি।

র‍্যাক নেতারা বলেন, মনে হচ্ছে একটি গোষ্ঠী অত্যন্ত সচেতনভাবে প্রতিপক্ষ বানাতে গণমাধ্যমকে টার্গেট করে হামলা চালিয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক ও মর্মান্তিক। স্বাধীন সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী বর্তমান সরকারের সময় এমন ঘটনা ন্যক্কারজনক। ডিআরইউ মনে করে, ওসমান হাদি একজন দেশপ্রেমিক জুলাই যোদ্ধা ছিলেন। শহীদ ওসমান হাদিসহ ছাত্র-জনতার ত্যাগের কারণে তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকার দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে।

হাদির মৃত্যুকে পুঁজি করে যারা গণমাধ্যমের ওপর হামলা করেছে, তারা হাদির অনুসারী নয়, এটা স্পষ্ট। কতিপয় মহল হাদির মৃত্যুকে ব্যবহার করে নিজেদের কদর্য চেহারা প্রকাশ করেছে। অবিলম্বে এসব ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃস্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান নেতারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত